২০০৯ সালের পিলখানা বিদ্রোহে বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে দায়ের করা মামলায় কারাগারে আটক ৪০ জন বিডিআর সদস্যের জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত।

ঢাকার বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক ইব্রাহিম মিয়া গত ৮ মে এ আদেশ দেন বলে সোমবার (১২ মে) আদালত সূত্রে জানা গেছে। আদালতের বেঞ্চ সহকারী শাহাদাৎ হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

রাষ্ট্রপক্ষের প্রসিকিউটর মো. বোরহান উদ্দিন জানান, জামিন পাওয়া আসামিদের মধ্যে অনেকেই আগে সাজাপ্রাপ্ত, এমনকি কারও কারও বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডও রয়েছে। আদালত প্রয়োজনীয় নথিপত্র পর্যালোচনা করে ৪০ জনের জামিন মঞ্জুর করেন, তবে বাকিদের আবেদন নামঞ্জুর করা হয়েছে।

জামিনপ্রাপ্ত ৪০ জনের মধ্যে রয়েছেন: রেজাউল করিম, শাজাহান, রফিকুল ইসলাম, সাইফুল ইসলাম, মো. শামীম, ওয়ালি উল্লাহ, হাবিবুর রহমান, বনি আমিন চৌধুরী, ইমতিয়াজ আহমেদ নবীন, মোয়াজ্জেম হোসেন, মিজানুর রহমান, এবং আরও অনেকে।

এর আগে গত ১৯ জানুয়ারি একই মামলায় ১৭৮ জন বিডিআর সদস্যকে জামিন দেন আদালত, যারা ২৩ জানুয়ারি কেরানীগঞ্জ ও কাশিমপুর কারাগার থেকে মুক্তি পান।

প্রসঙ্গত, ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় বিডিআর সদর দপ্তরে সংঘটিত বিদ্রোহে ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন নিহত হন। এ ঘটনায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে পৃথক দুটি মামলা হয়।

হত্যা মামলায় ২০১৩ সালের রায়ে ১৫২ জনের মৃত্যুদণ্ড, ১৬০ জনের যাবজ্জীবন এবং ২৫৬ জনের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা হয়। ২৭৮ জন খালাস পান। ২০১৭ সালে হাইকোর্টে আপিল নিষ্পত্তি হলে ১৩৯ জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকে।

এছাড়া, ২০১০ সালে বিস্ফোরক মামলায় ৮৩৪ জনের বিরুদ্ধে বিচার শুরু হয়, যার মধ্যে অনেকেই এখনো কারাগারে রয়েছেন।

সম্প্রতি, অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের পর পিলখানা হত্যাকাণ্ডের পুনঃতদন্তের দাবি জোরালো হয়। গত ২৪ ডিসেম্বর সরকার অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল আ ল ম ফজলুর রহমানকে প্রধান করে একটি কমিশন গঠন করে, যাকে ৯০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। শহীদ পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ নিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালেও গেছেন।