‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫ বাস্তবায়নে সরকারকে শিগগির পরামর্শ দেবে ঐকমত্য কমিশন’
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯ অক্টোবর ২০২৫, ১০:১৫ এএম
জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫ বাস্তবায়নের বিষয়ে রাজনৈতিক দল ও বিশেষজ্ঞদের মতামত বিবেচনা করে শিগগিরই সরকারকে পরামর্শ দেবে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। আগামী দু-এক দিনের মধ্যেই এ সংক্রান্ত প্রস্তাব সরকারে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ।
বুধবার (৮ অক্টোবর) ঢাকায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫ বাস্তবায়নের উপায় বিষয়ে আলোচনা শেষে সমাপনী বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
অধ্যাপক আলী রীয়াজ জানান, রাজনৈতিক দল ও বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত পাঁচটি বৈঠকে প্রাপ্ত মতামত একত্র করে একটি সমন্বিত পরামর্শ চূড়ান্ত করা হচ্ছে। আলোচনায় অংশ নেওয়া সব পক্ষকেই চূড়ান্ত পরামর্শ জানানো হবে।
তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো প্রস্তাব দিয়েছে— জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনই পৃথক ব্যালটে গণভোট নেওয়া হোক। আবার কয়েকটি দল নির্বাচনের আগেই গণভোটের পক্ষে মত দিয়েছে। কমিশনের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫ বাস্তবায়নের জন্য ত্রয়োদশ সংসদকে সংবিধানের মৌলিক কাঠামোগত পরিবর্তনের ক্ষমতা দেওয়ার বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কার্যত ঐকমত্য গড়ে উঠেছে।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সদস্য বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. মো. আইয়ুব মিয়া এবং ঐকমত্য গঠন প্রক্রিয়ায় যুক্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।
অধ্যাপক আলী রীয়াজ আরও জানান, বিশেষজ্ঞরা সর্বসম্মতভাবে পাঁচটি প্রস্তাব দিয়েছেন।
মূল প্রস্তাবগুলো হলো—
১. জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫ বাস্তবায়নে একটি বিশেষ আদেশ জারি করতে হবে।
২. সেই আদেশের মাধ্যমে গণভোট আয়োজন করতে হবে।
৩. যেসব বিষয়ে ঐকমত্য রয়েছে এবং যেসব বিষয়ে ভিন্নমত (নোট অব ডিসেন্ট) আছে, সেগুলো গণভোটে পৃথক প্রশ্ন হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
৪. নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত সংবিধান সংস্কার পরিষদ ও ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে গণভোটে অনুমোদিত প্রস্তাব অনুযায়ী সংবিধান সংস্কার সম্পন্ন করবে।
৫. জুলাই জাতীয় সনদে বর্ণিত সংস্কারসমূহ সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
তিনি জানান, সনদ বাস্তবায়নের পাশাপাশি আগামী ১৮–১৯ অক্টোবরের মধ্যে ঐকমত্য কমিশন একটি পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশ করবে।
জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদের পরাজয়কে দেশের সবচেয়ে বড় অর্জন হিসেবে উল্লেখ করে অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, এই ঐক্য অক্ষুণ্ন রাখা জরুরি, কারণ এর কোনো বিকল্প নেই।
বুধবারের আলোচনায় বিএনপি, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), গণঅধিকার পরিষদ, গণসংহতি, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টি-সহ মোট ৩০টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেন।



