মহিলা পরিষদের সমীক্ষা
৬ মাসেই ধর্ষণে হয়েছে গত বছরের প্রায় সমান
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৭ আগস্ট ২০২৫, ১০:৪২ এএম
ছবি : সংগৃহীত
বাংলাদেশে নারী ও কন্যাশিশুর ওপর সহিংসতার চিত্র ভয়াবহভাবে বেড়েছে। বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, ২০২৪ সালে সারা দেশে মোট ৩৬৪টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছিল। অথচ চলতি বছরের মাত্র ছয় মাসে (জানুয়ারি-জুন) ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ৩৫৪ জন নারী ও কন্যা।
গতকাল মঙ্গলবার সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের আনোয়ারা বেগম মুনিরা খান মিলনায়তনে আয়োজিত ‘বাংলাদেশে নারী ও কন্যা নির্যাতন: ২০২৪ সমীক্ষা’ প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানানো হয়। সমীক্ষার তথ্য উপস্থাপন করেন সংগঠনের সিনিয়র প্রশিক্ষণ ও গবেষণা কর্মকর্তা আফরুজা আরমান। তিনি জানান, প্রতিবেদনটি বাংলাদেশে নারীর প্রতি সহিংসতার প্রকৃতি, বর্তমান অবস্থা ও প্রভাবের একটি সুস্পষ্ট চিত্র তুলে ধরেছে।
সমীক্ষায় ধর্ষণ, দলবদ্ধ ধর্ষণ, ধর্ষণের চেষ্টা, উত্ত্যক্তকরণ ও যৌন হয়রানি, যৌতুক, বাল্যবিয়ে, গৃহকর্মী নির্যাতন এবং সাইবার অপরাধ—এই আট ধরনের সহিংসতাকে আলোকপাত করা হয়েছে। তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির কন্যাশিশুরা সবচেয়ে বেশি ধর্ষণ ও যৌন সহিংসতার শিকার হচ্ছে। অপরাধী ও ভুক্তভোগী উভয়ই তরুণ বয়সী হওয়ায় বিষয়টি আরও উদ্বেগজনক।
অনুষ্ঠানের মডারেটর ও বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম বলেন, অল্প বয়সী তরুণরা যৌন সহিংসতার মতো অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে, যা একটি সুস্থ সমাজ গড়ে তোলার পথে বড় বাধা। আমরা দেখেছি, একজন যুবক একবার এ অপরাধে জড়ালে সে বারবার একই অপরাধে লিপ্ত হচ্ছে। ক্ষমতাসীনদেরও অনেক সময় এসব ঘটনায় সম্পৃক্ততা দেখা যাচ্ছে।
এছাড়া তিনি সতর্ক করে বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হলে উপজেলা ও তৃণমূলে সহিংসতার প্রভাব বেশি পড়ে। নারী নির্যাতন প্রতিরোধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সীমা মোসলেম, লিগ্যালএইড সম্পাদক রেখা সাহা এবং লিগ্যাল অ্যাডভোকেসি ও লবি পরিচালক অ্যাডভোকেট দীপ্তি শিকদার।



