জুলাই সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে সংকটে ঐকমত্য কমিশন
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১:৫৯ এএম
ছবি : সংগৃহীত
অভ্যুত্থানের পর অন্তর্বর্তী সরকারের সময়জুড়ে আলোচনায় থাকা জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতবিরোধ তীব্র আকার ধারণ করেছে। সনদ সইয়ের লক্ষ্যে গত জুলাই মাস নির্ধারিত থাকলেও বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া চূড়ান্ত না হওয়ায় তা আটকে রয়েছে, ফলে ঐকমত্য কমিশনের মেয়াদ বাড়িয়ে ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত করা হয়েছে।
বর্তমানে কমিশনের সামনে নতুন সংকট তৈরি হয়েছে, যেখানে সাংবিধানিক আদেশ ও জাতীয় নির্বাচনের দিন গণভোট আয়োজনের প্রস্তাব নিয়ে দলগুলো মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে। তৃতীয় দফায় আলোচনা শুরু করেছে কমিশন, এবং বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠকও হয়েছে।
জামায়াতে ইসলামী: সাংবিধানিক আদেশ ও নির্বাচনের আগে গণভোটের পক্ষে। দলটির সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, “রাষ্ট্রপতি আদেশ জারি করবেন, তার ভিত্তিতে গণভোট হবে। এতে রাজনৈতিক স্বীকৃতি ও আইনি ভিত্তি দুটোই নিশ্চিত হবে।”
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি): গণভোট নয়, বরং নতুন সংবিধান প্রণয়নে গণপরিষদ নির্বাচন চায়। যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার বলেন, “গণভোটে ভিন্ন ফল এলে তার পরিণতি কী হবে, তা নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে।”
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি): সাংবিধানিক সংস্কার নির্বাচিত সংসদের হাতে ন্যস্ত করার পক্ষে। সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, “নতুন নতুন প্রস্তাবনা ঐক্যমতকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।”
বিএনপি: এতদিন নির্বাচিত সরকারের হাতে সাংবিধানিক সংস্কারের দাবি জানালেও এখন কিছুটা নমনীয়। স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, “বিদ্যমান সংবিধান বহাল রেখে আবার অনুমোদন দিলে খারাপ নজির সৃষ্টি হবে। তবে বৈধ আইনি ও সাংবিধানিক প্রক্রিয়া উদ্ভাবন হলে বিএনপি তাতে একমত।”
এই মতবিরোধের মধ্যেই ঐকমত্য কমিশন জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পথ খুঁজছে, তবে গণভোট, সাংবিধানিক আদেশ ও গণপরিষদ নির্বাচন—এই তিন প্রস্তাব ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে বিভাজন স্পষ্ট। সনদের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে আগামী দিনগুলোতে আরও জোরালো আলোচনা ও সমঝোতার প্রয়োজন দেখা দিয়েছে।



