স্পিকারের বাসভবনই হবে নতুন প্রধানমন্ত্রীর অস্থায়ী আবাস
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০১:১১ পিএম
নতুন সরকারের প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রীদের আবাসন নির্ধারণে কাজ চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে। গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এবং প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের গঠিত দুটি পৃথক কমিটি এ বিষয়ে সুপারিশ করেছে। গণভবনকে ‘জুলাই স্মৃতি জাদুঘরে’ রূপান্তরের সিদ্ধান্তের পরই বিকল্প সরকারি বাসভবন চূড়ান্ত করার প্রয়োজন দেখা দেয়।
কমিটির সর্বশেষ সুপারিশে স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারের বাসভবনকে একত্র করে নতুন প্রধানমন্ত্রীর আবাসন হিসেবে ব্যবহারের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। শেরে বাংলা নগরের এ দুটি ভবনকে যুক্ত করতে দুই স্তরবিশিষ্ট একটি করিডর নির্মাণের প্রাথমিক প্রস্তাবও বিবেচনায় রয়েছে। নিরাপত্তার জন্য পাশের এ-১ ও এ-২ বাসাও ব্যবহার হবে।
অন্যদিকে, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এলাকার বাসভবনও বিকল্প হিসেবে বিবেচনায় রয়েছে। তবে স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারের বাসভবনকে রাজধানীর যানজট, নিরাপত্তা ও চলাচলের সুবিধার দিক থেকে বেশি উপযোগী মনে করছে সংশ্লিষ্ট কমিটি।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গণভবনকে জাদুঘরে রূপান্তরের সিদ্ধান্ত নেয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। নির্মাণকাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে, আগামী নভেম্বরেই উদ্বোধনের পরিকল্পনা রয়েছে। শেখ হাসিনা ছাড়া আর কোনো প্রধানমন্ত্রী বাসভবন হিসেবে গণভবন ব্যবহার করেননি। তাই এবার প্রথমবারের মতো বিকল্প সরকারি বাসভবন নির্ধারণের প্রক্রিয়া চলছে।
গণপূর্ত মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে রাজধানীতে মন্ত্রীদের জন্য মিন্টো রোড ও হেয়ার রোডে ১৫টি বাংলো এবং বেইলি রোডে ৩০টি ফ্ল্যাট রয়েছে। তবে এর মধ্যে ১২টি ফ্ল্যাট ব্যবহার করছেন সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্টের বিচারপতিরা। বাকি ফ্ল্যাটগুলোও ব্যবহার করছেন উপদেষ্টা, বিশেষ সহকারী ও অন্যান্য উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা।
এই কারণে নতুন সরকারের মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীদের জন্য অতিরিক্ত আবাসনের প্রস্তাব করা হয়েছে। মিন্টো রোড ও বেইলি রোডে দুটি করে আধুনিক ভবন নির্মাণ এবং গুলশান-ধানমন্ডির দুটি পরিত্যক্ত বাড়ি সংস্কারের সুপারিশও করেছে কমিটি।
২০১৬ সালের প্রধানমন্ত্রীদের বেতন-ভাতা ও সুযোগ-সুবিধা আইন অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রীকে একটি সরকারি বাসভবন বরাদ্দ দেওয়া বাধ্যতামূলক। তিনি চাইলে ব্যক্তিগত বাড়িতেও থাকতে পারবেন। সেক্ষেত্রে বাড়ি ভাড়া বাবদ মাসিক এক লাখ টাকা এবং রক্ষণাবেক্ষণের জন্য অতিরিক্ত ভাতা পাবেন। বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি ও নিরাপত্তার খরচও বহন করবে সরকার।
গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) মো. আব্দুল মতিন জানান, প্রথম কমিটি প্রতিবেদন জমা দিলেও সিদ্ধান্ত হয়নি। পরে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় নতুন উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করেছে। সেই কমিটির চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের পরই বাসভবন নির্ধারণের কাজ শুরু হবে।



