আওয়ামী লীগের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার সম্ভাবনা আছে: প্রধান উপদেষ্টা
অনলাইন ডেস্ক :
প্রকাশ: ০১ অক্টোবর ২০২৫, ০৪:০১ পিএম
ছবি : সংগৃহীত
আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক দল হিসেবে বৈধ হলেও তাদের কার্যক্রম আপাতত স্থগিত আছে। তবে তাদের কার্যক্রম নিষিদ্ধ রাখার অবস্থান যেকোনো সময় পরিবর্তন হতে পারে। ব্রিটিশ-আমেরিকান সাংবাদিক মেহেদি হাসানকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
যুক্তরাষ্ট্র সফরের সময় ওই সাক্ষাৎকার দেন প্রধান উপদেষ্টা। যেখানে গণঅভ্যুত্থান, নির্বাচন ও মানবাধিকার নিয়ে তিনি বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। ভিডিও সাক্ষাৎকারটি গত সোমবার প্রকাশ করে ‘জেটিও’ নামের গণমাধ্যম। মেহেদি হাসান এটির প্রতিষ্ঠাতা।
প্রায় ৩৪ মিনিটের সাক্ষাৎকারটির একাংশ এখানে তুলে ধরা হলো। সাক্ষাৎকারের বিস্তারিত পড়তে এখানে ক্লিক করুন।
মেহেদি হাসান: শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতির পর আপনার সরকার আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করেছে। আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে কার্যকরভাবে বাধা দিচ্ছে। আগেও বাংলাদেশ রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করার মতো ভুল করেছিল। আপনি একই বিষয় অনুসরণ করছেন। এ সমালোচনার বিষয়ে আপনার প্রতিক্রিয়া কী?
ড. ইউনূস: এটি ভুল সমালোচনা। কারণ, আমরা আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করিনি।
মেহেদি হাসান: আপনি তাদের নিবন্ধন বাতিল করেছেন।
ড. ইউনূস: না, আমরা তাদের নিবন্ধন বাতিল করিনি। শুধু তাদের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করেছি।
মেহেদি হাসান: এর অর্থ কী?
ড. ইউনূস: এর অর্থ হচ্ছে, তারা কোনো রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবে না। তাদের দল এখনও আছে।
মেহেদি হাসান: আওয়ামী লীগ কি নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে?
ড. ইউনূস: এখন নয়, কারণ তাদের কার্যক্রম নিষিদ্ধ আছে। তারা রাজনৈতিক দল হিসেবে এখনও বৈধ। কিন্তু কার্যক্রম আপাতত স্থগিত করা হয়েছে। যে কোনো সময় কার্যক্রম নিষিদ্ধ রাখার অবস্থানের পরিবর্তন হতে পারে।
মেহেদি হাসান: আপনি বলছেন, নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হবে?
ড. ইউনূস: নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার সম্ভাবনা আছে।
মেহেদি হাসান: আপনি রাজনৈতিক দলটিকে নিষিদ্ধ করেননি। কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আর দলটি নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না?
ড. ইউনূস: হ্যাঁ, এটাই।
মেহেদি হাসান: এটি কীভাবে গণতান্ত্রিক হয়?
ড. ইউনূস: নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে, রাজনৈতিক দলটির এ চরিত্র বিবেচনা করে নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
মেহেদি হাসান: আপনি হয়তো অস্বীকার করবেন না, বাংলাদেশে তাদের লাখ লাখ সমর্থক আছে।
ড. ইউনূস: আমি লাখ লাখ বলব না। তাদের সমর্থক আছে, কিন্তু এখন কতজন আছে, তা জানা নেই।
মেহেদি হাসান: তাদের একটি বড় সমর্থকগোষ্ঠী আছে বাংলাদেশে, এটি তো আপনি অস্বীকার করবেন না।
ড. ইউনূস: অবশ্যই না, তারা দীর্ঘ সময়ের রাজনৈতিক দল।
মেহেদি হাসান: এখন তাদের কোনো অবস্থান নেই। আপনি তাদের দলকে রাজনীতিতে অংশ নিতে বাধা দিচ্ছেন।
ড. ইউনূস: তাদের সমর্থকরা ভোট দিতে পারবেন, তারা বৈধ ভোটার। নির্বাচনে অনেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন, সেখান থেকে তারা প্রার্থী বেছে নিতে পারবেন। আওয়ামী লীগের মার্কা সেখানে থাকবে না।
মেহেদি হাসান: মানুষ বলছে, নতুন সরকার আগের সরকারের মতো আচরণ করছে। এ পরিস্থিতি কি বাংলাদেশের জন্য ভালো?
ড. ইউনূস: এটি ছাড়া আমরা নির্বাচন করতে পারব না। আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক দলের মতো আচরণ করছে না। তারা যে মানুষ হত্যা করেছে, এখনও সে অনুশোচনা প্রকাশ করেনি। তারা ক্ষমতায় থাকাকালে যা করেছে, তার কোনো দায়িত্ব এখনও নেয়নি। সব সময়ে তাদের কার্যক্রমের জন্য অন্যকে দায়ী করে আসছে।



