বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করার আহ্বান ইউরোপীয় পার্লামেন্টের
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:১৬ পিএম
ছবি : সংগৃহীত
২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন ইউরোপীয় পার্লামেন্টের মানবাধিকার বিষয়ক উপ-কমিটির চেয়ারম্যান মৌনির সাতুরি। তিনি বলেন, নির্বাচনের ফলাফল যাই হোক, তা সম্মান করতে হবে, কারণ নির্বাচন-পরবর্তী স্থিতিশীলতার জন্য এটি অত্যাবশ্যক।
সম্প্রতি ঢাকায় সফরকালে বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা-বাসসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব মন্তব্য করেন।
সাতুরি বলেন, “ক্ষমতার পৃথকীকরণ, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, জনপরিসর এবং সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা গণতন্ত্র ও দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীলতার জন্য অপরিহার্য।” তিনি আরও বলেন, "বাংলাদেশের রাজনৈতিক উত্তরণের জন্য আসন্ন নির্বাচন একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ, যা অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও জনগণের জীবনমান বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে।”
তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, "নির্বাচনের ফল যাই হোক, ইউরোপীয় পার্লামেন্ট পরবর্তী নির্বাচিত সংসদের সঙ্গে কাজ করবে"।
সাতুরির নেতৃত্বে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের মানবাধিকারবিষয়ক উপ-কমিটির একটি প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ সফর করেছে, যা বড় রাজনৈতিক পরিবর্তনের আগে তথ্য অনুসন্ধান মিশনের অংশ। প্রতিনিধি দলে আরও ছিলেন ইসাবেল উইসেলার-লিমা (লুক্সেমবার্গ), আরকাদিউস মুলারচিক (পোল্যান্ড), উরমাস পায়েত (এস্তোনিয়া), ক্যাটারিনা ভিয়েরা (নেদারল্যান্ডস)।
বাংলাদেশকে এই মুহূর্তে বেছে নেওয়ার কারণ হিসেবে সাতুরি বলেন, “দেশটি গণতান্ত্রিক উত্তরণের গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণে রয়েছে এবং ইইউ বাংলাদেশের সঙ্গে সহযোগিতা জোরদার করতে চায়।” এর অংশ হিসেবে পার্টনারশিপ অ্যান্ড কো-অপারেশন অ্যাগ্রিমেন্ট (পিসিএ) নিয়ে আলোচনা চলছে।
তিনি ব্যাখ্যা করে বলেন, "ইইউ যখন কোনো তৃতীয় দেশের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করে, তখন মানবাধিকার, আইনের শাসন ও মৌলিক স্বাধীনতা পর্যালোচনা করা হয়, কারণ এসব ইইউ চুক্তির অবিচ্ছেদ্য অংশ।”
২০২৪ সালের জুলাইয়ের অভ্যুত্থানের পর অন্তর্বর্তী সরকার যে সংস্কারমূলক পদক্ষেপ নিয়েছে, তা দৃশ্যমান প্রভাব ফেলেছে, তবে প্রক্রিয়াটি এখনো সম্পূর্ণ হয়নি বলে মন্তব্য করেন সাতুরি।
তিনি বলেন, "সংস্কারগুলো যদি গণসমর্থন পায় এবং নির্বাচিত সংসদ তা বাস্তবায়ন করে, তাহলে উত্তরণ প্রক্রিয়া সফলভাবে সম্পন্ন হবে।”
সফরকালে প্রতিনিধিদল নাগরিক সমাজ, ট্রেড ইউনিয়ন, রাজনৈতিক দল ও সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছে, এবং প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছে।
সাতুরি বলেন, “সমৃদ্ধি ও মানবাধিকার প্রতিশ্রুতির মধ্যে ভারসাম্য আনার লক্ষ্যে পিসিএ চুক্তি নিয়ে আলোচনা চলছে, যা অন্তর্বর্তী সরকারের পরও বহাল থাকবে এবং উভয়পক্ষকে ভবিষ্যতেও আবদ্ধ রাখবে।” তিনি জনগণের উদ্বেগ ও স্বার্থ যথাযথভাবে প্রতিফলিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।



