Logo
Logo
×

জাতীয়

বন্যাদুর্গত এলাকায় খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট

Icon

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশ: ০৬ জুলাই ২০২৪, ০৯:১৪ এএম

বন্যাদুর্গত এলাকায় খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট

ফাইল ছবি

গাইবান্ধা, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, রংপুর, জামালপুর ও শেরপুরসহ দেশের কয়েকটি জেলায় বন্যা পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়েছে। শুক্রবার (৫ জুলাই) নতুন করে সিরাজগঞ্জের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকার দুর্গত মানুষের কাছে এখনও ত্রাণসামগ্রী পৌঁছেনি। খাদ্য সংকটে অনেক এলাকাতেই বহু মানুষ মানবেতর অবস্থায় রয়েছে। পানিবাহিত রোগবালাই ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

বন্যাদুর্গত এলাকা থেকে প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে এসব তথ্য জানা যায়।

কুড়িগ্রামে দেড় লাখ মানুষ পানিবন্দি, দরকার শুকনো খাবার

কুড়িগ্রাম প্রতিবেদক জানান, টানা বর্ষণে উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢলে কুড়িগ্রামের ১৬টি নদ-নদীর পানি বেড়ে দেড় লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। প্রতিনিয়ত প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। দুর্গত এলাকায় রান্নাবান্না করার মতো অবস্থা নেই। সংকট দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ খাবার পানিরও। 

সরেজমিন দেখা যায়, অনেকেই ঘরের চালা ও মাচায় আশ্রয় নিয়েছেন। কেউ কেউ আশ্রয় নিয়েছেন উঁচু বাঁধে। বাস করতে হচ্ছে খোলা আকাশের নিচে। খাবার ও বিশুদ্ধ পানির অভাব দেখা দিয়েছে। সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন নারী, শিশু ও বয়স্করা। তাদের মধ্যে দেখা দিয়েছে পানিবাহিত রোগবালাই। নৌকা ও কলাগাছের ভেলায় যাতায়াত করছেন মানুষজন। শতাধিক প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। 

উলিপুরের বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের চর বালাডোবার বাসিন্দা ইব্রাহিম বলেন, ‘চার দিন থাকি হামার বাড়িত পানি। ঘরের ভিতরে পানির কারণে চালত আশ্রয় নিছি। কোনো জাগাত শুকনা জাগা নাই। দুপুর পর্যন্ত না খাওয়া আছি, কাইয়্যো আসে নাই খোঁজ নিবার।’

জেলা প্রশাসক সাইদুল আরিফ বলেন, ইতোমধ্যে উপজেলাগুলোতে ১৭৬ টন চাল ও ১০ লাখ ৩৫ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজন ও চাহিদা অনুযায়ী তা বিতরণ চলছে। নতুন করে আরও ৫০০ টন চাল এবং ২০ লাখ টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। 

সিরাজগঞ্জের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

সিরাজগঞ্জ প্রতিবেদক জানান, ভারী বৃষ্টি ও উজানের ঢলে সিরাজগঞ্জের যমুনা নদীর পানি বেড়ে নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। জেলার পাঁচ উপজেলার ৩৪ ইউনিয়নের ১ হাজার ২৭৬টি পরিবারের প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন তারা। শুক্রবার সকালে যমুনা নদীর পানি সিরাজগঞ্জ শহর হার্ড পয়েন্টে ১৩ দশমিক ২৮ মিটার উচ্চতায় প্রবাহিত হচ্ছিল; যা বিপদসীমার ৩৮ সেন্টিমিটার ওপর। 

সদর উপজেলার হাটপাচিল গ্রামের বৃদ্ধা ফাজিলা বেগম বলেন, বন্যার পানিতে বাড়ি ভেঙে গেছে, সন্তানরাও দূরের গ্রামে চলে গেছে। আমরা দুই বুড়াবুড়ি যাওয়ার কোনো জায়গা না পেয়ে নদীর পাড়েই ছাউনি বানিয়ে কোনোরকমে বেঁচে আছি। বৃষ্টিতে খুব কষ্ট হচ্ছে, তার ওপর ঘরে কোনো খাবার নেই।

এদিকে বন্যাকবলিতদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আক্তারুজ্জামান। তিনি বলেন, জেলার পাঁচ উপজেলার ৩৪ ইউনিয়নের প্রায় ১ হাজার ২৭৬টি পরিবারের সাড়ে পাঁচ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। তাদের জন্য ১৮০টি আশ্রয়কেন্দ্রও খোলা হয়েছে। তবে এসব আশ্রয়কেন্দ্রে এখন পর্যন্ত কেউ ওঠেনি বলে তিনি জানান।

