Logo
Logo
×

আইন-আদালত

মুরাদনগরে ধর্ষণ: ভিডিও ছড়ানোর মূলহোতা শাহ পরান গ্রেফতার

Icon

কুমিল্লা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৩ জুলাই ২০২৫, ০৯:২২ পিএম

মুরাদনগরে ধর্ষণ: ভিডিও ছড়ানোর মূলহোতা শাহ পরান গ্রেফতার

কুমিল্লার মুরাদনগরে নারীকে ধর্ষণ ও নির্যাতনের ঘটনায় জড়িত প্রধান আসামি ফজর আলীর ভাই শাহ পরানকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। বৃহস্পতিবার (০৩ জুলাই) বিকালে বুড়িচং উপজেলায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার শাহ পরান ধর্ষণ মামলার মূল আসামি ফজর আলীর ছোট ভাই এবং ওই নারীকে মারধর ও বিবস্ত্র করে ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনার মূলহোতা বলে জানিয়েছে র‌্যাব। 

বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে গ্রেফতারের বিষয়টি বাংলা ট্রিবিউনকে নিশ্চিত করেছেন কুমিল্লা র‌্যাব-১১-এর সিপিসি-২-এর কোম্পানি অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কমান্ডার মাহমুদুল হাসান। তিনি বলেন, ‘ঘটনার পর থেকে আত্মগোপনে ছিলেন শাহ পরান। আজ বিকালে বুড়িচং উপজেলায় অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করা হয়। তার কাছে ধর্ষণের ঘটনায় ছবি ও ভিডিওসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে।  ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার মূলহোতা এই শাহ পরান। পরে সংবাদ সম্মেলন করে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হবে।’ 

মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুর রহমান বলেন, ‘ভিডিও ছাড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় শাহ পরানের সম্পৃক্ততার বিষয়টি পুলিশের তদন্তে উঠে আসে। ভুক্তভোগী নারীর করা মামলার এজাহারভুক্ত এই আসামিকে ইতিমধ্যে গ্রেফতারের বিষয়টি আমাদের জানিয়েছে র‌্যাব। 

পুলিশ ও র‌্যাব সূত্রে জানা গেছে, পারিবারিক বিষয় নিয়ে ভাই ফজর আলীর সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল শাহ পরানের। এরপর ফজরকে শায়েস্তা করার পরিকল্পনা নেন। তার দীর্ঘদিনের পরিকল্পনা সহযোগীদের নিয়ে বাস্তবায়ন করেন ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি মুহাম্মদ আলী সুমন। সুমন গ্রেফতার হলেও শাহ পরান ছিলেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। পরে র‌্যাবের সহায়তায় তাকে গ্রেফতার করা হয়।

পুলিশ ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, টাকা ধার নেওয়া নিয়ে ফজর আলীর সঙ্গে ওই নারীর পরিবারের পরিচয় হয়। এ নিয়ে দুই ভাইয়ের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়। দেড় মাস আগে ওই নারী ও ফজরকে নিয়ে ফেসবুকে আপত্তিকর মন্তব্য করেন শাহ পরান। এরপর থেকে ফজরের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করতে থাকেন। সেদিন ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি মুহাম্মদ আলী সুমন, রমজান, অনিক, আরিফসহ ১৫-২০ জনকে সঙ্গে নিয়ে ফাঁদ পাতা হয়। রাত ১১টার দিকে ফজর ওই নারীর বাড়িতে গেলে এই ঘটনা ঘটে।

পুলিশ জানায়, এরই মধ্যে ফজর, সুমন, রমজান, আরিফ ও অনিককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ফজর বর্তমানে পুলিশ পাহারায় কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। বাকি চার জনের মোবাইল থেকে কিছু ভিডিও উদ্ধার করা হয়। এসব ভিডিও বিশ্লেষণ করে অন্য জড়িতদের সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়। 

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই রুহুল আমিন বলেন, সন্দেহভাজন ২০-২৫ জনের তালিকা আমাদের হাতে রয়েছে। পুলিশের পাশাপাশি, ডিবি, র‌্যাবসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সন্দেহভাজন আসামিদের গ্রেফতারের বিষয়ে কাজ করছে। পাশাপাশি নিরাপত্তা সংক্রান্ত কারণে এবং বিব্রতকর পরিস্থিতি এড়াতে ভুক্তভোগী নারী ও তার পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা হেফাজতে রাখা হয়েছে। পুলিশের তত্ত্বাবধানে ওই পরিবার নিরাপদে আছে। সামাজিক বিশৃঙ্খলা এবং সাময়িক ট্রমা কাটাতে তাদের ইচ্ছা অনুযায়ী নিরাপদ স্থানে রাখা হয়েছে। ভুক্তভোগীর মেডিক্যাল পরীক্ষার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন আছে।

মুরাদনগর থানার ওসি জাহিদুর রহমান বলেন, ‘ওই ঘটনায় দুটি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে একটি ধর্ষণের, অপরটি যারা ভিডিও ছড়িয়েছে তাদের বিরুদ্ধে পর্নোগ্রাফি আইনে। ধর্ষণ মামলার একমাত্র আসামি ফজর আলী। পর্নোগ্রাফি মামলার নামীয় আসামি ফজরসহ পাঁচ জন ও অজ্ঞাত আরও ২৫ জন। এর মধ্যে ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় বৃহস্পতিবার দুপুরে গ্রেফতার চার জনের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। বিকালে শাহ পরানকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। 

Swapno

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher

Major(Rtd)Humayan Kabir Ripon

Managing Editor

Email: [email protected]

অনুসরণ করুন