টিউলিপের সাজা নিয়ে যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যমগুলো যা বলছে
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ০১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮:৪৬ পিএম
ছবি : সংগৃহীত
বাংলাদেশে প্লট বরাদ্দে অনিয়মের মামলায় যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্ট সদস্য টিউলিপ সিদ্দিকের সাজা হওয়ার ঘটনা নিয়ে দেশটির মূলধারার সংবাদমাধ্যমগুলোয় গুরুত্ব দিয়ে সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে। বেশির ভাগ প্রতিবেদনের শিরোনামে লেখা হয়েছে, টিউলিপ সিদ্দিকের অনুপস্থিতিতে বাংলাদেশের আদালতে বিচারে তাঁকে সাজা দেওয়া হয়েছে। যুক্তরাজ্যের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রত্যর্পণ চুক্তি না থাকায় তাঁর এই সাজা ভোগ করার সম্ভাবনা কম বলেও উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনগুলোতে।
বাংলাদেশের আদালতে সাজা ঘোষণার পর টিউলিপ সিদ্দিক একটি বিবৃতি দিয়েছেন। তাঁর ওই বিবৃতিও তুলে ধরা হয়েছে বিভিন্ন প্রতিবেদনে। একটি সংবাদমাধ্যম বিষয়টি নিয়ে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিবের বক্তব্যও তুলে ধরেছে।
পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে শেখ রেহানার নামে ১০ কাঠার একটি প্লট বরাদ্দে অনিয়মের ঘটনায় হওয়া মামলায় আজ রায় দিয়েছেন ঢাকার একটি আদালত। রায়ে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পাঁচ বছর, তাঁর বোন শেখ রেহানাকে সাত বছর এবং রেহানার মেয়ে টিউলিপকে দুই বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এর পাশাপাশি টিউলিপসহ তিন আসামিকেই এক লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে ছয় মাসের কারাদণ্ডের রায় দিয়েছেন আদালত।
এ নিয়ে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম বিবিসি শিরোনাম করেছে ‘টিউলিপ সিদ্দিক এমপিকে বাংলাদেশে কারাদণ্ডের সাজা দেওয়া হয়েছে তাঁর অনুপস্থিতিতে বিচারের পরে’। বাংলাদেশে তাঁর অনুপস্থিতিতে বিচারে লেবার এমপি ও সাবেক মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিকের দুই বছরের কারাদণ্ড হওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে। এতে বলা হয়েছে, রাজধানী ঢাকার উপকণ্ঠে তাঁর পরিবারকে একটি প্লট দিতে খালা বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর প্রভাব বিস্তারের জন্য টিউলিপকে দোষী সাব্যস্ত করেছেন আদালত। এ অভিযোগ তিনি জোরালোভাবে অস্বীকার করেছেন।
বিবিসি বলেছে, লন্ডনে অবস্থানরত টিউলিপ সিদ্দিক তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো অস্বীকার করেছেন। তাঁকে এই সাজা ভোগ করতে হবে বলে মনে হয় না। এক বিবৃতিতে টিউলিপ এই বিচারপ্রক্রিয়াকে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ‘ত্রুটিপূর্ণ ও প্রহসনের’ বলে আখ্যায়িত করেছেন।
টিউলিপের দল লেবার পার্টির একজন মুখপাত্র বিবিসিকে বলেছেন, দলটি এ রায়কে স্বীকৃতি দিতে পারে না। তিনি বলেন, ‘খবরে জানা গেছে, অত্যন্ত সম্মানিত জ্যেষ্ঠ আইন বিশেষজ্ঞরা উল্লেখ করেছেন যে এই মামলায় টিউলিপ সিদ্দিক ন্যায়সংগত আইনি প্রক্রিয়ার সুযোগ পাননি এবং তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের বিস্তারিত কখনোই তাঁকে জানানো হয়নি। তাঁর আইনি পরামর্শক দল বারবার বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করলেও এটা করা হয়েছে। যে কারও বিরুদ্ধে যখন কোনো অভিযোগ আনা হয়, সব সময় তাঁর আইনি প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ দিতে হয়।’
বিবিসি বলছে, তারা বুঝতে পেরেছে টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে কোনো তদন্ত বা দলীয় শৃঙ্খলাবিষয়ক কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। তিনি তাঁর লেবার পার্টির সদস্যপদ এবং হাউস অব কমন্সে হুইপের পদে বহাল থাকবেন।
বিবিসির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের কোনো প্রত্যর্পণ চুক্তি নেই। বাংলাদেশ দেশটির কাছে একটি ‘২ বি কান্ট্রি’ হিসেবে বিবেচিত, অর্থাৎ তাঁকে প্রত্যর্পণের অনুমতি পেতে যুক্তরাজ্যের আইনজীবী ও বিচারকদের সামনে সুস্পষ্ট তথ্যপ্রমাণ উপস্থাপন করতে হবে।



