Logo
Logo
×

জাতীয়

নির্বাচন সামনে রেখে কঠোর নিরাপত্তা

প্রার্থীদের প্রটোকল, চোরাগোপ্তা হামলা ঠেকাতে বাড়তি নজরদারি

Icon

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১:২৩ এএম

প্রার্থীদের প্রটোকল, চোরাগোপ্তা হামলা ঠেকাতে বাড়তি নজরদারি

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন নির্বিঘ্ন করতে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। নির্বাচনী পরিবেশ শান্ত, স্বাভাবিক ও উৎসবমুখর রাখতে প্রার্থীদের নিরাপত্তা প্রটোকল, জনসভা ও সমাবেশের নিরাপত্তা এবং সার্বিক নজরদারি জোরদার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

বিশেষ করে তফসিল ঘোষণার পরদিন রাজধানীর পল্টন এলাকায় দিনেদুপুরে ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদির ওপর গুলিবর্ষণের ঘটনার পর নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও কঠোর করার বার্তা দিয়েছে সরকার। গতকাল রোববার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে জানানো হয়, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট সামনে রেখে সব রাজনৈতিক দলের জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা প্রটোকল সরবরাহ করা হবে। পাশাপাশি অধিক ঝুঁকিতে থাকা শীর্ষ জুলাইযোদ্ধাদের নিরাপত্তায় বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও জানিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।

নির্বাচন ও গণভোট ঘিরে সার্বিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে গতকাল বিকেলে জরুরি বৈঠক করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন চার নির্বাচন কমিশনার, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি), বিজিবি, আনসার ও ভিডিপির মহাপরিচালক এবং ডিএমপি কমিশনার। বৈঠকে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে জামিনে মুক্ত সন্ত্রাসীদের কারণে উদ্বেগ প্রকাশ করে ইসি। একই সঙ্গে নির্বাচন ঘিরে চোরাগোপ্তা হামলার আশঙ্কার কথাও উঠে আসে।

এ প্রসঙ্গে সাবেক আইজিপি মোহাম্মদ নুরুল হুদা বলেন, এবারের নির্বাচন একটি বড় রাজনৈতিক পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যা আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি চ্যালেঞ্জিং। এ কারণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আরও সতর্ক ও সক্রিয় থাকতে হবে।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো বিবৃতিতে বলা হয়, রাজনৈতিক নেতা ও সম্ভাব্য প্রার্থীদের বাসস্থান, কার্যালয়, চলাচল, জনসভা এবং সাইবার স্পেসে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সুস্পষ্ট নির্দেশনা দেওয়া হবে।

এদিকে জুলাইযোদ্ধাদের নিরাপত্তা প্রসঙ্গে এক সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) এস এন মো. নজরুল ইসলাম বলেন, লাখো জুলাইযোদ্ধার সবার ব্যক্তিগত নিরাপত্তা নিশ্চিত করা বাস্তবসম্মত নয়। তবে যাদের সুনির্দিষ্ট ঝুঁকি রয়েছে, তাদের বিষয়ে পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।

অপরাধ বিশেষজ্ঞ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. তৌহিদুল হক বলেন, প্রার্থীদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ও নির্বাচনী কার্যক্রমে ভীতি দূর করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, পেশাদার অপরাধী গ্রেপ্তার এবং গোয়েন্দা তৎপরতা বাড়ানো জরুরি।

বৈঠক শেষে নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলার ঘটনা ইসিকে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন করেছে। তদন্তের স্বার্থে বিস্তারিত না জানালেও তিনি বলেন, সন্দেহভাজন হামলাকারী দীর্ঘদিন ধরে হাদির ঘনিষ্ঠ ছিলেন এবং তার রাজনৈতিক ও অপরাধমূলক অতীত রয়েছে। এছাড়া জামিনে মুক্ত অনেক সন্ত্রাসী বাইরে থাকায় ঝুঁকি বেড়েছে বলেও বৈঠকে আলোচনা হয়েছে।

তিনি বলেন, এ ধরনের হামলার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে সব বাহিনী কঠোর অবস্থানে থাকবে। নির্বাচন বানচালের যেকোনো চেষ্টা ব্যর্থ হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয় বৈঠক থেকে। অবৈধ অস্ত্র ও হারিয়ে যাওয়া গোলাবারুদ উদ্ধার, বাইরে থাকা সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার এবং চোরাগোপ্তা হামলা প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

ইসি সানাউল্লাহ আরও বলেন, ‘বন্ধু সেজে ভেতরে অনুপ্রবেশকারীদের বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। হাদির ঘটনা আমাদের চোখ খুলে দিয়েছে।’ তবে প্রার্থীদের অস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়ার বিষয়ে কমিশনের সঙ্গে কোনো আলোচনা হয়নি বলেও জানান তিনি।

Swapno

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher

Major(Rtd)Humayan Kabir Ripon

Managing Editor

Email: [email protected]

অনুসরণ করুন