ডিএনসিসি প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে দুদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৮ নভেম্বর ২০২৫, ০১:১৭ পিএম
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, অনিয়ম, দুর্নীতি ও ঘুষ গ্রহণের অভিযোগে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বৃহস্পতিবার দুদকের দৈনিক ও সাম্প্রতিক অভিযোগ সেলের পরিচালক ঈশিতা রনির স্বাক্ষরিত চিঠিতে জানানো হয়, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অভিযোগটি মহাপরিচালক (তদন্ত–১)-এর দপ্তরে পাঠানো হয়েছে।
এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া সাংবাদিকদের বলেন, এজাজ আহমেদের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে দুদক তদন্ত করবে, আর দুদক জানালে আমরা ব্যবস্থা নেব।
অভিযোগ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ জানান, তিনি স্বচ্ছ তদন্ত চান এবং দুদককে সব ধরনের সহযোগিতা করবেন। তাঁর ভাষায়, প্রত্যেকেরই দায়বদ্ধতা থাকা প্রয়োজন। অভিযোগ থাকলে তা স্বচ্ছভাবে তদন্ত হোক—আমরাও সেটাই চাই।
গবেষণা প্রতিষ্ঠান রিভার অ্যান্ড ডেল্টা রিসার্চ সেন্টারের (আরডিআরসি) চেয়ারম্যান এজাজ সম্প্রতি এক বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক পূর্ণকালীন প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব নেন। স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে এ–সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
গত ৩০ এপ্রিল গাবতলী গরুর হাট ইজারা বাতিলের ঘটনায় অনিয়মের অভিযোগ উঠলে দুদকের এনফোর্সমেন্ট টিম ডিএনসিসি কার্যালয়ে অভিযান চালায়। তারা প্রশাসকসহ দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন এবং প্রয়োজনীয় নথি সংগ্রহ করেন। প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে কমিশনকে দেওয়া প্রতিবেদনে এনফোর্সমেন্ট টিম জানায়, ইজারা বাতিলের সিদ্ধান্তে সরকারের বড় অঙ্কের রাজস্ব ক্ষতির ঝুঁকি তৈরি হয়েছে।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ২০২৫ সালের হাট ইজারায় সর্বোচ্চ দর ছিল প্রায় ২২ কোটি টাকা—যা সরকার নির্ধারিত দরের তুলনায় (১৪.৬১ কোটি) উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি। মূল্যায়ন কমিটি সর্বোচ্চ দরদাতাকে ইজারা দেওয়ার সুপারিশ করলেও তা বাতিল করে ‘খাস আদায়’-এর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। যুক্তি হিসেবে বলা হয়, বিপিপিএ ওয়েবসাইটে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়নি। তবে দুদক বিশেষজ্ঞ মতামত সংগ্রহ করে জানতে পারে, গরুর হাটের ইজারা সরকারি ক্রয় নীতিমালার আওতায় পড়ে না এবং ওয়েবসাইটে বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার বাধ্যবাধকতাও নেই।
এই প্রাথমিক অসঙ্গতি ও সম্ভাব্য রাজস্ব ক্ষতির ভিত্তিতে প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় দুদক।



