বন্যা মোকাবিলায় আগাম প্রস্তুতি নিতে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির সভায় (একনেক) প্রধানমন্ত্রী আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে আগামী আগস্টে বন্যা হতে পারে।

মঙ্গলবার (২ জুলাই) একনেক সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর এই নির্দেশনার কথা জানান পরিকল্পনামন্ত্রী আবদুস সালাম। পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, সভায় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আবহাওয়ার পূর্বাভাস থাকার পাশাপাশি এখন যেভাবে বৃষ্টি হচ্ছে, তার প্রভাব পড়বেই। আগামী আগস্টে বন্যা হতে পারে। এ জন্য আগাম প্রস্তুতি নিতে হবে। একসঙ্গে সবাই কাজ করতে হবে।

এটি ছিল নতুন অর্থবছরের প্রথম একনেক বৈঠক। রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলনকক্ষে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর বিভিন্ন বিষয়ে দেওয়া নির্দেশনার কথা তুলে ধরেন পরিকল্পনামন্ত্রী আবদুস সালাম ও পরিকল্পনাসচিব সত্যজিৎ কর্মকার।

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, অর্থবছরের শুরু থেকেই প্রকল্প বাস্তবায়নের পরিকল্পনা করার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তার (প্রধানমন্ত্রী) মতে, জুলাই থেকে কয়েক মাস বৃষ্টি থাকে। এই সময়ে প্রকল্পের কাগজপত্রের কাজ শেষ করে যেন বৃষ্টির মৌসুম শেষ হওয়ার পরপর মাঠের মূল কাজ শুরু করা যায়।

এ ছাড়া একজন প্রকল্প পরিচালক যেন একাধিক প্রকল্পে পরিচালক না হতে পারেন, সে বিষয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী। এ নির্দেশনার তথ্য জানাতে গিয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, প্রকল্প পরিচালক নিয়োগের জন্য প্রকল্প পরিচালক পুল হচ্ছে। তাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

পরিকল্পনামন্ত্রী আবদুস সালাম আরও বলেন, রাজধানী ঢাকা শহরের আশপাশে কৃষিকাজ বন্ধ হয়ে গেছে বললেই চলে। জমি ভরাট হচ্ছে। এসব এলাকায় কৃষির ফলন বাড়ানোর পাশাপাশি উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এ ছাড়া ঘনবসতি এলাকায় জমি অধিগ্রহণ করে প্রকল্প নেওয়ার ক্ষেত্রে আরও সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি (প্রধানমন্ত্রী) দুই ফসলি ও তিন ফসলি জমিতে প্রকল্প না নেওয়ার কথা বলেছেন।

অন্যদিকে পরিকল্পনাসচিব সত্যজিৎ কর্মকার প্রধানমন্ত্রীর আরও দুটি অনুশাসনের কথা তুলে ধরেন। প্রথমত, নতুন এডিপির প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য বছরের শুরু থেকে পরিকল্পনা প্রণয়ন করা। এ নিয়ে ৪ জুলাই সব মন্ত্রণালয়ের সচিবদের সঙ্গে বৈঠক করবেন পরিকল্পনামন্ত্রী। দ্বিতীয়ত, সদ্য বিদায়ী অর্থবছরের শেষ মুহূর্তে যেসব প্রকল্পে বরাদ্দ দিয়ে শেষ করা হয়েছে, সেসব প্রকল্পের একটি মূল্যায়ন করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

একনেকে সব মিলিয়ে ৫ হাজার ৪৬০ কোটি টাকার ১১টি প্রকল্প পাস হয়।

সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শহীদুজ্জামান সরকার; ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য এমদাদ উল্লাহ মিয়ান; কৃষি, পানি সম্পদ ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগের সদস্য আবদুল বাকী এবং তথ্য ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব শাহনাজ আরেফিনসহ পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।