বাবা-মায়ের আদর ও স্নেহ শিশুর নৈতিক বিকাশ ঘটায়
কাজী খলিলুর রহমান
প্রকাশ: ১৯ আগস্ট ২০২৫, ০৫:৪১ পিএম
শিশু শব্দটি একটি মমতাময়ী শব্দ। যে শব্দের মাঝে লুকিয়ে থাকে কোটি কোটি বাবা-মায়ের স্নেহ, আদর ও ভালোবাসা। মা-বাবার আদর, স্নেহ ও ভালোবাসা শিশুর মানসিক, আবেগিক এবং নৈতিক বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। সেই মমতাময়ী শিশুটির একমাত্র চাওয়া-পাওয়া থাকে তার বাবা-মায়ের কাছে। তাই আজকের প্রজন্মের শিশুদের উপর জাতির ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে। তাই শিশুদের মানসিক বিকাশের ক্ষেত্রে আগ্রাসী মনোভাব পরিহার করতে হবে।
মা-এই শব্দটিই আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। মা-র ভালোবাসা, আদর এবং স্নেহের মধ্যে থাকে এমন এক অদ্ভুত শক্তি, যা শিশুদের জন্য জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে সহায়ক হতে পারে। মায়ের আদর যেমন শিশুর মনকে শান্ত রাখে, তেমনি এটি শিশুর শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্যও অতি গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমান যুগে যখন স্বাস্থ্য সচেতনতা এবং বিকল্প চিকিৎসা নিয়ে আলোচনা চলছে, তখনও একটি বিষয় যে সর্বত্র অপরিসীম গুরুত্ব পায় তা হলো—মায়ের আদরের প্রভাব। সন্তানকে ভালো কাজের দিকে উদ্বুদ্ধ করা, অন্যায়ের মোকাবেলা সর্বোপরি প্রতিবাদের পদ্ধতি শেখার অনত্যম প্রতিষ্ঠানও হলো পরিবার। মায়ের স্নেহের প্রতিটি নিঃশ্বাস, তার নরম হাতের ছোঁয়া, তার হৃদয়ের অন্তরঙ্গতা এক ধরনের মহাষৌধ যা শিশুর শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা নিশ্চিত করে।
সন্তানকে আদর্শ চরিত্রবান সুনাগরিকে হিসেবে তৈরি করতে বাবার ভূমিকা অনেক বেশি। পরিবারের অর্থিক প্রয়োজন মেটানোর মাধ্যমেই একজন বাবার দ্বায়িত্ব পালন শেষ হয়ে যায় না। বরং সুহৃদ, চরিত্রবান, আত্মমর্যাদার অধিকারী হিসেবে সন্তানদের গড়ে তোলাই বাবার অন্যতম দায়িত্ব ও কর্তব্য। হাদিসে এসেছে- রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘সন্তানের জন্য পিতার রেখে যাওয়া উত্তম চরিত্র থেকে শ্রেষ্ঠ কোনো মিরাসী (উত্তরাধিকার) সম্পত্তি হতে পারে না।’ (তিরমিজি)
বাবা-মায়ের সঠিক ভূমিকার কারণে অর্থাৎ শিশুকে মানসিকভাবে উপযুক্ত পরিবেশে বলীয়ান করতে বাবা-মায়ের ভূমিকা অধিক গুরুত্বপূর্ণ। শিশুর মানসিকতা ও নৈতিকতা আচার, আচরণ, ধৈর্য, মায়া, মমতা সৃষ্টিশীলতা তথা নানা ধরনের প্রতিভার বিকাশ ঘটাতে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রেখে থাকে তার পরিবার অর্থাৎ শিশুটির বাবা-মা। বাবা মায়ের উচিত তাদের সন্তানের গুণগত কার্যকরি সময় দেয়া। বাবা-মা যখন তার শিশুকে আদর করেন, তখন শিশুর মস্তিষ্কে আনন্দ এবং সুরক্ষাবোধ তৈরি হয়। এটি শুধু শিশুর শারীরিক বিকাশ নয়, মানসিক এবং আবেগিক বিকাশেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এর মাধ্যমে শিশুর মধ্যে আত্মবিশ্বাস এবং অন্যান্য মানুষের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ তৈরি হয়, যা পরবর্তীতে তার সামাজিক জীবনকে আরো সমৃদ্ধ করে।
সুতরাং, ‘শিশুর মানসিকতা ও নৈতিকতা আচার, আচরণ, ধৈর্য, মায়া, মমতা সৃষ্টিশীলতা তথা নানা ধরনের প্রতিভার বিকাশ ঘটাতে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রেখে থাকে তার পরিবার অর্থাৎ শিশুটির বাবা-মা। বাবা মায়ের উচিত তাদের সন্তানের গুণগত কার্যকরি সময় দেয়া।,
শিশুদের মানসিক নির্যাতনের প্রসঙ্গে জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক হেলাল উদ্দিন আহমেদ বলেন- মানসিক নির্যাতন শিশুর নৈতিক উন্নতিতে বাধা দেয়। এতে শিশুর ব্যক্তিত্ব বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয়।