সিলেটে বিশুদ্ধ পানি ও গোখাদ্যের তীব্র সংকট

সিলেট অফিস জানায়, সিলেটে গত তিন দিন ধরে ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢল না থাকায় বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হচ্ছে। তবে খুবই ধীরগতিতে পানি কমছে। এতে সীমাহীন দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছেন বন্যার্তরা। সংকট দেখা দিয়েছে খাবারের বিশুদ্ধ পানি ও গোখাদ্যের। 

জেলা প্রশাসন জানায়, ১৩ উপজেলার ৯৮ ইউনিয়ন এবং ৩ পৌরসভায় বন্যায় আক্রান্ত হয়েছেন ৬ লাখ ২৬ হাজার ১৩৮ জন। এর মধ্যে শুক্রবার পর্যন্ত আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছেন ৯ হাজার ৩৬৭ জন। প্লাবিত ১৩ উপজেলায় ৬৫০টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এর মধ্যে মানুষ ২০৪টিতে শুক্রবার পর্যন্ত আশ্রয় নিয়েছেন।

সিলেটের জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান বলেন, বন্যার্তদের মাঝে শুকনো ও রান্না করা খাবার বিতরণ চলমান রয়েছে।

গাইবান্ধায় পানিবন্দি ২০ হাজার মানুষ

গাইবান্ধা প্রতিবেদক জানান, উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল এবং অব্যাহত বৃষ্টিপাতের ফলে গাইবান্ধার সব নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে করে বন্যার কবলে পড়েছে জেলার সদর, ফুলছড়ি, সাঘাটা ও সুন্দরগঞ্জসহ চার উপজেলা। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে চার উপজেলার ২৪টি ইউনিয়নের অন্তত ২০ হাজার পরিবার। পানিতে ডুবে রয়েছে আউশ ধান, পাট, ভুট্টা ও আমন বীজতলা। তলিয়ে গেছে পুকুর ও মাছের ঘের। বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে জেলার ৮০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। বন্যাদুর্গতদের মধ্যে দেখা দিয়েছে খাদ্যের অভাব। তা ছাড়া গবাদিপশুর খাদ্যও পাওয়া যাচ্ছে না।

জেলা প্রশাসনের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গাইবান্ধার সদর উপজেলার দুটি ইউনিয়ন, সুন্দরগঞ্জের সাতটি, সাঘাটার আটটি ও ফুলছড়ি উপজেলার সাতটি ইউনিয়ন পানিতে তলিয়ে গেছে। এই ২৪ ইউনিয়নে পানিবন্দি ১৭ হাজার ৮২০টি পরিবার। এর মধ্যে গাইবান্ধা সদর উপজেলায় ২ হাজার ১৫০টি, সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় ৪ হাজার ৭০০টি, সাঘাটা উপজেলায় ৫ হাজার ১৭০টি ও ফুলছড়ি উপজেলার ৬ হাজার ৮০০টি পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

সুন্দরগঞ্জে বানভাসীদের দুর্ভোগ চরমে

সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিবেদক, গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে বানভাসী পরিবারগুলোর মাঝে চরম দুর্ভোগ দেখা দিয়েছে। নদ-নদীর পানিবৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় উপজেলার ৭-৮টি ওয়ার্ড বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে। এ ছাড়া আংশিকরূপে পানিবদ্ধতায় পড়েছে আরও ৬টি ইউনিয়নের মানুষ। বন্যাকবলিত পরিবারগুলো কয়েকটি আশ্রয়ণকেন্দ্র, বাঁধের রাস্তাসহ বিভিন্ন উঁচু স্থান, প্রতিষ্ঠান ও স্বজনদের বাড়িতে আশ্রয় নিচ্ছে। 

তিস্তা ব্যারাজের বাঁধে ধস, আতঙ্কে এলাকাবাসী 

লালমনিরহাট প্রতিবেদক জানান, দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের পাশে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা শহর রক্ষার্থে বানানো চন্ডিমারী বাঁধে ধস দেখা দিয়েছে। গত বুধবার এ ধস দেখতে পায় স্থানীয়রা। দ্রুত সময়ের মধ্যে মেরামত করা না গেলে বাঁধ ভেঙে যেতে পারে। এতে তিস্তা নদীর গতিপথ উল্টো দিকে চলে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। 

