রূপগঞ্জে ৮৭ কোটি টাকার মানিলন্ডারিং মামলায়
সাবেক মন্ত্রী গাজীসহ ৮ জন অভিযুক্ত,সিআইডি’র মামলা দায়ের
রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি :
প্রকাশ: ১১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৭:১২ পিএম
ছবি : সংগৃহীত
সাবেক মন্ত্রী (বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়) এবং নারায়ণগঞ্জ (রূপগঞ্জ-১) এর সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম দস্তগীর গাজী (৭৭) ও তার সাবেক পিএস এমদাদুল হক (৫২)সহ মোট ০৮ জনের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে মামলা করেছে সিআইডি। প্রতারণাপূর্বক চাঁদাবাজীর মাধ্যমে ভুয়া দলিল তৈরি করে অবৈধভাবে মোট ২৪০১.৪৬ শতাংশ জমি (যার বর্তমান সরকারি বাজারমূল্য ৮৬ কোটি ৭৮ লক্ষ ৮৭ হাজার ৬৪৪ টাকা) জবর দখল, হস্তান্তর, স্থানান্তর ও রূপান্তর করায় তাদের বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ থানার মামলা নং- ৪৩, তারিখ- ১১/১২/২০২৫ খ্রি. ধারা- মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ এর ৪(২) রুজু করেছে সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট।
মামলায় এজাহারনামীয় অভিযুক্তরা হলেন- (১) গোলাম দস্তগীর গাজী (৭৭), পিতা- গোলাম কবির গাজী, মাতা-সামসুন নেছা, সাং-ভূঁইয়া বাড়ি, উত্তর রূপসী, থানা-রূপগঞ্জ, জেলা-নারায়ণগঞ্জ; (২) এমদাদুল হক (৫২), পিতা-মন্টু মিয়া, সাং-রূপসী, থানা-রূপগঞ্জ, জেলা-নারায়ণগঞ্জ; (৩) সৈয়দা ফেরদৌসী আলম নীলা (৫৭), স্বামী-শাহ আলম, পিতা- মো. আজিম উদ্দিন, মাতা-লতুফা বেগম, সাং-ভোলানাথপুর, ডাকঘর- পশিবাজার, থানা-রূপগঞ্জ, জেলা-নারায়ণগঞ্জ; (৪) তোফায়েল আহমেদ আলমাছ (৫৫), পিতা-নাসুরউদ্দিন মুন্সি, সাং-মাছিমপুর (মুড়াপাড়া), থানা-রূপগঞ্জ, জেলা-নারায়ণগঞ্জ; (৫) মো. মাহাবুবুর রহমান জাকারিয়া মোল্লা (৪৮), পিতা- মৃত মোস্তাফিজুর রহমান মোল্লা, সাং-বরপা, থানা-রূপগঞ্জ, জেলা-নারায়ণগঞ্জ; (৬) মো. আনছার আলী (৫৫), পিতা-মোস্তফা মিয়া, সাং-হাড়ারবাড়ী, থানা-রূপগঞ্জ, জেলা-নারায়ণগঞ্জ; (৭) আলফাজ উদ্দিন (৬৩), পিতা-আশরাফ উদ্দিন আহম্মেদ, মাতা- মজিলাতুনন্নেছা, সাং- পুরাতন সাতক্ষীরা, থানা- সাতক্ষীরা সদর, জেলা- সাতক্ষীরা; এবং (৮) দিমন ভূঁইয়া (৫৫), পিতা-জালাল ভূইয়া, সাং-রূপসী (বাগবাড়ী), থানা-রূপগঞ্জ, জেলা- নারায়ণগঞ্জ।
অনুসন্ধানে জানা যায় যে, উপর্যুক্ত ব্যক্তিবর্গ অজ্ঞাতনামা ৭-৮ জন ব্যক্তির সহায়তায় একটি সংঘবদ্ধ অপরাধ চক্র গড়ে তোলে। অপরাধ চক্রটি পরস্পর যোগসাজশে গত ০১/০১/২০১৫ খ্রি. হইতে ২০/০৭/২০২৪ খ্রি. পর্যন্ত বিভিন্ন তারিখ ও সময়ে ভিকটিম ০১. মো. শাহ আলমের ১২৪ শতাংশ, ০২. আব্দুস সোবহান মিয়ার ১০ শতাংশ, ০৩. নাঈম প্রধানের ১৮ শতাংশ, ০৪. হাসিনা বেগমের ০৯ শতাংশ, ০৫. আলেয়ার ৪৫ শতাংশ, ০৬. ইয়াছিন প্রধানের ২৭.৫ শতাংশ, ০৭. সানজুরা বেগমের ০৪ শতাংশ, ০৮. মো. আশরাফ উদ্দিন ভুইয়ার ৭২ শতাংশ, ০৯. মোস্তফা মনোয়ার ভুইয়ার ৩৪৬ শতাংশ, ১০. মো. হাবিব খানের ১৮৩.৫ শতাংশ, ১১. রাশিদা ভুইয়ার ১২৪ শতাংশ, ১২. আমজাদ আলী ভুইয়ার ৭৬০.৫ শতাংশ, ১৩. মোবারক ভুইয়ার ৩১ শতাংশ, ১৪. নূর-ই-তাছলীম তাপসের ৪৩০.৭ শতাংশ, ১৫. মো. মাহবুবুল হক ভুইয়ার ৭১.৪৭ শতাংশ এবং ১৬. মোহাম্মদ মাহমুদুল হকের ৬৫ শতাংশসহ সর্বমোট ২৪০১.৪৬ শতাংশ জমি যার বর্তমান মূল্য সরকারী দর অনুযায়ী (প্রতি শতাংশ ৩,৬১,৪০০ ×২৪০১.৪৬)= ৮৬ কোটি ৭৮ লক্ষ ৮৭ হাজার ৬৪৪ টাকা পরস্পর সংঘবদ্ধভাবে প্রতারণাপূর্বক চাঁদাবাজীর মাধ্যমে ভুয়া দলিল সৃজন করে অবৈধভাবে স্থাবর সম্পত্তি জবর দখল করে হস্তান্তর, স্থানান্তর ও রূপান্তর করেছে।
ঘটনা সম্পর্কিত বিষয়ে বিজ্ঞ সিনিয়র স্পেশাল জজ, মহানগর আদালত, ঢাকার পারমিশন পিটি. নং- ৬৮৪/২০২৫, তারিখ-০৮/০৭/২০২৫ খ্রি. মুলে সম্পত্তি ক্রোক করা আছে, যার বর্তমান বাজার মূল্য ৪০০ (চারশত) কোটি টাকা।
ক্রোককৃত সম্পত্তির রিসিভার হিসেবে বিজ্ঞ সিনিয়র স্পেশাল জজ, মহানগর আদালত, ঢাকা সিআইডি প্রধান (এ্যাডিশনাল আইজিপি) মহোদয়কে নিয়োগ করেছেন। ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট এই মামলার তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করছে। অপরাধের পূর্ণাঙ্গ তথ্য উদঘাটন, অজ্ঞাত অপর সদস্যদের শনাক্তকরণ ও অন্যান্য আইনানুগ প্রক্রিয়ার স্বার্থে সিআইডির অনুসন্ধান অব্যাহত রয়েছে।



