বিচারপতি খুরশীদ আলমের চূড়ান্ত শুনানি ২ সেপ্টেম্বর
স্টাফ রিপোর্টার :
প্রকাশ: ২৮ আগস্ট ২০২৫, ০৬:৩৯ পিএম
ছবি-সংগৃহীত
আগামী ২ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টের বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের বিষয়ে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলে চূড়ান্ত শুনানি হতে পারে । সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটের নিউজ আপডেটে এ তথ্য জানানো হয়েছে। প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল হাইকোর্টের বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারকে ডেকেছেন ওই দিন।
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে প্রভাব খাটিয়ে বিচারের রায় দিয়ে বাবার ট্রাস্টে টাকা নেওয়া বিচারপতি মুহম্মদ খুরশিদ আলম সরকার এখনো বহাল তবিয়তে নির্বিগ্ন জীবন-যাপন করছেন বলে তার একটি ঘনিষ্ট সূত্র জানিয়েছে। অথচ আগের সরকারের সময় যে প্রভাব খাটিয়েছেন তার জন্য তাকে এ সময় জেলে থাকার কথা। তিনি এখনও অর্থের জোরে কাউকে কেয়ার করছেন না বলে ওই সূত্র উল্লেখ করে।
সূত্র জানায় আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নামে-বেনামে কোটি কোটি টাকা কামিয়ে এখন সেই টাকা খরচ করে আগের মতোই আছেন।
সম্প্রতি, বিচারপতি খুরশীদ আলম সরকারকে হাইকোর্টের বেঞ্চ থেকে বিরত রাখা হয়েছে এবং সুপ্রীম জুডিশিয়াল কাউন্সিল তাকে ২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে চূড়ান্ত শোনার জন্য তলব করেছে, যেখানে অভিযোগে বলা হয়েছে তিনি অনিয়ম করেছেন। ২০২৩ সালে নোবেলজয়ী প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসকে হঠাৎ করেই করফাঁকি ও উপহার কর রাজস্ব মামলা খালাস করে তিন ট্রাস্টের জন্য ১২ কোটি টাকা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি খুরশীদ আলম সরকার।
বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারক বিচারপতি মো. আখতারুজ্জামানের বিষয়ে গত ২৬ আগস্ট সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলে চূড়ান্ত শুনানি সম্পন্ন হয়েছে। তার বিষয়ে যেকোন সময় সিদ্ধান্ত আসতে পারে।
এদিকে অনিয়মের অভিযোগের ব্যাখ্যা দিতে ছুটিতে পাঠানো হাইকোর্টের বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারকে ডেকেছেন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল। আগামী ২ সেপ্টেম্বর তার বিষয়ে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলে চূড়ান্ত শুনানি হবে।
গত বছরের ১৬ অক্টোবর দুর্নীতি ও শেখ হাসিনা সরকারের দোসর হিসেবে কাজ করার অভিযোগ ওঠায় ১২ বিচারপতিকে ছুটিতে পাঠান প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ। তাদের হাইকোর্টের বেঞ্চে বিচারকাজ পরিচালনার দায়িত্ব বিরত রাখা হয়।
ওই ১২ বিচারপতি হলেন— বিচারপতি নাইমা হায়দার, বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ, বিচারপতি আশীষ রঞ্জন দাস, বিচারপতি মোহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকার, বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামান, বিচারপতি আতাউর রহমান খান, বিচারপতি শাহেদ নূর উদ্দিন, বিচারপতি মো. আক্তারুজ্জামান, বিচারপতি মো. আমিনুল ইসলাম, বিচারপতি এস এম মাসুদ হোসেন দোলন, বিচারপতি খিজির হায়াত, বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামান।
পরে তাদের বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগের তদন্ত শুরু করে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল।
রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর গত বছরের ২০ অক্টোবর ওই রিভিউ নিষ্পত্তির পর পুনরুজ্জীবিত হয় বিচারপতি অপসারণ সংক্রান্ত সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল। নতুন করে গঠন করা হয় কাউন্সিল। এরপর বিচারপতিদের বিষয়ে বৈঠক করেন প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল। কাউন্সিলের অপর দুই সদস্য হলেন— আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ দুই বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম ও জুবায়ের রহমান চৌধুরী।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায় বিচারপতি থাকা অবস্থায় তিনি ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে কারী কারী টাকা কামিয়ে গ্রামের বাড়িতে আলিশান বাড়ি-গাড়ি ব্যাংক ব্যালান্স সব করেছেন। স্ত্রীকে এমপি বানানোর জন্য এলাকায় উপস্থিত থেকে মিছিল-মিটিং,সভা-সমাবেশ, পাড়া-মহল্লায় বৈঠকসহ আলোচনায় ব্যস্ত থাকতেন। ভোটারদের মাঝে অহেতুক টাকা ছড়াতেন বলে এলাকায় গুঞ্জন ছিল।
উল্লেখ্য, বর্তমানে বাংলাদেশের হাইকোর্টের বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের বিরুদ্ধে “দুর্নীতি, আচরণগত অনিয়ম ও রাজনৈতিক পক্ষপাত” সংক্রান্ত সাধারণ অভিযোগ অনুসরণ করে এসজেসসি-র তদন্ত চলছে। তবে, অভিযোগের নির্ভুল স্বরূপ বা ঘটনা-নির্দিষ্ট তথ্য এখনও প্রকাশ করা হয়নি। এসজেসসি ( সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল ) হলো সংবিধান নির্ধারিত একটি বিশেষ প্রতিষ্ঠান, যেটি বাংলাদেশের উচ্চ আদালতের বিচারপতিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্ত করার একমাত্র সাংবিধানিক কর্তৃপক্ষ।



