জুলাই শহীদ পরিবারগুলোকে পুনর্বাসনে বিনামূল্যে ফ্ল্যাট দেবে সরকার
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ২৭ জুলাই ২০২৫, ১১:১৩ এএম
ছবি : সংগৃহীত
চলমান ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রথম একনেক সভায় রাজধানীর মিরপুরে “৩৬ জুলাই” নামে একটি বিশেষ আবাসন প্রকল্প উপস্থাপন করা হচ্ছে। এই প্রকল্পের আওতায় শহীদ পরিবারগুলোকে পুনর্বাসনের জন্য ৮০৪টি আধুনিক ফ্ল্যাট নির্মাণ করবে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ। প্রত্যেকটি ফ্ল্যাট হবে ১,৩৫৫ বর্গমিটারের এবং বাজারমূল্য দাঁড়াবে প্রায় ৯৫ লাখ টাকা। তবে এসব ফ্ল্যাট সম্পূর্ণ বিনামূল্যে বিতরণ করা হবে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ হওয়া পরিবারগুলোর মাঝে।
প্রকল্পটি গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে এবং একনেকে অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। এটি বাস্তবায়ন হবে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের নিজস্ব জমিতে—মিরপুর হাউজিং এস্টেটের ১৪ নম্বর সেকশন, মিরপুর পুলিশ লাইন্স সংলগ্ন এলাকায়। নির্মাণ কাজ চলতি বছরের জুলাইয়ে শুরু হয়ে শেষ হবে ২০২৯ সালের জুনে। পরিকল্পিত ভবনগুলোতে থাকবে আধুনিক স্যানিটারি ও বৈদ্যুতিক সুবিধা, অগ্নিনিরোধক ব্যবস্থা, লিফট, জেনারেটর, সোলার প্যানেল এবং রেইন ওয়াটার হারভেস্টিং প্রযুক্তি। পাশাপাশি থাকবে খেলার মাঠ, কমিউনিটি ভবন, ড্রেনেজ, গভীর নলকূপসহ প্রয়োজনীয় নাগরিক সুবিধা।
একই সভায় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে “গণঅভ্যুত্থান-২০২৪”-এর অডিও-ভিজ্যুয়াল দলিল সংগ্রহ ও সংরক্ষণ সংক্রান্ত একটি প্রকল্পও উপস্থাপন করা হবে। বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভ এর বাস্তবায়ন করবে। ইতোমধ্যে পরিকল্পনা উপদেষ্টা কর্তৃক প্রকল্পটি অনুমোদিত হয়েছে এবং একনেক সদস্যদের অবহিত করার উদ্দেশ্যে উপস্থাপন করা হচ্ছে। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা, বিবিসি, সিএনএন, রয়টার্সসহ দেশি-বিদেশি বিভিন্ন উৎস থেকে ফুটেজ ও দলিল সংগ্রহ করা হবে। প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ৩৭ কোটি টাকা।
সভায় আরও ১২টি প্রকল্প অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে চট্টগ্রামের কালুরঘাট-চাক্তাই সড়ক নির্মাণ, ফায়ার সার্ভিস স্টেশন স্থাপন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় উন্নয়ন, রেলপথ রক্ষণাবেক্ষণ, গ্রামীণ স্যানিটেশন, নারীদের আয়বর্ধক প্রশিক্ষণ, মুজিবনগর সেচ প্রকল্পের নাম পরিবর্তন, ও স্মার্ট প্রি-পেমেন্ট মিটার প্রকল্প। এসব প্রকল্পে ব্যয় হবে মোট ৮ হাজার ৯১০ কোটি টাকার বেশি।
একনেক সভায় আরও ১৭টি পূর্ব অনুমোদিত প্রকল্প সম্পর্কে সদস্যদের অবহিত করা হবে। এর মধ্যে রয়েছে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সক্ষমতা বৃদ্ধি, ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন, গ্রাম সড়ক পুনর্বাসন, ফেনী পৌরসভার উন্নয়ন, জামালপুর কারাগার পুনর্নির্মাণ, রাজশাহী নগরের অবকাঠামো উন্নয়ন, চট্টগ্রাম নৌবাহিনীর ডকইয়ার্ড প্রশিক্ষণ কেন্দ্র উন্নয়ন ও নানা মন্ত্রণালয়ের অধীনে গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প।
এইসব উদ্যোগের মধ্য দিয়ে সরকার যেমন ইতিহাস সংরক্ষণের পাশাপাশি শহীদ পরিবারকে সম্মান জানাচ্ছে, তেমনই ভবিষ্যতের রাজনৈতিক স্মৃতি ও আন্দোলনকে প্রাতিষ্ঠানিক দলিলে পরিণত করার পথে এগোচ্ছে।



