রন হক সিকদারের ১০০ একর জমি ক্রোকের নির্দেশ দিয়েছে আদালত
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২২ এপ্রিল ২০২৫, ১২:০০ এএম
সিকদার গ্রুপের চেয়ারম্যান রন হক সিকদার
রাজধানীর পূর্বাচলে সিকদার গ্রুপের চেয়ারম্যান রন হক সিকদারের মালিকানাধীন ১০০ একর জমি ক্রোকের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
সোমবার (২১ এপ্রিল) ঢাকার মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ জাকির হোসেন গালিব দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই আদেশ দেন। দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আদালতে দুদকের পক্ষে জমি ক্রোকের আবেদন করেন সংস্থাটির সহকারী পরিচালক আশিকুর রহমান। আবেদনে উল্লেখ করা হয়, দুর্নীতি, ঘুষ, অর্থপাচার, স্বেচ্ছাচারিতা ও বেনামে সম্পদ অর্জনের অভিযোগে রন হক সিকদারের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান চলছে। এ লক্ষ্যে সাত সদস্যের একটি অনুসন্ধান কমিটিও গঠন করা হয়েছে।
আবেদনে আরও বলা হয়, পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পের ১৯ নম্বর সেক্টরে ‘সেন্ট্রাল বিজনেস ডিস্ট্রিক্ট (সিবিডি)’ গড়ার লক্ষ্যে রন হক সিকদারের প্রতিষ্ঠান ‘পাওয়ার প্যাক হোল্ডিংস লিমিটেড’-এর নামে সাময়িকভাবে ১০০ একর জমি বরাদ্দ দেয় রাজউক। প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায়, একটি সাজানো নিলামের মাধ্যমে প্রতি একরের মূল্য মাত্র ৩০ কোটি ২৫ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়, যেখানে প্রকৃত বাজার মূল্য প্রায় ৫০ কোটি টাকা। এতে রাষ্ট্রের প্রায় ২০০০ কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
এছাড়া জমির একটি কিস্তির অর্থ—২৭০ কোটি ৫০ লাখ টাকা পরিশোধ করে সিকদার গ্রুপ জমি নিজেদের দখলে নেয় এবং তিনতলা ভবনসহ অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণ শুরু করে, যা রাজউকের অনুমোদন ছাড়াই করা হয়েছে। বিদ্যুৎ সুবিধা নিশ্চিত করতে সেখানে নিজস্ব পাওয়ার হাউসও নির্মাণ করা হয়েছে।
দুদক আরও দাবি করে, এই উন্নয়ন প্রকল্পের নামে ভুয়া নথিপত্র ব্যবহার করে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক (কাওরান বাজার শাখা) থেকে ১১০ কোটি টাকার বেশি ঋণ নেওয়া হয়েছে, যা মানি লন্ডারিংয়ের আওতায় পড়ে।
এই প্রেক্ষাপটে তদন্ত সুষ্ঠু করতে এবং রাষ্ট্রের স্বার্থ সুরক্ষায় পূর্বাচল প্রকল্পের ১৯ নম্বর সেক্টরের প্রস্তাবিত জমি ক্রোক করা অত্যন্ত জরুরি বলে আদালতে আবেদনে উল্লেখ করে দুদক। আদালত সেই আবেদন বিবেচনায় এনে জমি ক্রোকের আদেশ দেন।