জানা গেছে, তিস্তা ব্যারাজের ফ্লাড বাইপাসের পাশে সাধুর বাজার থেকে দক্ষিণ দিকে হাতীবান্ধা শহর রক্ষার্থে বাঁধ নির্মাণ করে পানি উন্নয়ন বোর্ড। সেই বাঁধে ৬০-৭০ ফুট অংশ ধসে যাচ্ছে। জিও ব্যাগ পানিতে ভেসে যাচ্ছে কয়েক দিন ধরে। পানি কমে যাওয়ার ফলে ভাঙন বেড়ে গেছে কয়েক গুণ। পানি উন্নয়ন বোর্ড তিস্তা ব্যারাজ ডালিয়ার নির্বাহী প্রকৌশলী আসফা উদ দৌলা জানান, হঠাৎ করে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে জরুরি ভিত্তিতে জিও ব্যাগ ফেলা শুরু হয়েছে।

রংপুরে তিস্তা নদীর পানি আবারও বাড়ছে

রংপুর অফিস জানায়, পাহাড়ি ঢলে রংপুরে তিস্তা নদীর পানি আবারও বাড়তে শুরু করেছে। ফলে নদীতীরবর্তী নিম্নাঞ্চল, চর ও দ্বীপ চরের কিছু এলাকা আবারও প্লাবিত হচ্ছে। গঙ্গাচড়া উপজেলার লক্ষ্মীটারী ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মনোয়ারুল ইসলাম বলেন, উজানের পানিতে শংকদরহ, পূর্ব ইচলী, পশ্চিম ইচলী, বাগডোহরা, জয়রামওঝার শতাধিক ঘরবাড়িতে পানি উঠেছে। এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে তারা পানিবন্দি রয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি এমন অব্যাহত থাকলে এলাকায় দুর্ভোগ বাড়বে এবং পানিবন্দি মানুষদের আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে যেতে হবে। 

জামালপুরে সড়ক উপচে লোকালয় নিমজ্জিত

জামালপুর প্রতিবেদক জানান, জামালপুরে যমুনা ও ব্রহ্মপুত্র নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এতে জেলার ৫টি উপজেলার নদীতীরবর্তী ইউনিয়নের নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। বন্যার পানিতে দেওয়ানগঞ্জ ও ইসলামপুর উপজেলার ফসলি জমি, রাস্তাঘাট ও বাড়িঘর পানিতে ডুবে গেছে। পানির তোড়ে ভেঙে গেছে দেওয়ানগঞ্জ-সানন্দবাড়ী ও দেওয়ানগঞ্জ-খোলাবাড়ী পাকা সড়ক। ভাঙা অংশ দিয়ে হু-হু করে ঢুকছে বন্যার পানি। ফলে দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা সদরের সঙ্গে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে কয়েক ইউনিয়নের সড়ক যোগাযোগব্যবস্থা। পানি বৃদ্ধিতে জেলার দেওয়ানগঞ্জ, ইসলামপুর, মাদারগঞ্জ, মেলান্দহ ও সরিষাবাড়ী উপজেলার নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন অন্তত ৩৫ হাজার মানুষ। 

ফের বাড়ছে উব্ধাখালীর পানি

নেত্রকোণা প্রতিবেদক জানান, শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ৯ ঘণ্টায় জেলার উব্ধাখালী নদীর পানি কলমাকান্দা উপজেলার ডাকবাংলো পয়েন্টে ৯ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৪৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে স্থিতিশীল রয়েছে জারিয়া পয়েন্টে কংস ও খালিয়াজুরী পয়েন্টে ধনু নদের পানি। সোমেশ্বরী নদীর পানি বিজয়পুর পয়েন্টে হ্রাস পেলেও বাড়ছে দুর্গাপুর পয়েন্টে। নেত্রকোণা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সারওয়ার জাহান এ তথ্য নিশ্চিত করেন। 

এদিকে জেলার কলমাকান্দা, বারহাট্টা, মদন, মোহনগঞ্জ, খালিয়াজুরী, আটপাড়া ও কেন্দুয়াসহ ৭টি উপজেলার গ্রামীণ রাস্তাঘাটসহ নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় ৮৫টি গ্রামের হাজারো মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এতে তারা যাতায়াতে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। অনেক এলাকায় গ্রামীণ রাস্তার ওপর দিয়ে বানের পানি প্রবাহিত হওয়ায় ওইসব রাস্তার ওপর দিয়েই পানি মাড়িয়ে সাধারণ মানুষ ও যানবাহন চলাচল করছে এবং রাস্তাগুলোও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

