গণ মামলায় গণগ্রেপ্তার ও হয়রানি থাকবে না : ডিএমপি কমিশনার সাজ্জাত
যুগের চিন্তা ২৪ ডেস্ক
প্রকাশ: ০৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:০৫ পিএম
ছবি : সংগৃহীত
ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী বলেছেন, গণ মামলায় গণ আসামি থাকবে না। অযথা কাউকে হয়রানি করা হবে না। যারা অপরাধে জড়িত না তাদেরকে ধরা হবে না। হয়রানি করা হবে না। জুলাই-আগস্টের ঘটনায় করা অনেক মামলার বাদী মামলা বাণিজ্য করছেন। তাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি মামলা হবে। মামলা অপকর্মে জড়িত পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে।
রবিবার (৮ ডিসেম্বর) দুপুরে ডিএমপি হেডকোয়ার্টার্সে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশন (ক্র্যাব) কার্যনির্বাহী কমিটির সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব বলেন।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, জুলাই-আগস্টে পুলিশের ভূমিকা সঠিক ছিল না। ভূমিকা সঠিক হলে এতোলোকের মৃত্যু হওয়ার কথা না। মরণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে। ওই আন্দোলনে হতাহতের ঘটনায় যেসব সাংবাদিকদের মামলার আসামি করা হয়েছে তদন্তে তাদের নামও বাদ যাবে। যেসব মামলা হয়েছে সেসব মামলায় অন্য কায়দায় ব্যবস্থা নেয়া হবে জানিয়ে তিনি বলেন, বাদি মামলা থেকে নাম বাদ দেয়ার ক্ষমতা রাখেন না। তদন্ত কর্মকর্তা তদন্তে প্রমাণ না পেলে নাম বাদ দিবেন।
অনেক বাদি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মামলা করেছেন পরিকল্পিতভাবে বাণিজ্য করতে। এজন্য ১৫০-২০০ বা আরো বেশি আসামি করা হয়েছে। প্রথমে আওয়ামী লীগ নেতা বা বিগত সরকারের শীর্ষ নেতাদের নাম দিয়ে পরে ঢালাওভাবে ইচ্ছেমতো নাম মামলায় অন্তুর্ভুক্ত করা হয়েছে। পুলিশকে মামলা নিতে বাধ্য করা হয়েছে।
মামলা এবং গ্রেপ্তার বাণিজ্যে কিছু পুলিশ সদস্য জড়িত বলে স্বীকার করে শেখ মো. সাজ্জাত আলী বলেন, গত ৫ আগস্টের পর পুলিশ নেতৃত্ব শূন্য হয়ে যায় ওই সময় রাজারবাগের পরিস্থিতি ছিল ভয়াবহ। আত্নরক্ষার্থে খিলগাঁও থানা থেকে গুলি ছুড়তে ছুড়তে পুলিশ রাজারবাগে যায়। ট্রমার মধ্যে পড়ে যায় পুলিশ সদস্যরা। যা এখনো কাটেনি। এমন বীভৎস পরিস্থিতির সম্মুখীন পুলিশ কখনো হয়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, পুলিশের অনুপস্থিতিতে দেশে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি তৈরী হয়। খুন, লুটাপাট, ছিনতাই, ডাকাতি বেড়ে যায়।
সভায় ডিএমপি কমিশনার চলমান পরিস্থিতি বর্ণনা করতে গিয়ে ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ ও ড. মাহাবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের পরিস্থিতি তুলে ধরে তিনি সবাইকে আইন মেনে চলার কথা বলেন। ট্রাফিক নিয়ম ঠিক করতে চেষ্টা চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, ৫৩ বছরে নগর পরিকল্পনা হয়নি। দুই কোটি লোকের এই শহরে কোনো নগর পরিকল্পনা না থাকায় প্রতিদিন ট্রাফিক আইনে কয়েক হাজার মামলা করতে হচ্ছে। সড়কে শৃঙ্খলার জন্য মানুষকে ট্রাফিক আইন মানতে হবে। এই শহরে সবধরনের যানবাহন এক রাস্তায় চলাচল করে। অটোরিক্সা যেভাবে বাড়ছে তাতে মানুষ পায়ে হেটে রাস্তায় চলতে পারবে না। অনেকেই না বুঝে হুজুগে অটোরিক্সা কিনে রাস্তায় নামাচ্ছে। অথচ এই খাত থেকে সরকার কোনো রাজস্ব পায় না।
ডিএমপি কমিশনার ছাড়াও হেডকোয়াটার্সে কর্মরত অতিরিক্ত কমিশনার (প্রশাসন) ফারুক আহমেদ, অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম ও অপারেশন) ইসরাইল হাওলাদার, অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) রেজাউল করিম মল্লিক, নজরুল ইসলামসহ পদস্থ কর্মকর্তারা এসময় উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়াও ক্র্যাব সভাপতি কামরুজ্জামান খান, সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম, সহসভাপতি শাহীন আবদুল বারী, অর্থ সম্পাদক হরলাল রায় সাগর, সাংগঠনিক সম্পাদক শহিদুল ইসলাম রাজী, দপ্তর সম্পাদক কামাল হোসেন তালুকদার, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক নেহাল হাসনাইন, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক রাকিব মানিক, প্রশিক্ষণ ও প্রযুক্তি সম্পাদক ইসমাঈল হুসাইন ইমু, কল্যাণ ও আইন সম্পাদক ওয়াসিম সিদ্দিকী, কার্যনির্বাহী সদস্য আলী আজম ও শেখ কালিম উল্যাহ্ নয়ন উপস্থিত ছিলেন।