Logo
Logo
×

আইন-আদালত

কমলনগরে খাল দখলমুক্ত করতে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ

Icon

লক্ষ্মীপুর প্রতিবেদক :

প্রকাশ: ২৫ জুন ২০২৫, ০৯:১৮ পিএম

কমলনগরে খাল দখলমুক্ত করতে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ

ছবি-যুগের চিন্তা

লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলা সদর হাজিরহাট বাজার সংলগ্ন জারিরদোনা শাখা খাল দখলমুক্ত করতে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান শুরু করেছেন প্রশাসন। 

বুধবার (২৫ জুন) সকালে হাজিরহাট উত্তর বাজার অংশের খাল দখল করে নির্মিত অবৈধ স্থাপনা বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়ার মধ্য দিয়ে এ উচ্ছেদ অভিযান শুরু করা হয়। এসময় ভেঙে ফেলা হয় খালের ওপর নির্মিত অর্ধশত বক্স কালভার্ট ও দোকানঘর। 

তবে খালের জায়গা দখল করে গড়ে ওঠা তিনটি বহুতল ভবনের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। অভিযানের আগেই ভবন মালিকরা উচ্চ আদালত থেকে স্থগিতাদেশ আনায় ভবনগুলো অক্ষত রাখা হয়। এ নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে অসন্তোষ ও ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। অনেকে একে আইনের অপব্যবহার ও সময়ক্ষেপণের কৌশল বলেও মন্তব্য করেন।

স্থানীয়রা দাবি করেন, সকল প্রভাবশালী দখলদারদের বিরুদ্ধে সমানভাবে আইন প্রয়োগ নিশ্চিত না হলে প্রকৃত অর্থে খাল দখলমুক্ত হবে না। 

এদিকে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনাকালে এতে অংশ নেওয়া তিন শ্রমিক দেয়াল ধসে আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আহত শ্রমিকদের উদ্ধার করে স্থানীয় ক্লিনিকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রাহাত উজ জামানের নেতৃত্বে পরিচালিত এ অভিযানে সহকারী কমিশনার (ভূমি) মুহাম্মদ আরাফাত হোসাইন, জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মজিবুর রহমান অংশ নেন। এতে সেনাবাহিনী, পুলিশ, ডিবি পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা সহযোগিতা করেন।

জানা গেছে, উপজেলা সদর হাজিরহাট বাজার ঘেষে বয়ে যাওয়া জারিরদোনা খালের পাড় দখল ও ভরাট করে প্রভাবশালীরা বহুতল মার্কেট, দোকানঘর ও আবাসিক ভবন নির্মাণ করেন। এক সময় এটি দিয়ে মহাজনি নৌকা চলাচল করলেও দখলদারের কারণে খালটির অস্তিত্ব বিলীনের মুখে পড়ে। এতে করে বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে স্থানীয়ের দুর্ভোগ পোহানোর পাশাপাশি কৃষকরা অনেক ক্ষতির শিকার হয়ে আসছিল। বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে প্রশাসন খালটি উদ্ধারে উদ্যোগ নিয়ে সরেজমিন পরিদর্শন করে ৮০ দখলদারের তালিকা তৈরি করেন। দখল ছেড়ে দিতে বারবার দেওয়া হয় উচ্ছেদ নোটিশ। সবশেষ ঈদুল আযহার আগে অবৈধ স্থাপনাগুলো সরিয়ে নেওয়ার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে নোটিশ প্রদান ও মাইকিং করা হয়। ২২ জুন দ্বিতীয় বারের মতো মাইকিং করে স্থাপনাগুলো সরিয়ে নেওয়ার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কেউই স্থাপনাগুলো সরিয়ে নেয়নি। যে কারণে, প্রশাসন বাধ্য হয়ে ওইসব অবৈধ দখল উচ্ছেদের অভিযান শুরু করেন। 

এদিকে খালের অংশ দখল করে নির্মিত তিনটি বহুতল ভবনের মালিক উচ্চ আদালত থেকে স্থগিতাদেশ নিয়ে আসায় অভিযানের সময় ভবনগুলো ভাঙা হয়নি।

জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মজিবুর রহমান জানান, খালের ওপর থেকে স্থাপনা সরিয়ে নিতে নোটিশ করা হয়েছিল। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে স্থাপনাগুলো সরানো হয়নি। যে কারণে, অভিযান চালিয়ে দোকানঘরসহ অর্ধশত স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে খালের ২৪ শতাংশ জমি দখলমুক্ত করা হয়েছে।

তিনি বলেন, তিনটি বহুতল ভবনের মালিক উচ্চ আদালত থেকে স্থগিতাদেশ নেওয়ায় সেগুলো এ মুহূর্তে উচ্ছেদ করা সম্ভব হয়নি। জলাবদ্ধতা নিরসন ও খালের প্রবাহ পুনরুদ্ধারে জেলা প্রশাসনের এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রাহাত উজ জামান বলেন, প্রভাবশালীরা খালটি দখল করে রাখায় পানির প্রবাহ অনেকটা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় খালটি দখলমুক্ত করতে স্থানীয়রা দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছিল। বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে এ উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে।  খালটির পানির প্রবাহ নিশ্চিত করতে আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।


Swapno

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher

Major(Rtd)Humayan Kabir Ripon

Managing Editor

Email: [email protected]

অনুসরণ করুন