গুম মামলায় ১০ সেনা কর্মকর্তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১:০৪ এএম
টানা ক্ষমতাকালের টিএফআই সেলে গুম ও নির্যাতনের অভিযোগে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৭ জনকে আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে সেনাবাহিনীর ১০ কর্মকর্তা বুধবার (৩ ডিসেম্বর) সকাল ১০টা ২৩ মিনিটে ঢাকার সেনানিবাসের বিশেষ কারাগার থেকে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ‘বাংলাদেশ জেল-প্রিজন ভ্যান’ লেখা সবুজ রঙের গাড়িতে করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আনা হয়।
র্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. কামরুল হাসান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহাবুব আলম, কর্নেল কেএম আজাদ, কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন, কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান (অবসরকালীন ছুটিতে), র্যাব গোয়েন্দা শাখার সাবেক পরিচালক কর্নেল মো. মশিউর রহমান, লে. কর্নেল সাইফুল ইসলাম সুমন ও লে. কর্নেল মো. সারওয়ার বিন কাশেম।
এছাড়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার প্রতিরক্ষাবিষয়ক সাবেক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইজিপি বেনজির আহমেদ, র্যাবের সাবেক ডিজি এম খুরশিদ হোসেন এবং র্যাবের সাবেক মহাপরিচালক ব্যারিস্টার হারুন অর রশিদ।
আজ বেলা ১১টার পর ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের প্যানেলে আসামিদের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের বিষয়ে শুনানি হবে। প্রথমে প্রসিকিউশন এবং পরে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা বক্তব্য দেবেন। পলাতক আসামিদের পক্ষে আদালত নিযুক্ত স্টেট ডিফেন্স আইনজীবীরা প্রতিনিধিত্ব করবেন।
ট্রাইব্যুনালে সেনা কর্মকর্তাদের হাজিরাকে কেন্দ্র করে হাইকোর্টের মূল ফটক থেকে ট্রাইব্যুনাল এলাকা পর্যন্ত কড়া নিরাপত্তা নেওয়া হয়েছে। মোতায়েন রয়েছে পুলিশ, সেনাবাহিনী, বিজিবি, র্যাব, এপিবিএন এবং সাদা পোশাকে গোয়েন্দা সদস্যরা।
এর আগে ২৩ নভেম্বর অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য ৩ ডিসেম্বর দিন ঠিক করেন ট্রাইব্যুনাল। সেদিন সেনানিবাসের বিশেষ কারাগারে থাকা ১০ কর্মকর্তা ট্রাইব্যুনালে হাজির ছিলেন। আইনজীবীরা তাদের ভার্চুয়াল হাজিরা চাইলেও ট্রাইব্যুনাল আজ এ নিয়ে শুনানি করবে।
আগের শুনানিতে ট্রাইব্যুনাল মন্তব্য করে—সাবেক প্রধান বিচারপতি পর্যন্ত নিয়মিত সশরীরে হাজির হচ্ছেন; আইন সবার জন্য সমান।
গুমের ঘটনায় অভিযুক্ত শেখ হাসিনার পক্ষে দাঁড়ানোর আবেদন করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেডআই খান পান্না। ট্রাইব্যুনাল তাঁকে স্টেট ডিফেন্স হিসেবে নিয়োগ দিলেও তিনি মৌখিকভাবে এ মামলায় না লড়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন।
গত ২২ অক্টোবর সেনা হেফাজতে থাকা ১০ কর্মকর্তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হলে শুনানি শেষে তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেওয়া হয়। একই সঙ্গে পলাতক আসামিদের হাজিরার জন্য সাত দিনের মধ্যে জাতীয় দুই দৈনিকে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেওয়া হয়। নির্ধারিত সময়েও তারা হাজির না হওয়ায় তাদের পক্ষে স্টেট ডিফেন্স নিয়োগ করে আদালত।
৮ অক্টোবর প্রসিকিউশন এ মামলায় আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করলে আদালত তা আমলে নিয়ে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।



