মামলা তুলে না নিলে বিশেষ বাহিনী দিয়ে তুলে নেয়ার হুমকি
আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৭:১১ পিএম
ছবি-যুগের চিন্তা
মামলা তুলে না নিলে বিশেষ বাহিনী দিয়ে তুলে নেয়ার হুমকি দিচ্ছে জনতা ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় ঢাকায় কর্মরত প্রিন্সিপাল অফিসার মো. কাউয়ুম সিকদার ও তার ভাই শাহীন সিকদার। এতে মামলা করে বিপাকে পরেছেন তালতলী উপজেলার কড়াইবাড়িয়া দারুসসুন্নাত দাখিল মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক আবু সেলিম সিকদার। তাদের অব্যাহত হুমকিতে জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন তিনি।
সোমবার এমন অভিযোগ করেছেন মামলার বাদী আবু সেলিম সিকদার। দ্রæত আসামীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী মাদ্রাসা শিক্ষকের।
জানাগেছে, তালতলী উপজেলার ছোটবগী গ্রামের মাদ্রাসা শিক্ষক আবু সেলিম সিকদার গত ২০ বছর আগে তার পৈত্রিক জমিতে বসতবাড়ী নির্মাণ করে বসবাস করে আসছেন। বাড়ীর সামনে তিনি মাছের ঘের, পুকুর ও পাশে বাড়ীতে প্রবেশের রাস্তা নির্মাণ করছেন। ওই জমির মধ্যে ৭ শতাংশ জমি জনতা ব্যাংক কর্মকর্তা কাইয়ুম সিকদার ও তার ভাই শাহীন সিকদার দাবি করেন। গত বছর ১০ আগষ্ট তাদের নেতৃত্বে এক বিশেষ বাহিনী এনে মাদ্রাসা শিক্ষকের প্রবেশ পথ, পুকুর পাড় ও মাছের ঘের এবং ওই জমিতে লাগানো সমুদয় গাছ কেটে ফেলে।
এতে তার বাড়ীতে প্রবেশের পথ বন্ধ হয়ে যায়। গত এক বছর ধরে ওই মাদ্রাসা শিক্ষক ও তার পরিবারের সদস্যদের বাড়ীতে প্রবেশে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন এমন দাবী তার। গত ৫ সেপ্টেম্বর মাদ্রাসা শিক্ষক বাড়ীতে প্রবেশের পথ নির্মাণ করেন। তাৎক্ষনিক ব্যাংক কর্মকর্তা মোবাইল ফোনে হুমকি দেয় হয় প্রবেশ পথ কেটে নিবে নইলে আবার বিশেষ বাহিনী এনে রাস্তা কেটে ফেলা হবে।
নিরুপায় হয়ে গত ৭ সেপ্টেম্বর আবু সেলিম সিকদার ব্যাংক কর্মকর্তা কাউয়ুম সিকদারকে প্রধান আসামী করে দুই জনের নামে আমতলী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ভুমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইনে মামলা দায়ের করেছেন। আদালতের বিচারক মোঃ ইফতি হাসান ইমরান মামলাটি আমলে নিয়ে তালতলী থানার ওসিকে তদন্তপুর্বক প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন। এ মামলা করে বিপাকে পরেছেন বাদী আবু সেলিম সিকদার। মামলা তুলে নিতে কাউয়ুম সিকদার বিশেষ বাহিনীর ভয় দেখাচ্ছেন। তাদের এভাবে অব্যাহত হুমকিতে মামলার বাদী সেলিম সিকদার জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে আরো অভিযোগ তার।
স্থানীয় নুরুল ইসলাম গাজী, সিদ্দিক সিকদার ও ইদ্রিস সিকদার বলেন, গত বছর সরকার পরিবর্তনের কয়েকদিন পর বিশেষ বাহিনীর সদস্যরা দাড়িয়ে থেকে সেলিম সিকদারের বাড়ীর প্রবেশ পথ, পুকুর পাড়, মাছের ঘের ও গাছ কেটে ফেলছে।
মামলার বাদী মাদ্রাসা শিক্ষক আবু সেলিম সিকদার বলেন, পৈত্রিক জমিতে বসতবাড়ী নির্মাণ করে গত ২০ বছর ধরে বসবাস করে আসছি। গত বছর ১০ আগষ্ট কাউয়ুম সিকদার ও তার ভাই শাহীন শিকদারের আত্মীয় এক বিশেষ বাহিনীর কর্মকর্তার নির্দেশে দুই গাড়ী বিশেষ বাহিনী আনেন। তাদের সামনেই কাউয়ুম সিকদার ও শাহীন সিকদার ২০-২৫ জন লোক আমার বাড়ীর প্রবেশ পথ, পুকুর পাড়, মাছের ঘের ও বিভিন্ন প্রজাতির গাছ কেটে ফেলেছে।
নিরুপায় হয়ে এক বছর ২৭ দিন পরে আমতলী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেছি। এখন মামলা করে আরো বিপদে পরেছি। ব্যাংক কর্মকর্তা কাউয়ুম সিকদার ও তার লোকজন মামলা তুলে নিতে আমাকে অব্যাহত হুমকি দিচ্ছে। মামলা তুলে না নিলে আবারো বিশেষ বাহিনী এতে আমাকে তুলে নিবে। আমি জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
জনতা ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে কর্মরত প্রিন্সিপাল অফিসার মোঃ কাউয়ুম সিকদার বলেন, ওই জমি আমাদের নামে বিএস রেকর্ড হয়েছে। তিনি (সেলিম সিকদার) দীর্ঘদিন ধরে জোরপুর্বক দখলে রেখেছেন। তাই আমাদের জমি উদ্ধার করেছি। তবে বিশেষ বাহিনী আনা ও মামলা তুলে নিতে হুমকির কথা অস্বীকার করেছেন তিনি।
তালতলী থানার ওসি মোহাম্মদ শাহজালাল বলেন, আদালতের নথি পেয়েছি। তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করা হবে।



