জুলাই গণহত্যা মামলার রায় সোমবার
শেখ হাসিনাসহ তিনজনের রায় সরাসরি দেখবে পুরো বিশ্ব
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৬ নভেম্বর ২০২৫, ১২:৩৬ পিএম
জুলাই গণহত্যার দায়ে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে রায় ঘোষণা হবে সোমবার (১৭ নভেম্বর)। এ রায় সরাসরি সম্প্রচার করা হবে—দেখতে পারবে গোটা বিশ্ব। পাশাপাশি রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বড় পর্দায় বিচারকাজ দেখানোর উদ্যোগ নিয়েছে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়।
রোববার (১৬ নভেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের নির্ভরযোগ্য সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। সূত্র জানায়, মামলার রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে শুধু বাংলাদেশ নয়, আন্তর্জাতিক মহলেও বাড়ছে আগ্রহ। তাই বিচারকাজ সরাসরি দেখানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যাতে এটি ভবিষ্যতের জন্য উদাহরণ হিসেবে প্রতিষ্ঠা পায়।
গত ১৩ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের প্যানেল ১৭ নভেম্বর রায় ঘোষণার তারিখ নির্ধারণ করেন। প্যানেলের অন্য সদস্যরা হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারপতি মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
প্রসিকিউশনের পক্ষে আদালতে ছিলেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম, গাজী এমএইচ তামিম, ফারুক আহাম্মদ ও অন্যান্যরা।
গত ২৩ অক্টোবর সমাপনী বক্তব্যে অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রধানমন্ত্রীর বিচারের দৃষ্টান্ত টেনে আনেন এবং শেখ হাসিনা ও কামালের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানান। আসামিপক্ষের রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবীর যুক্তি উপস্থাপনের পর চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম জবাব দেন। এরপর স্টেট ডিফেন্স আইনজীবী আমির হোসেন পাল্টা জবাব উপস্থাপন করেন।
মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয় ৩ আগস্ট। ৮৪ জন সাক্ষীর মধ্যে ৫৪ জন আদালতে সাক্ষ্য দেন। প্রথম সাক্ষী খোকন চন্দ্র বর্মণ ট্রাইব্যুনালে তুলে ধরেন ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের ভয়াবহতার বীভৎস চিত্র। ৮ অক্টোবর তদন্ত কর্মকর্তা মো. আলমগীরের জেরা শেষ হলে সাক্ষ্যগ্রহণের ধাপ সম্পন্ন হয়।
এই মামলায় তিন আসামির বিরুদ্ধে আনা হয়েছে মানবতাবিরোধী অপরাধের পাঁচটি অভিযোগ—উসকানি, মারণাস্ত্র ব্যবহার, আবু সাঈদ হত্যা, চানখারপুলে হত্যা এবং আশুলিয়ায় লাশ পোড়ানো। ৮,৭৪৭ পৃষ্ঠার আনুষ্ঠানিক অভিযোগের মধ্যে দালিলিক প্রমাণাদি, জব্দতালিকা, তথ্যসূত্র ও শহীদদের তালিকা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
তৃতীয় আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন রাজসাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দিয়েছেন। এ কারণে তাঁর সর্বোচ্চ সাজা দাবি না করে বিষয়টি ট্রাইব্যুনালের ওপর ছেড়ে দিয়েছে প্রসিকিউশন। তার আইনজীবী অ্যাকুইটাল (খালাস) চেয়েছেন। ১৭ নভেম্বর রায় ঘোষণার মধ্য দিয়ে জুলাই গণহত্যা মামলার প্রথম রায় শুনবে দেশ।



