পুরান ঢাকায় শীর্ষ সন্ত্রাসী মামুন হত্যা: ব্যবহৃত অস্ত্র ও দুই শুটারসহ পাঁচজন গ্রেপ্তার
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১২ নভেম্বর ২০২৫, ১০:১১ এএম
রাজধানীর পুরান ঢাকায় শীর্ষ সন্ত্রাসী তারিক সাইফ মামুনকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যার ঘটনায় ব্যবহৃত অস্ত্রসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে রুবেল ও ইব্রাহিম নামে দুই ভাড়াটে শুটার রয়েছেন, যারা সরাসরি মামুনকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়েছিলেন বলে জানা গেছে। ভারতে পালানোর আগে সীমান্ত এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়।
মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) গভীর রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেন ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান। তিনি বলেন, রাজধানীর সূত্রাপুরে চাঞ্চল্যকর মামুন হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দুটি পিস্তল উদ্ধার এবং দুই শুটারসহ মোট পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে ডিবি। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হবে বুধবার ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে।
এর আগে সোমবার (১০ নভেম্বর) বেলা ১১টার দিকে পুরান ঢাকার সূত্রাপুরে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ফটকের সামনে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করা হয় তারিক সাইফ মামুনকে। আদালতে হাজিরা শেষে ফেরার পথে এই হত্যাকাণ্ড ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, সকাল ১০টা ৫৩ মিনিটে মামুন দৌড়ে হাসপাতালের ফটকের ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করেন। পেছন থেকে দুই অস্ত্রধারী তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। মুহূর্তের মধ্যেই তারা কাছ থেকে একযোগে একাধিক গুলি ছুড়ে হত্যা মিশন সম্পন্ন করে দ্রুত পালিয়ে যায়।
গুরুতর আহত অবস্থায় মামুনকে ন্যাশনাল মেডিক্যালে নেওয়া হয়, পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
সুরতহাল প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, মামুনের শরীরে সাতটি গুলির চিহ্ন পাওয়া গেছে—মাথার নিচে একটি, বাম পিঠে একটি, বুকের ডান পাশে একটি, বাম কব্জিতে একটি এবং ডান কব্জির ওপরে একটি গুলির চিহ্ন ছিল।
পুলিশ জানায়, নিহত তারিক সাইফ মামুন রাজধানীর তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসীদের একজন। তিনি ‘ইমন-মামুন গ্রুপের’ অন্যতম নেতা ছিলেন এবং একসময় কুখ্যাত সন্ত্রাসী সানজিদুল ইসলাম ইমনের সহযোগী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। অপরাধ জগতের আধিপত্য নিয়ে ইমন ও মামুনের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল।
এদিকে তদন্তে উঠে এসেছে আরেক শীর্ষ সন্ত্রাসী জোসেফের নাম। ১৯৯৭ সালে মোহাম্মদপুরে জোসেফের ভাই টিপু হত্যাকাণ্ডের অন্যতম আসামি ছিলেন নিহত মামুন। পুলিশ ধারণা করছে, সেই ঘটনার প্রতিশোধ হিসেবেই জোসেফপক্ষ এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে থাকতে পারে।



