আগামীর বাংলাদেশকে তরুণদের হাতে তুলে দেওয়ার প্রত্যয় জামায়াতে আমিরের
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:২৬ পিএম
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, আগামীর বাংলাদেশ তরুণদের হাতে তুলে দেওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। শনিবার (২১ ডিসেম্বর) মৌলভীবাজার জেলা শাখা আয়োজিত কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, সাড়ে ১৫ বছর ধরে অনেক আন্দোলন সংগ্রাম করেও স্বৈরাচারকে বিদায় করতে পারেননি। তবে তিনি গর্বিত যে, তরুণরা সেই কাজটি করেছে। তিনি তাদের ভালোবাসা, শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন এবং জাতির পক্ষ থেকে তাদের স্যালুট জানান। তিনি বলেন, আল্লাহ তায়ালার সাহায্যে তারা অসাধ্য সাধন করেছে এবং জাতি তাদের নিয়ে গর্বিত। ইনশাআল্লাহ আগামীর বাংলাদেশ তাদের হাতেই তুলে দেওয়া হবে।
সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জোবায়ের, ঢাকা মহানগর উত্তরের আমির মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, সিলেট মহানগর জামায়াতের আমির মো. ফখরুল ইসলাম ও সিলেট জেলা আমির মাওলানা হাবিুবুর রহমান প্রমুখ।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, জুলাই আন্দোলনের বীর সৈনিকদের স্লোগান ছিল, ‘বুকের ভেতর তুমুল ঝড়, বুক পেতেছি গুলি কর’। তিনি উল্লেখ করেন, সাড়ে ১৫ বছর ধরে স্বৈরাচারীরা জাতির অধিকার কেড়ে নিয়েছিল এবং দেশটাকে শ্মশান বা গোরস্তানে পরিণত করেছিল। তারা বলতো দেশে অনাবিল শান্তি বিরাজ করছে, কিন্তু তা ছিল কবরের মতো শান্তি। ২৮ অক্টোবর তারা লাশের ওপর নর্দন করেছে এবং ক্ষমতায় গিয়ে খুন-গুমের রাজ্য কায়েম করেছে। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নির্বাচনে জয়লাভ করে ২০০৯ সালের ১০ জানুয়ারি ক্ষমতায় বসে খুনের নেশা বাস্তবায়নের কর্মসূচি হাতে নেয়।
তিনি বলেন, প্রথমে তারা পিলখানায় সেনাবাহিনীর ৫৭ জন সেনাকর্মকর্তাকে খুন করে এবং দুই মাস না যেতেই খুনের রাজত্ব কায়েম করে। সেনাবাহিনীর মনোবল ভেঙ্গে দেয় এবং বিডিআর বাহিনী ধ্বংস করে। বাহিনীর নাম বদলে বিজিবি রাখা হয়েছে এবং হত্যাকারীদের বিচার হয়নি।
তিনি আরও বলেন, তাদের প্রথম লক্ষ্যবস্তু ছিল জামায়াতে ইসলামী, যারা দেশপ্রেমিক এবং সততায় দেশবাসীকে মুগ্ধ করেছিল। মিথ্যা অভিযোগ সাজানো কোর্ট এবং পাতানো সাক্ষীর মাধ্যমে নেতাদের খুন করা হয়েছে এবং ফাঁসি দেওয়া হয়েছে।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, এটি জামায়াতের ওপর আঘাত নয়, এটি বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের ওপর আঘাত। তিনি বলেন, ফ্যাসিজমকে সম্মিলিতভাবে মোকাবিলা করতে হবে এবং সবাই মিলে একসঙ্গে যুদ্ধ করতে হবে। তিনি উল্লেখ করেন, তারা বিএনপি, হেফাজত, আলেম ওলামা এবং অন্যান্য দলকে ধরেছে এবং কাউকে ছাড় দেয়নি। সাংবাদিকদেরও খুন ও গুম করেছে।
তিনি ভারতের উদ্দেশ্যে বলেন, প্রতিদেশী দেশকে শান্তিতে থাকতে এবং বাংলাদেশকেও শান্তিতে থাকতে দিতে হবে। তিনি বলেন, আমাদের পাক ঘরে উঁকি মারার চেষ্টা করবেন না এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির সবক দিতে হবে না।
জামায়াতে ইসলামীর আমির বলেন, যেখানে শীর্ষ ১১ নেতাকে খুন করা হয়েছে, সবগুলো অফিস তালাবদ্ধ করে রাখা হয়েছে এবং নিবন্ধন কেড়ে নেওয়া হয়েছে। এত যন্ত্রণা সত্ত্বেও তিনি বলেন, আমরা দেশকে ভালোবাসি এবং মানুষকে ভালোবাসি।