আজ রাত ১২টার পর সারাদেশে একযোগে যৌথ অভিযান
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫:২৭ পিএম
ছবি : সংগৃহীত
অবৈধ অস্ত্র ও মাদক উদ্ধার এবং অপরাধীদের ধরতে আজ (মঙ্গলবার) রাত ১২টার পর থেকে রাজধানীসহ সারাদেশে একযোগে যৌথ অভিযান শুরু হবে। সেনাবাহিনী, পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, কোষ্টগার্ড ও আনসার সদস্যদের সমন্বয়ে এই অভিযান পরিচালনা হবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে, দল-মত নির্বিশেষে দুষ্কৃতিকারীকে চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে। অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার এবং এর সঙ্গে জড়িতদের ধরার পাশাপাশি মাদক কারবারি ধরতেও গুরুত্ব দেয়া হবে এ অভিযানে।
মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সর্বসাধারণের জন্য সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। এতে বলা হয়, ‘গত ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে কর্তৃত্ববাদী সরকারের পতন হলে দেশে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করে। গণঅভ্যুত্থান দমন করতে পতিত সরকার নিষ্ঠুর বল প্রয়োগ করলে বহু প্রাণহানি ও হতাহতের ঘটনা ঘটে।
দীর্ঘদিনের দুঃশাসনে বহু মানুষ অপহরণ, গুম ও বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের মতো নানা নির্যাতনের শিকার হয়েছে। ফলে বিদায়ী সরকারের প্রতি জনমনে প্রচণ্ড ক্ষোভ বিরাজমান। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এসব নিপীড়নের বিচার করতে বদ্ধপরিকর।
বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়েছে, উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, সরকার যখন বিচারের সুস্পষ্ট অঙ্গীকার নিয়ে জাতিসংঘকে সত্য অনুসন্ধানে আহ্বান জানিয়েছে এবং বিচার প্রক্রিয়া শুরু করেছে, ঠিক সেই সময়ে কিছু অতি উৎসাহী এবং স্বার্থান্বেষী মহল আইন নিজের হাতে তুলে নেবার এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রতিবাদের নামে প্রতিষ্ঠান ঘেরাও, জোরপূর্বক পদত্যাগ, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, বেআইনি তল্লাশি, লুটপাট, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, ঢালাওভাবে মামলা গ্রহণে পুলিশের উপর চাপ প্রয়োগ, আদালতে আসামিকে আক্রমণ করে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির চেষ্টা করেছে। এ প্রসঙ্গে সরকার সবাইকে আশ্বস্ত করতে চায় যে, মামলা হওয়া মানেই যত্রতত্র গ্রেপ্তার নয়। এ সব মামলার ক্ষেত্রে সঠিকভাবে যাচাই-বাছাই করে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সরকারের পক্ষ থেকে স্পষ্ট করে জানিয়ে দেয়া যাচ্ছে যে, জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী এসব কার্যকলাপের বিরুদ্ধে উপযুক্ত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সরকার সব দুষ্কৃতিকারীকে চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে অচিরেই অভিযান চালাবে এবং দল-মত নির্বিশেষে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরো জানানো হয়, কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে তা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং দপ্তরে জানাতে হবে, কোনভাবেই কোনো প্রতিষ্ঠান ঘেরাও বা কোনো রকম সহিংস আচরণ করা যাবে না। সরকারের পক্ষ থেকে তল্লাশি ও মামলা গ্রহণে প্রচলিত আইন যথাযথভাবে মেনে চলা হবে এবং হয়রানিমূলক পদক্ষেপ দূর করার ব্যবস্থা নেয়া হবে। বিজ্ঞপ্তিতে আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় সরকারকে সহযোগিতা করার জন্য সবাইকে আন্তরিকভাবে আহ্বান জানানো হয়েছে।
পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা বলেছেন, ৫ আগষ্ট এবং পরবর্তীতে যেসব অস্ত্র লুট হয়েছে তার মধ্যে যেগুলো এখনো জমা পড়েনি সেগুলো উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এসব অস্ত্র উদ্ধার করা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছে। অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করবে যৌথ বাহিনী। এরই মধ্যে গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। থানা থেকে অস্ত্র-গুলি কাদের কাছে রয়েছে সে ব্যাপারে প্রাপ্ত তথ্যের সূত্র ধরে অভিযান চলবে। লুন্ঠিত অস্ত্র উদ্ধার শেষ না হওয়া পর্যন্ত অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানা গেছে।