Logo
Logo
×

ফিচার

বিশ্ব প্রাণী দিবস

বিলুপ্তি ঠেকাতে প্রজনন বান্ধব বাসস্থান দিতে হবে

Icon

প্রকাশ: ০৪ অক্টোবর ২০২৫, ০৫:২২ পিএম

বিলুপ্তি ঠেকাতে প্রজনন বান্ধব বাসস্থান দিতে হবে

প্রাণী বাঁচান, গ্রহ বাঁচান (সেভ এনিম্যালস, সেভ দ্য প্ল্যানেট) প্রতিপাদ্যে আজ বিশ্ব প্রাণী দিবসের ১০০তম বার্ষিকী উদযাপিত হচ্ছে। পৃথিবীজুরে প্রাণীদের অধিকার নিশ্চিত করার জন্য প্রতিবছর ৪ অক্টোবর দিবসটি পালিত হয়। পুরো পৃথিবীর প্রাকৃতিক ভারসাম্য ঠিক রাখতে সৃষ্টিকর্তা মানুষের পাশাপাশি প্রাণীকুল সৃষ্টি করেছেন। মানবসৃষ্ট কারনের পাশাপাশি নানারকম প্রাকৃতিক দূর্যোগে বিলুপ্ত হচ্ছে নানা প্রজাতির প্রানী। এদের রক্ষা করে পৃথিবীর স্বাস্থ্য ঠিক এখন সময়ের দাবি।

ওয়ার্ল্ড ওয়াইল্ডলাইফ ফান্ড এক প্রতিবেদনে জানায়, ১৯৭০ সাল থেকে এ পর্যন্ত বিশ্বে দুই-তৃতীয়াংশ বন্যপ্রাণী কমেছে। ১০০ বছরে বাংলাদেশের ভূখণ্ড থেকে হারিয়ে গেছে ৩১ প্রজাতির প্রাণী। যার মধ্যে রয়েছে ১১টি স্তন্যপায়ী, ১৯টি পাখি ও ১টি সরীসৃপ।

আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘ- আইইউসিএন এর সর্বশেষ ২০১৫ সালের হিসেব অনুযায়ী, বাংলাদেশে ১৬০০-এর বেশি প্রজাতির প্রাণী রয়েছে। যাদের মধ্যে ৩৯০টি প্রজাতিই বিপন্নের পথে। এই প্রজাতিগুলোকে আইইউসিএন লাল তালিকাভুক্ত করেছে। এছাড়া ৫০টিরও বেশি প্রজাতি অতি বিপন্ন ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে বলে চিহ্নিত করেছে আইইউসিএন।

বাংলাদেশে প্রাণী বিলুপ্তের হার আশঙ্কাজনকভাবে বেশি। বন উজাড় ও অপরিকল্পিত নগরায়নের ফলে প্রাণীর আবাসস্থল ও চলাফেরার পথ ভেঙে যাচ্ছে, একইসাথে খাদ্য সংকটে পড়ছে। নদী, লেক ও জলাশয়গুলোতে দূষণের মাত্রা বেড়ে যাচ্ছে। ব্যক্তি বা রাষ্ট্রীয় স্বার্থে প্রাকৃতিক সম্পদের অতিরিক্ত ব্যবহার এবং অপরাধীরা বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণীকে অবৈধ শিকার ও পাচার করছে। এছাড়া জলবায়ু পরিবর্তন ও প্রকৃতিক দূযোগের কারণে বাংলাদেশে প্রানীদের সংখ্যা কমছে ও প্রজাতি হারাচ্ছে। এমন নানা কারনে প্রতি বছরই পৃথিবী থেকে এক বা একাধিক প্রাণী বিলুপ্ত হচ্ছে।

প্রাণী ও তাদের বাসস্থানের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি সংস্থাগুলোর দায়িত্বও অপরিসীম। দেশের বনাঞ্চল, লেক, নদী-সাগরের তীরবর্তী অঞ্চল, জাতীয় উদ্যান ও বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যগুলোতে ড্রোন-ডেটাভিত্তিক নজরদারি, কঠোর আইন প্রয়োগ, প্রাণিদের পর্যাপ্ত খাদ্য, প্রজনন বান্ধব বাসস্থানচলাফেরার ভয়হীন নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করলে প্রাণীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে পারেএর মাধ্যমে দেশের প্রাকৃতিক ভারসাম্যও রক্ষা পাবে

প্রাণী বাঁচানো মানে শুধু প্রাণী সংরক্ষণ নয়, বরং এতে পৃথিবীর স্বাস্থ্যও ঠিক রাখা হয়। পৃথিবী টিকে থাকলে, আমরা মানুষও সুস্থ্যভাবে দীর্ঘমেয়াদী বাঁচতে পারব। তাই প্রাণী ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সচেতন হওয়া এবং মানবিক আচরণ প্রদর্শন করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।

ওয়ার্ল্ড এনিম্যাল ডে ওয়েবসাইট বলেছে, এবারের প্রতিপাদ্য মূলত প্রাণীকল্যাণ ও পৃথিবী নামক গ্রহের স্বাস্থ্যের সম্পর্কের কথা মনে করিয়ে দেয়। জানা যায়, হেনরিক জিম্মারমেন নামের একজন জার্মান লেখক ও প্রকাশক সর্বপ্রথম ১৯২৫ সালে জার্মানির বার্লিন স্পোর্ট প্যালেসে এই দিবসের সূচনা করেন। তিনি ‘মেন্স উন্ড হুন্দ’ (মানুষ ও কুকুর) নামক একটি ম্যাগাজিনে এই বিষয়ে লিখেছিলেন। ১৯২৯ সালের ৪ অক্টোবর প্রথমবারের মতো দিবসটি পালন করা হয়। প্রথমদিকে জার্মানি, অস্ট্রিয়া, সুইজারল্যান্ড ও চেকোস্লোভাকিয়ার অধিবাসীরা দিবসটি পালন করলেও পরে ১৯৩১ সালে ইতালির ফ্লোরেন্সে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক প্রাণী সুরক্ষা কংগ্রেসে উত্থাপন করা প্রস্তাব মতে, ৪ অক্টোবরকে বিশ্ব প্রাণী দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। বর্তমানে এটি বৈশ্বিক অনুষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। ২০০৩ সাল থেকে যুক্তরাজ্যভিত্তিক প্রাণী কল্যাণ চ্যারিটি নেতৃত্ব ও পৃষ্ঠপোষকতা করে আসছে।

লেখক:

মো. সোহাগ রাসিফ

প্রাক্তন শিক্ষার্থী, প্রাণিবিদ্যা বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।

Swapno

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher

Major(Rtd)Humayan Kabir Ripon

Managing Editor

Email: [email protected]

অনুসরণ করুন