কবি হেলাল হাফিজের প্রথম জানাজা বাংলা একাডেমিতে অনুষ্ঠিত
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:৪২ পিএম
ছবি : সংগৃহীত
স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে এক সাহসী কণ্ঠের কবি হেলাল হাফিজের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় বাংলা একাডেমিতে এ জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর বাদ জোহর জাতীয় প্রেস ক্লাবে তার দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। দ্বিতীয় জানাজা শেষে মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে তাকে দাফন করার কথা রয়েছে।
তার দীর্ঘদিনের বন্ধু ও সহকর্মীরা তাকে শেষবারের মতো বিদায় জানাতে হাজির হন বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে। জানাজা শেষে তার ভক্ত ও শুভাকাঙ্খীরা তার কফিনে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এ সময় জানাজায় অংশ নিতে দেখা গেছে অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকীকে। এছাড়াও তার দীর্ঘদিনের সহকর্মী ও শুভাকাঙ্খীরা তাকে শেষ বিদায় জানাতে জানাজায় অংশ নেন।
পরে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, মাত্র একটি কবিতার বই লিখে একটি জাতির শিল্প সংস্কৃতির ইতিহাসে আর কোনো কবি এত প্রভাব রাখতে পেরেছেন কিনা আমার জানা নেই। তিনি খুব বেশি কবিতা লেখেননি। খুব বেশি বইও বের হয়নি তবুও তারুণ্য ও যৌবনের গান বললেই হেলাল হাফিজের নাম মনে পড়ে। এটা তার অর্জন। বাংলাদেশের সংস্কৃতি জগৎ তার শূন্যতাবোধ করবে।
কবির মরদেহ গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনায় নেয়া হবে না বলে জানিয়েছেন কবির বড় ভাই দুলাল এ হাফিজ।
এর আগে শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) দুপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর। তার মৃত্যুতে শোকাহত বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গন ও তার অগণিত ভক্তরা।
প্রতিভাবান কবি হেলাল হাফিজের জন্ম ১৯৪৮ সালের ৭ অক্টোবর নেত্রকোনায়। তার প্রথম কবিতার বই ‘যে জলে আগুন জ্বলে’ ১৯৮৬ সালে প্রকাশিত হয়। এ পর্যন্ত বইটির মুদ্রণ হয়েছে ৩৩ বারেরও বেশি। লেখালেখির পাশাপাশি হেলাল হাফিজ দৈনিক যুগান্তরসহ বিভিন্ন পত্রিকায় দীর্ঘদিন সাংবাদিকতা করেন। ১৯৮৬ সালে প্রথম কবিতাগ্রন্থ ‘যে জ্বলে আগুন জ্বলে’ প্রকাশের পর জনপ্রিয়তার শীর্ষে চলে আসেন কবি।
দেশে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে সময় হেলাল হাফিজের ‘নিষিদ্ধ সম্পাদকীয়’র পঙক্তি ‘এখন যৌবন যার মিছিলে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়’ উচ্চারিত হয় মিছিলে, স্লোগানে, কবিতাপ্রেমীদের মুখে মুখে। ২০১৩ সালে তিনি বাংলা একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন। তার আগে খালেকদাদ চৌধুরী পুরস্কারসহ নানা সম্মাননা পেয়েছেন তিনি।