ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র ছায়া সংসদ
নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থাকলে গণরোষ সৃষ্টি হবে: মজিবুর রহমান মঞ্জু
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ০৯ আগস্ট ২০২৫, ০৮:০১ পিএম
ছবি : ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র ছায়া সংসদ
পতিত আওয়ামী লীগের অধিকাংশ নেতাই গণহত্যার সাথে যুক্ত ও গণধিকৃত। তারা নির্বাচনে এলে গণরোষ সৃষ্টি হবে, এতে পরিস্থিতি সামাল দেয়া যাবেনা। কাজেই তাদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ সম্ভব নয়। আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে গৃহযুদ্ধের কোন আশংকা নেই। নির্বাচনের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হবে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করা। নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি করতে না পারলে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুসকে দায়িত্ব থেকে সরে যাওয়া উচিত। নির্বাচনে অনিয়ম হলে নির্বাচন বন্ধ করে দেয়ার ক্ষমতা প্রয়োগ করতে না পারলে নির্বাচন কমিশন ব্যর্থ হবে। একটি দল ক্ষমতায় আসছে—এমন প্রচারণা সামনে একটি ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে। ফ্যাসিস্ট হাসিনার আমলে নির্বাচনের টোটাল সিস্টেমই করাপ্ট করা হয়েছে। প্রচলিত আসন কেন্দ্রীক ভোট পদ্ধতি দুনীর্তির কারণে ফেল করেছে। আবার পিআর পদ্ধতি সমর্থন যোগ্য হলেও তাতে ঝুলন্ত পার্লামেন্ট হওয়ার আশংকা রয়েছে। তাই এবারের নির্বাচনে মিশ্র পদ্ধতি বেছে নেয়া যায়। আগামীতে সরকারি দল ও বিরোধী দল মিলে নির্বাচন কমিশন গঠন করবে—এটি ঐকমত্য কমিশনের একটি বড় অর্জন। এতে নির্বাচন কমিশন শক্তিশালী হবে এবং তাদের সক্ষমতা বাড়বে। আজ (০৯ আগস্ট ২০২৫, শনিবার) এফডিসিতে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশন, প্রার্থী ও ভোটারদের ভূমিকা নিয়ে আয়োজিত ছায়া সংসদে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু এসব কথা বলেন। সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান জনাব হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। প্রতিযোগিতাটি আয়োজন করে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি।
সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, ফ্যাসিবাদ ফিরে আসার আশঙ্কা দূর করতে প্রধান উপদেষ্টার ঘোষিত আগামী রোজার আগেই নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে। পরাজিত ফ্যাসিবাদী গোষ্ঠী পাশ^র্বর্তী দেশে অফিস খুলে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে করছে। নির্বাচন বানচাল করতে গণঅভ্যুত্থানের পক্ষের শক্তিগুলোর মধ্যে ফাটল ধরানোর অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। কেউ কেউ ১/১১ সৃষ্টির বা গৃহযুদ্ধের জুজু’র ভয় দেখাচ্ছে—এটা অমূলক। এজন্য অবশ্যই ফ্যাসিবাদ বিরোধী ঐক্য জরুরি। কোন পদ্ধতিতে নির্বাচন হবে তা নিয়ে এখনো রাজনৈতিক দলগুলো ঐক্যমতে আসতে পারেনি। শীঘ্রই জুলাই সনদে সব দলগুলোর স্বাক্ষরের কথা রয়েছে। কিন্তু এখনো যে অনৈক্য বিরাজ করছে তাতে আমি শীর্ষ রাজনৈতিক দলগুলোর জুলাই সনদে স্বাক্ষর করা নিয়ে শঙ্কিত হচ্ছি। তবে গণতন্ত্র, দেশ ও জাতীর স্বার্থে সব পক্ষকে যার যার অবস্থান থেকে কিছুটা ছাড় দিয়ে হলেও জুলাই সনদে স্বাক্ষর করা উচিত।
তিনি আরো বলেন, স্বৈরাচার বিরোধী দলগুলোর মধ্যে দূরত্ব কমিয়ে আনতে হবে। জনগণের আকাঙ্খা পূরণে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে সবাইকে ভূমিকা রাখতে হবে। এর জন্য নির্বাচন কমিশন, দল, প্রার্থী ও ভোটারদের দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করা আবশ্যক। পাল্টাপাল্টি দোষারোপের রাজনীতি বর্জন করে নেতাদের বক্তব্যে শালীনতা বজায় রাখা উচিত। যাতে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী দলগুলোর মধ্যে কোন বিভেদ তৈরি না হয়। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এখনো যে কাদা ছোড়াছুড়ির অপসংস্কৃতি বিরাজ করছে তা আমাদের ব্যাথিত করে। যাতে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে মানুষের ভোটের অধিকার বাস্তবায়ন হয়। যে ভোট প্রদান থেকে দেশের মানুষ ১৫ বছর বঞ্চিত ছিলো। সেই ভোট যাতে উৎসবমুখর হয়। প্রত্যেক নাগরিক যাতে নির্বিঘ্নে তাঁর পছন্দের প্রার্থীকে নির্ভয়ে ভোট দিতে পারে তার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে।
ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র আয়োজনে “সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশনের চেয়ে প্রার্থীসহ ভোটারদের ভূমিকাই প্রধান” শীর্ষক ছায়া সংসদে ঢাকা কমার্স কলেজের বিতার্কিকদের পরাজিত করে ঢাকা কালেজের বিতার্কিকরা বিজয়ী হওয়ার গৌরব অর্জন করে। প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন, অধ্যাপক আবু মুহাম্মদ রইস, সাংবাদিক মাঈনুল আলম, সাংবাদিক কাজী জেবেল, সাংবাদিক সাইদুর রহমান ও শিরিনা খাতুন বীথি। প্রতিযোগিতা শেষে অংশগ্রহণকারী দলকে ট্রফি, ক্রেস্ট ও সনদপত্র প্রদান করা হয়।



