শত কোটি টাকা প্রতারণার হোতা জোছনা সিআইডির হাতে আটক
স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৭:১৭ পিএম
গ্রেফতারকৃত জোসনা খাতুন
শুধু লোভনীয় বেতনের মোটা চাকরি দেখিয়ে ইটালি নেওয়ার কথা বলে জাল ভিসা ধরিয়ে দেওয়া নয়, সরকারি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে বসানোর নাম করেও প্রতারণা করা হতো শত শত কোটি টাকা।
আর এ চক্রের মূলহোতাকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি ঢাকা মেট্রো পূর্ব বিভাগের একটি টিম। গ্রেফতারকৃতের নাম জোসনা খাতুন (৩৫)। সে নড়াইল সদরের দলজিৎপুর গ্রামের মেহেদী হাসানের স্ত্রী। তার পিতার নাম সুলতান খাঁ, মাতা- জোবেদা বেগম। আজ ২৩ সেপ্টেম্বর বিকাল ৪টায় কাফরুল (ডিএমপি) থানাধীন ইব্রাহিম পুর এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত জোসনা খাতুনের নামে পল্টন (ডিএমপি) থানায় মামলা রয়েছে। ইতোপূর্বে এ চক্রের অন্যতম সক্রিয় সদস্য মিলন মিয়াকে (৪২) গ্রেফতার করে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়।
মামলার তদন্তে জানা যায় প্রথমে লোভনীয় বেতনের চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে মোটা টাকার চুক্তি হয়। বেশ কিছু ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে নেওয়া হয় সে চুক্তির অর্থ। এরপর ভিক্টিমকে ভুয়া ভিসা ধরিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি কখনো পাসপোর্ট আটকে রেখে হয়রানি করা হতো।
তদন্তে আরও জানা যায়, ইতালিতে লোক পাঠানোর কথা বলে মিলন মিয়া প্রতারক চক্রের হয়ে বিভিন্ন এলাকা থেকে লোক সংগ্রহ করত। বিদেশ যেতে আগ্রহী লোকদেরকেই মূলত তারা টার্গেট করতো। ফরিদপুর, নড়াইল নরসিংদী, কিশোরগঞ্জ, চাঁদপুর, চট্টগ্রামসহ সারাদেশের আরও বেশ কিছু জেলায় এ প্রতারক চক্রটির নেটওয়ার্ক রয়েছে। এভাবে প্রায় শতাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে এ চক্রটি।
প্রকৃত ভিসার বদলে দিয়েছে ভুয়া ভিসা। চক্রটির প্রতারণালব্ধ উক্ত অর্থ বেশকিছু অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে গ্রহণ করার তথ্য প্রাথমিকভাবে পাওয়া যায়। এছাড়া ভুক্তভোগীদের পাসপোর্ট আটকে রেখে হয়রানি করার অভিযোগও রয়েছে প্রতারক চক্রটির বিরুদ্ধে।
গ্রেফতারকৃত জোসনা খাতুন (৩৫) প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রতারণার কথা স্বীকার করেছে। সরকারি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে বসানোর প্রলোভন দেখিয়ে বিপুল পরিমাণ অর্থ প্রতারনার দায়ও স্বীকার করেছে। মাদক ব্যবসায়ীদের সাথে সম্পৃক্ত থাকার তথ্যও পাওয়া গেছে। প্রাপ্ত তথ্য যাচাই বাছাই করা হচ্ছে।
বর্তমানে ঘটনাটির তদন্ত কার্যক্রম সিআইডি, ঢাকা মেট্রো পূর্ব বিভাগ পরিচালনা করছে। গ্রেফতারকৃতকে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দকরণ ও পরবর্তী আইনগত কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন। অপরাধের পূর্ণাঙ্গ তথ্য উদঘাটন, অজ্ঞাত অপরাপর সদস্যদের সনাক্ত ও গ্রেফতার করার স্বার্থে সিআইডির তদন্ত ও অভিযান অব্যাহত রয়েছে।



