ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচন শেষে পঞ্চদশ সংশোধনী আপিলের চূড়ান্ত শুনানি
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:১২ পিএম
বহুল আলোচিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলসহ সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীতে আনা কয়েকটি ধারা অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে করা আপিলের চূড়ান্ত শুনানি ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর অনুষ্ঠিত হবে।
বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) সকালে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ এ সিদ্ধান্ত দেয়।
শুনানির শুরুতেই প্রধান বিচারপতি মন্তব্য করেন, ‘১৫ বছরের জঞ্জাল সরিয়েছি ১৬ মাসে।’ এরপর তিনি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামানের মতামত জানতে চান। জামায়াতের আইনজীবী শিশির মনিরের বক্তব্য তুলে ধরে তিনি জানতে চান, পঞ্চদশ সংশোধনী নিয়ে বর্তমান শুনানি শেষ না করে তা পরবর্তী সংসদের বিবেচনার জন্য রেখে দেওয়ার প্রস্তাব সম্পর্কে রাষ্ট্রপক্ষের অবস্থান কী।
অ্যাটর্নি জেনারেল জানান, তারা চান আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায় এখনই দেওয়া হোক। তবে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আমরা আগের আপিল বিভাগের মতো এমন কোনো রায় দিতে চাই না, যা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।’ তিনি ইঙ্গিত দেন যে নতুন আপিল বিভাগ গঠনের পর বিষয়টি পুনরায় তোলা হলে সুবিধাজনক হতে পারে। দীর্ঘ মুলতবির মাধ্যমে সব পক্ষই সময় পাবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। পরে শুনানি পুনরায় শুরু হলে রাষ্ট্রপক্ষ জানায়, তারা আজই যুক্তিতর্ক শেষ করতে প্রস্তুত।
২০১১ সালের ৩০ জুন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলসহ সংবিধানের ৫৪টি ক্ষেত্রে পরিবর্তন এনে পঞ্চদশ সংশোধনী জাতীয় সংসদে পাস হয়। গত বছরের জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সরকার পরিবর্তনের পর সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে দুটি রিট হয়। সুজন সম্পাদকসহ পাঁচ ব্যক্তি একটি এবং নওগাঁর বাসিন্দা মো. মোফাজ্জল হোসেন আরেকটি রিট করেন।
চূড়ান্ত শুনানি শেষে গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর হাইকোর্ট রায়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলসংক্রান্ত পঞ্চদশ সংশোধনী আইনের ২০ ও ২১ ধারা এবং ৭ক, ৭খ, ৪৪(২) অনুচ্ছেদ বাতিল ঘোষণা করে। একই রায়ে গণভোটের বিধানসংক্রান্ত ১৪২ অনুচ্ছেদ পুনর্বহাল করা হয়। তবে পুরো পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিল না করে অন্যান্য ধারার বিষয়ে পরবর্তী সংসদ সিদ্ধান্ত নিতে পারবে বলে উল্লেখ করা হয়।
হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে তিনটি পৃথক আপিল দায়ের করা হয়। সুজন সম্পাদকসহ চার ব্যক্তি একটি, নওগাঁর বাসিন্দা মোফাজ্জল হোসেন একটি এবং জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল আরেকটি আপিল করেন। এসব আপিলের ওপর ৩ ডিসেম্বর থেকে টানা কয়েক দিন শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।



