Logo
Logo
×

বিনোদন

এখনকার ভালোবাসা, সম্মান—সবই যেন মেকি: ডলি জহুর

Icon

অনলাইন ডেস্ক :

প্রকাশ: ১৮ জুলাই ২০২৫, ১০:২৬ এএম

এখনকার ভালোবাসা, সম্মান—সবই যেন মেকি: ডলি জহুর

অভিনেত্রী ডলি জহুরের ৭০তম জন্মদিন আজ। ১৯৫৫ সালে ঢাকায় তাঁর জন্ম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় মঞ্চনাটকে যুক্ত হন তিনি। ক্যারিয়ারে অসংখ্য নাটক ও চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন বর্ষীয়ান এই অভিনেত্রী। দুবার পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। এ ছাড়া ২০২১ সালে তাঁকে আজীবন সম্মাননা বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদান করা হয় তাঁকে। স্মৃতির ঝাঁপি থেকে তিনি ভাগ করেছেন শৈশবের জন্মদিনের গল্প, জানিয়েছেন তাঁর বর্তমান ব্যস্ততা।

ছোটবেলার জন্মদিনের কথা তেমন মনে পড়ে না ডলি জহুরের। জানান, তখন এত দিন ধরে কেউ কিছু মনে রাখতেন না। তবে যতটা মনে পড়ে, বাড়িতে সেদিন অনেক রান্না হতো। পাঁচ বোন আর দুই ভাই মিলে খুব আয়েশ করে খেতেন। ডলি জহুর বলেন, ‘বাড়িতে বড় উঠান ছিল, মা মুরগি পালতেন। মনে পড়ে, সেদিন মা মুরগি জবাই দিতেন, সঙ্গে আরও অনেক পদ রান্না হতো। দুধওয়ালা থেকে এদিন মা বেশি করে দুধ রাখতেন। পায়েস রান্না হতো। ছোটবেলার জন্মদিন বলতে স্মৃতি এতটুকুই।’

৭০তম জন্মদিনের প্রথম প্রহর থেকেই শুভেচ্ছায় ভাসছেন ডলি জহুর। ফোনকল, মেসেজে পরিবার ও সহকর্মীরা শুভেচ্ছা জানিয়েছেন তাঁকে। অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে আপ্লুত হয়ে পড়েন তিনি। ডলি জহুর বলেন, ‘এই যে মানুষের ভালোবাসা ও দোয়া পাচ্ছি, তাতে নিজেকে ভাগ্যবান মনে হয়। সকাল থেকেই ফোন ধরেই আছি, একজনের পর একজন মনে করছেন, কত স্মৃতি মনে পড়ে যাচ্ছে জীবনের।’

ডলি জহুরের একমাত্র ছেলে স্ত্রীসন্তানকে নিয়ে অস্ট্রেলিয়া থাকেন। কয়েক বছর থাকলেও অভিনেত্রীর মন টেকেনি সেখানে। দেশের মানুষের ভালোবাসায় তিনি ফিরে আসেন ঢাকায়, থেকে যান এখানেই। ডলি জহুর বলেন, ‘একবার মনে হয় চলে যাই, আবার দেশের মানুষের কষ্ট যখন দেখি, তখন মনে হয় এদের ছেড়ে আমি কোথায় যাব? ইন্ডাস্ট্রিতেও সবার তেমন কাজ নেই, দেশে থাকলে মনে হয় ওদের পাশে তো আছি। এত দূর থেকে মন আনচান আনচান করে। আর ওখানে গেলে মনে হয় আমি যেন নির্দিষ্ট একটা গণ্ডিতে বন্দী। আর এখানে যেন আমার খোলা আকাশ, পরিচিত মানুষজন, চেনা পরিবেশ।’

তবে দেশের মানুষের মধ্যে আর আগের মতো সে নিখাদ ভালোবাসা খুঁজে পান না ডলি জহুর। তাঁর কাছে যেন আবেগ আর ভালোবাসা মেকি মনে হয় এখন। ডলি জহুর বলেন, ‘এখন আর বিশ্বাস হয় না মানুষ ভালোবাসেমানুষ কেমন জানি নিষ্ঠুর হয়ে গেছে। মায়ামানবিকতা মানুষের মাঝে নেই। মানুষ নিজের পাশের মানুষটাকে আপনজন মনে করতে পারে না, ভালোবাসতে পারে না। যার যার তার তার, পকেট ভারী করায় ব্যস্ত সবাই। শুধু নিজের সুখের চিন্তায় সবাই। এই বয়সে এসে এসব দেখে খুব কষ্ট পাই, এগুলো আর নিতে পারি না। ইন্ডাস্ট্রি হোক, আর চারদিক সব মানুষ, সব জায়গায় এক।’

সাম্প্রতিক সময়ে অন্য বর্ষীয়ান অভিনয়শিল্পীদের মতোই কাজ কমেছে ডলি জহুরের। জানান, একই ধরনের চরিত্রে কাজ করতে করতে বিরক্ত তিনি, তাই ইচ্ছা করেই কাজ কম করছেন এখন। এই অভিনেত্রী বলেন, ‘চলচ্চিত্রে কাজ ছেড়েছি এ কারণেই, একধরনের গল্প, পর্দায় উপস্থিতিও অনেক কম। হয়তো বয়সের কারণে মা চরিত্রে সবাই কাস্ট করতে চান, কিন্তু চরিত্রে কিছু তো থাকতে হবে? আর নাটকে তো এখন একটা কথার খুব চল, ট্রেন্ডি; ঘুরেফিরে এক-দুই মুখই সব জায়গায়। তাই কাজ কম করি, যা সঞ্চয় আছে তা তুলে তুলে খাই।’

নব্বই দশকে ঢাকাই চলচ্চিত্রে মা চরিত্রে ডলি জহুর ছিলেন প্রায় অপ্রতিদ্বন্দ্বী। তাঁর উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রের মধ্যে রয়েছে ‘আগুনের পরশমণি’, ‘শঙ্খনীল কারাগার’, ‘ঘানি’, ‘রং নম্বর’, ‘দারুচিনি দ্বীপ’, ‘সন্তান যখন শত্রু’, ‘বাবা কেন চাকর’। ‘শঙ্খনীল কারাগার’-এর জন্য তিনি প্রথম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন। ‘ঘানি’ চলচ্চিত্রের জন্য দ্বিতীয়বারের মতো জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান তিনি।

  

Swapno

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher

Major(Rtd)Humayan Kabir Ripon

Managing Editor

Email: [email protected]

অনুসরণ করুন