জালিয়াতির অভিযোগে নগদের ২৪৭৮১ পরিবেশক, এজেন্ট ও কর্মকর্তা বরখাস্ত
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:০০ পিএম
জালিয়াতির অভিযোগে নগদের ২৪৭৮১ পরিবেশক, এজেন্ট ও কর্মকর্তা বরখাস্ত
মোবাইলে আর্থিক সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান 'নগদ লিমিটেডর' বিরুদ্ধে বড় ধরনের জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে। প্রতিষ্ঠানটি ভুয়া পরিবেশক ও এজেন্ট দেখিয়ে আর্থিক জালিয়াতি করেছে এবং অতিরিক্ত ইলেকট্রনিক অর্থ (ই-মানি) তৈরি করেছে, যার ফলে ২ হাজার ৩৫৬ কোটি টাকার হিসাব মিলছে না। এর পরিপ্রেক্ষিতে, নগদ লিমিটেডের ৪১ পরিবেশক, ২৪ হাজার ৯৭ এজেন্ট ও ৬৪৩ বিক্রয় কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
এছাড়া, প্রতিষ্ঠানটি ভুয়া পরিবেশকদের মাধ্যমে ১ হাজার ৭১১ কোটি টাকা তুলে নিয়েছে এবং ব্যাংকে জমা টাকার অতিরিক্ত ৬৪৫ কোটি টাকার ই-মানি তৈরি করেছে।
এটাকে ডিজিটাল জালিয়াতি বলা হলেও এখনো কোনো মামলা দায়ের হয়নি। কারণ, মামলা কে করবে তা নিয়ে এক মাস ধরে ডাক অধিদপ্তর ও বাংলাদেশ ব্যাংকের মধ্যে টানাপোড়েন চলছে।
এ ঘটনায় ইতোমধ্যে নগদ লিমিটেডের ৪১ পরিবেশক ও ২৪ হাজার ৯৭ এজেন্টকে বরখাস্ত করেছে প্রতিষ্ঠানটিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিযুক্ত প্রশাসক। পাশাপাশি ৬৪৩ জন বিক্রয় কর্মকর্তাকেও বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া শীর্ষপর্যায়ের ছয় কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ডাক অধিদপ্তরের কাছে সুপারিশ করেছেন নগদের প্রশাসক।
বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছে দৈনিক প্রথম আলোর অনলাইন ভার্সনে।
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নগদ লিমিটেডের যাত্রা শুরু হয়। ২০১৯ সালের ২৬ মার্চ এই এমএফএস সেবার উদ্বোধন করেছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমোদন ছাড়াই ব্যবসা শুরু করে প্রতিষ্ঠানটি। এটির পরিচালনায় প্রথম থেকেই আওয়ামী লীগের একাধিক সংসদ সদস্য ও প্রভাবশালী ব্যক্তি যুক্ত ছিলেন। ফলে হিসাব খোলা থেকে শুরু করে সরকারি ভাতা বিতরণে একচ্ছত্র সুবিধা পায় নগদ। ফলে বড় ধরনের অনিয়মে জড়িয়ে পড়ে প্রতিষ্ঠানটি।
গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ২১ আগস্ট প্রতিষ্ঠানটিতে প্রশাসক বসায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এরপর প্রশাসক দলের পরিদর্শনে বড় ধরনের ডিজিটাল আর্থিক জালিয়াতি ধরা পড়ে। সে জন্য গত ১৮ নভেম্বর আইনি ব্যবস্থা নিতে ডাক অধিদপ্তর ও বাংলাদেশ ব্যাংককে চিঠি দেন প্রশাসক। তবে এখন পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। ইতোমধ্যে এ বিষষে একাধিক সভাও হয়েছে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র হুসনে আরা শিখা বলেন, ‘আমরা নগদের ঘটনা সম্পর্কে অবগত। এ ঘটনায় কে মামলা করবে, সেই সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি। এ নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও ডাক অধিদপ্তরের মধ্যে আলোচনা হচ্ছে। আইনজীবীর মতামত নেওয়া হচ্ছে। এরপরই সিদ্ধান্ত হবে।’