ছবি : সংগৃহীত
তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী, বিএনপি চেয়ারপার্সন এবং গণতান্ত্রিক আন্দোলনের প্রতীক বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।
এক শোকবার্তায় তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার ইন্তেকালে জাতি তার এক মহান অভিভাবককে হারিয়েছে। তার মৃত্যুতে তিনি গভীরভাবে শোকাহত ও মর্মাহত।
প্রধান উপদেষ্টা উল্লেখ করেন, খালেদা জিয়া শুধু একটি রাজনৈতিক দলের নেত্রী ছিলেন না; তিনি বাংলাদেশের ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। তার অবদান ও দীর্ঘ সংগ্রাম বিবেচনায় সরকার চলতি মাসে তাকে রাষ্ট্রের অতিগুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হিসেবে ঘোষণা করেছিল।
তিনি বলেন, গণতন্ত্র, বহুদলীয় রাজনৈতিক সংস্কৃতি এবং জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় খালেদা জিয়ার ভূমিকা স্মরণীয় হয়ে থাকবে। তার আপসহীন নেতৃত্বে জাতি বারবার গণতন্ত্রহীন অবস্থা থেকে মুক্তি পেয়েছে।
প্রফেসর ইউনূস আরও বলেন, রাজনৈতিক মতপার্থক্য থাকলেও জাতির কল্যাণে তার দীর্ঘ রাজনৈতিক যাত্রা, গণমুখী নেতৃত্ব এবং দৃঢ় মনোবল সবসময় পথ দেখিয়েছে। তার মৃত্যুতে দেশ একজন অভিজ্ঞ ও পরীক্ষিত রাজনীতিককে হারাল।
তিনি স্মরণ করেন, খালেদা জিয়া ছিলেন দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী, যিনি স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের লড়াইয়ে নেতৃত্ব দেন। স্বামী রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর ১৯৮২ সালে রাজনীতিতে প্রবেশ করে তিনি এরশাদের দীর্ঘ শাসনের পতনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, মেয়েদের জন্য অবৈতনিক শিক্ষা ও উপবৃত্তি চালু করে তিনি নারী শিক্ষার অগ্রগতিতে মাইলফলক স্থাপন করেন। রাজনৈতিক জীবনে তিনি কখনো কোনো নির্বাচনে পরাজিত হননি। ১৯৯১ থেকে ২০০১ সালের নির্বাচনে পাঁচটি আসন থেকে জয়ী হন এবং ২০০৮ সালেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা তিনটি আসনেই জয়লাভ করেন।
তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে অর্থনৈতিক উদারীকরণের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতির ভিত্তি শক্তিশালী করেন খালেদা জিয়া। রাজনৈতিক সাফল্যের কারণে তিনি প্রতিহিংসার শিকার হন এবং মিথ্যা মামলায় দীর্ঘ কারাবাস করতে হয়।
বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে প্রধান উপদেষ্টা তার পরিবার ও দলের নেতাকর্মীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। তিনি দেশবাসীকে শান্ত থাকার আহ্বান জানান এবং প্রয়াত নেত্রীর আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়া করার অনুরোধ করেন।



