অবশেষে চিরচেনা রূপে বানিজ্য মেলা, ব্যবসায়ীদের মুখে হাসি
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ১০ জানুয়ারি ২০২৫, ১০:৫৫ পিএম
ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা
ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার ২৯তম আসরে বিভিন্ন সমস্যার মধ্যে ফুটপাতের পণ্য বিক্রি, ক্রেতা কম, দর্শনার্থীর সংখ্যা কমার বিতর্ক নিয়ে শুরু হলেও মেলার দশম দিনে সেই পুরোনো জমজমাট রূপে ফিরে এসেছে। মেলার দশম দিন প্রচুর দর্শনার্থীর পদচারণায় মুখরিত ছিল। যা নিয়ে ব্যবসায়ীদের মুখে হাসি ফুটেছে।
কিন্তু, তীব্র যানজট, খাবারের মান নিয়ে অভিযোগ, ভাঙ্গা রাস্তা ও ধুলাবালির সমস্যা মেলার ভেতরে এবং আশেপাশের এলাকায় দর্শনার্থীদের জন্য সমস্যার সৃষ্টি করেছে। মেলায় ব্যাপক দর্শনার্থীর আগমন হওয়ায় তিনশ ফুট, এশিয়ান বাইপাস এবং গাজীপুর বাইপাস সড়কে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়েছে, যা হাইওয়ে পুলিশের চেষ্টায়ও পুরোপুরি নিরসন করা সম্ভব হয়নি।
শুক্রবার, ছুটির দিনে দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা থেকে প্রচুর দর্শনার্থীর উপস্থিতি দেখা যায়, যদিও তীব্র যানজটে ভুগতে হয়েছে অনেককে। বিশেষ করে, নরসিংদী, ভৈরব, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কিশোরগঞ্জ, কুমিল্লা, মুন্সিগঞ্জ, গজারিয়া, ফেনীসহ আশপাশের জেলা থেকে আসা দর্শনার্থীদের দীর্ঘ যানজটে আটকা পড়তে হয়েছে। এছাড়া, ঢাকা শহর থেকে আসা দর্শনার্থীরাও একই সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন। বিকল্প পথগুলোও ছিল যানজটে আটকে থাকা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, মেলা পুরোপুরি প্রস্তুত হওয়ায় দর্শনার্থীরা খুব খুশি। মেলার শুরুর দিনগুলোতে কিছু স্টল নির্মাণাধীন ছিল, তবে এখন সব স্টল সম্পূর্ণ এবং দর্শনার্থীদের ভিড়ে মুখরিত। বিশেষ করে ছুটির দিনে মেলার পরিবেশ ছিল উৎসবমুখর। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত মেলায় দর্শনার্থীদের ভিড় ছিল লক্ষ্যণীয়। ব্যবসায়ীরাও তাদের স্টলকে সুন্দরভাবে সাজিয়ে তুলেছেন। এছাড়া মেলায় সাংস্কৃতিক সন্ধ্যার আয়োজন করা হয়, যা দর্শনার্থীদের মধ্যে অত্যন্ত জনপ্রিয় ছিল।
তবে, মেলায় খাবারের মান নিয়ে দর্শনার্থীদের কিছু অভিযোগ ছিল। উচ্চ মূল্যের পাশাপাশি খাবারের মান নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন অনেকেই। মেলার খাবারের স্টলগুলোতে কিছু সমস্যা দেখা দিয়েছে, যেমন হাজী বিরিয়ানীর মতো প্রতিষ্ঠানের সাথে আসল প্রতিষ্ঠানের সম্পর্ক নেই, যা দর্শনার্থীদের হতাশ করেছে।
নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শক মনিরুল ইসলাম জানিয়েছেন, খাদ্য নিরাপত্তার জন্য ভোক্তা অধিকারসহ একাধিক টিম কাজ করছে। ব্যবসায়ীরা জানান, মেলায় ক্রেতা এবং দর্শনার্থীর সংখ্যা দেখে তাদের খুব ভালো লাগছে এবং তারা বিক্রির পরিমাণে সন্তুষ্ট। বিশেষ করে গৃহস্থালি, ইলেকট্রনিক্স, প্রসাধনী এবং কাশ্মীরি স্টলগুলোতে দর্শনার্থীদের বেশি ভিড় ছিল।
মেলার দশম দিনে সমস্ত স্টল নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ায় মেলা পুরোপুরি জমে উঠেছে এবং বিপুল সংখ্যক দর্শনার্থীর সমাগম হয়েছে। মেলায় দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা মোতায়েন ছিল এবং দর্শনার্থীদের আসা-যাওয়ার জন্য বিআরটিসির শাটল বাসের ব্যবস্থা ছিল। এবারের মেলায় দেশ-বিদেশের ৩৬১টি স্টল অংশ নিয়েছে, যার মধ্যে ১৮টি বিদেশি স্টল রয়েছে। আশা করা হচ্ছে এবারের মেলায় ৫০০ কোটি টাকার রফতানি আদেশ পাওয়া যাবে।