সাবেক মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী। ফাইল ছবি
খিলগাঁও থানায় করা ছয় মামলায় জামিন পেয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক সাবেক মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী।
মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে চারটায় ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে তাকে হাজির করে জামিন চেয়ে শুনানি করেন আসামি পক্ষের আইনজীবী। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ওমর ফারুক ফারুকী জামিন আবেদনের ঘোর বিরোধিতা করে শুনানি করেন।
শুনানি শেষে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসান খিলগাঁও থানার ছয় মামলায় সাবের হোসেন চৌধুরীর জামিন মঞ্জুর করেন। আদেশের পর রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা ক্ষোভে আদালত থেকে বের হয়ে যান। একই সময়ে তড়িঘড়ি করে এজলাস ত্যাগ করেন বিচারক। এর ফলে বাকি মামলার শুনানি অপেক্ষমান থেকে যায়। মুহূর্তেই অস্থিরতা ছড়িয়ে পড়ে আদালতপাড়ায়।
এর আগে গতকাল সোমবার (৭ অক্টোবর) বিকেলে পল্টন মডেল থানায় দায়ের করা বিএনপি কর্মী মকবুল হত্যা মামলায় সাবের হোসেন চৌধুরীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৫ দিনের রিমান্ডে দেন আদালত।
ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে আসামিকে উপস্থিত করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পল্টন মডেল থানার সাব-ইন্সপেক্টর নাজমুল হাচান।
এ সময় তিনি আসামির ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে শুনানি শেষে অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাকির হোসাইনের আদালত ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এদিকে আদেশের পর আদালত প্রাঙ্গণে ব্যাপক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। মুহূর্তের মধ্যে মুহুর্মুহু ডিম নিক্ষেপ করে রীতিমতো গোসল করিয়ে দেওয়া হয় সাবের হোসেন চৌধুরীকে। তৎক্ষণাৎ পুলিশ ও সেনাবাহিনীর যৌথ চেষ্টায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। আর পুরো সময়জুড়ে হাস্যোজ্জ্বল দেখা গেছে সাবের হোসেন চৌধুরীকে।
মামলার এজহারের থেকে জানা যায়, ২০২২ সালের ১০ ডিসেম্বর বিএনপির ডাকা সরকার পতনের একদফা দাবি আদায়ের কর্মসূচি ঘিরে নেতাকর্মীরা রাজধানীর পল্টন এলাকায় জড়ো হতে থাকলে মামলার আসামিরা সমাবেশ বানচালের চক্রান্ত করে। এ সময় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা পুলিশের কিছু কর্মকর্তার যোগসাজশে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে প্রবেশ করে ভাঙচুর ও লুটপাট করে। আন্দোলন দমন করতে নির্বিচারে লাঠিচার্জ, ককটেল হামলা, টিয়ারসেল নিক্ষেপ, সাউন্ড-গ্রেনেড বিস্ফোরণ ও গুলিবর্ষণ করে। এতে বিএনপির কয়েকশো নেতাকর্মী আহত হন এবং মকবুল হোসেন নামক এক বিএনপি কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়ে ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসারত অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।
ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটন, এজহারনামীয় আসামিদের অবস্থান শনাক্তকরণ ও মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে আসামিকে রিমান্ডে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ প্রয়োজন বলে জানায় পুলিশ।
রবিবার (৬ অক্টোবর) সন্ধ্যায় রাজধানীর গুলশান এলাকা থেকে সাবের হোসেন চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। সর্বশেষ সংসদে ঢাকা-৯ আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন তিনি।