স্রোতে ভেসে গেছে কালভার্ট, যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ১০ গ্রাম

মাদারগঞ্জ (জামালপুর) প্রতিবেদক জানান, জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলায় বন্যার পানির স্রোতে ভেসে গেছে একটি কালভার্ট। গত বৃহস্পতিবার গভীর রাতে উপজেলার বালিজুড়ী ইউনিয়নের সুখনগরী চেয়ারম্যান মোড় নামক স্থানে ওই কালভার্ট ভেঙে যায়। ফলে পথচারীসহ সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এতে উপজেলার সাথে দুই ইউনিয়নের ১০ গ্রামের মানুষের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। গ্রামীণ সড়ক, ফসলের মাঠ তলিয়ে যাওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছে চরাঞ্চলের মানুষজন। অভাব দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ খাবার পানি, শুকনো খাবার ও গোখাদ্যের।

সেতু ভেঙে ১০ গ্রামের মানুষ দুর্ভোগে

ফেনী প্রতিবেদক জানান, জেলার সদরের লেমুয়া ইউনিয়নের কালিদাস পাহালিয়া নদীর ওপর অস্থায়ীভাবে নির্মিত কাঠের সেতুটি ভেঙে গেছে। এতে ১০ গ্রামের মানুষের যাতায়াতে দুর্ভোগ দেখা দিয়েছে। বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে ১২ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন পিএসসি গার্ডার ব্রিজের পাশে বিকল্পভাবে চলাচলের জন্য কাঠের সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছিল। এলাকার লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, লেমুয়া ইউনিয়নের উত্তর চাঁদপুর, মধ্যচাঁদপুর, দক্ষিণ চাঁদপুর, নেয়ামতপুর, টংগীর পাড়, হাফেজিয়া ও তেরবাড়িয়া গ্রামের ১০ হাজারের বেশি মানুষ এ সেতু দিয়ে চলাচল করত। 

মহারশি নদী এখন বিপদের কারণ

শেরপুর প্রতিবেদক জানান, ঝিনাইগাতীর মহারশি নদীর শহররক্ষা বাঁধ না থাকায় এটি এখন এলাকার কাছে মারণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। খননের অভাবে হারিয়েছে নাব্যতা। অপরদিকে নদীর বুকে জেগে ওঠা চরে অবৈধভাবে বসতবাড়ি নির্মাণ করায় এটি পরিণত হয়েছে খালে। প্রতিবছর বর্ষার মৌসুমে অবিরাম বর্ষণ আর ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানিতে সৃষ্টি হয় বন্যার। গত কয়েক দিনে শহরের আশপাশে বেশ কয়েকটি জায়গা ভেঙে ঢলের পানি উপজেলার সদর বাজার, অফিস-আদালতসহ বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। তা ছাড়া কয়েকটি গ্রামে পানি ঢোকায় বাড়িঘরসহ কয়েক হাজার একর ফসলি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তলিয়ে গেছে মৎস্য খামার। 

আক্রান্ত হতে পারে নতুন এলাকা

এদিকে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র ৪ জুলাই থেকে পরবর্তী ৭ দিনের বন্যার মধ্যমেয়াদি পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আগামী তিন দিন যমুনা-ব্রহ্মপুত্রের পানি প্রবাহ বাড়বে। এতে টাঙ্গাইলের কিছু স্থানে বিপদসীমার ওপরে পানি থাকতে পারে। এ সময় কুড়িগ্রাম, জামালপুর, গাইবান্ধা, বগুড়া, টাঙ্গাইল ও সিরাজগঞ্জের নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে। তা ছাড়া তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার নদের পানি বেড়ে কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, নীলফামারী ও রংপুরের নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি অবনতি হতে পারে। আগামী ২ দিনের মধ্যে যমুনাশ্বরী, করতোয়া ও বাঙালি, আপার করতোয়া, পুনর্ভবা, টাঙ্গন, ইছামতী, আত্রাই ও মহানন্দার পানি সময় বিশেষে দ্রুত বাড়তে পারে। 

আবহাওয়া অধিদপ্তর শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে জানিয়েছে, আজ শনিবার রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। তা ছাড়া কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টি হতে পারে।

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher
ই-মেইল: [email protected]

অনুসরণ করুন