নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতার পোস্টে রাকসুর জিএসকে হত্যার হুমকি
রাবি প্রতিনিধি :
প্রকাশ: ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৭:৩৬ পিএম
ছবি : সংগৃহীত
ওসমান হাদী গুলিবিদ্ধ হওয়ার দিনেই রাকসু'র সাধারণ সম্পাদক (জিএস) সালাহউদ্দিন আম্মারকে হত্যার হুমকি দিয়েছে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের রাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা-হিল-গালিব। শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে করা এক পোস্টে এই হুমকি দেন তিনি। তাঁর পোস্টের সাথে সম্মতি জানিয়েছে রাবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবুও।
আসাদুল্লা-হিল-গালিব লিখেছেন, "দয়া করে আমার ক্যাম্পাসের টাকে কেউ কিছু করবেন না, অনুরোধ রইলো। ওইটা শুধু আমার আর আমার ভাই মোস্তাফিজুর রহমান বাবুর ভাগ।"
সালাহউদ্দিন আম্মারকে উদ্দেশ্য করে তিনি লিখেছেন, "ছোটভাই প্রটেকশন বাড়াও। ৮০সিসি বাইক নিয়ে একা একা ঘুরাঘুরি করো না। আর তোমার আব্বার সাদিক কায়েম হেলিকপ্টারে যাতায়াত করে তুমি অন্তত প্লেনে ঢাকা যাবা তা নাহলে যমুনার আগে ও পরে একটা কিছু হলেও হতে পারে। আমি চাই তুমি বেঁচে থাকো, অনেক হিসাব আছে।"
শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) সকাল ১১টা পর্যন্ত আসাদুল্লা-হিল-গালিবের ওই পোস্টে মন্তব্য করেছেন রাবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবুসহ ছয়জন। মোস্তাফিজুর রহমান বাবু লিখেছেন, "আল্লাহর কাছে দোয়া করো যেন ওকে বেঁচে (বাঁচিয়ে) রাখে।"
নোমান ইসলাম নামে একজন লিখেছেন, "ভাই, আপনার ক্যাম্পাসে আমারে একটা ভাগ দিয়েন- শুধু এটুকুই লাগবে।"
এই হুমকির বিষয়ে প্রতিক্রিয়া হিসেবে রাকসু'র জিএস সালাহউদ্দিন আম্মার বলেন, "পোস্টটি আমি দেখি নাই। তবে আমাকে একজন বলেছে বিষয়টি। আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পেজ থেকে মাঝেমধ্যেই এধরণের পোস্ট করে বলা হয় যে নেক্সট টার্গেট আমি। এগুলো আমার কাছে খুব একটা কনসার্নের বিষয় না। আমার কথা হলো, আল্লাহর দেওয়া জান আল্লাহ নিয়ে যাবে। এজন্য আমি ঘর থেকে বের হবো না, আমার প্রোটোকল বাড়াবো- বিষয়টা এমন না।"
তিনি আরও বলেন, "আমি এধরণের হুমকিতে ন্যূনতম ভীত-সন্ত্রস্ত না। আমি আমার কাজ করে যেতে চাই। এক্ষেত্রে এধরণের কিছু মেন্টাল প্রেসারতো সবসময় নিতেই হয়। আমার পরিণতি আমি নিজে বেছে নিয়েছি। সুতরাং এধরণের হুমকিতে ভীতসন্ত্রস্ত হওয়াটাই আমার জন্য ওয়েস্টেজ অব টাইম। আর গালিবের ব্যাপারটা হলো, ছাত্রলীগ ক্ষমতায় থাকাকালীনইতো তার কোনো পাওয়ার ছিলো না। এরকম একজনের পোস্টকে গুরুত্ব দেওয়া মানেইতো তাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়ে যায়।"
উল্লেখ্য, শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরীফ ওসমান বিন হাদি গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। জুমার নামাজের পর রাজধানীর বিজয়নগরের কালভার্ট রোড এলাকায় দুর্বত্তের ছোড়া গুলিতে গুরুতর আহত হন তিনি। তাৎক্ষণিক তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেকে) নেওয়া হয়। বর্তমানে তিনি একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
দ্য ডিসেন্ট নামে একটি অনুসন্ধানী সংবাদমাধ্যমের দাবি, ওসমান হাদীর ওপর বাইকের পেছন থেকে গুলি করা ব্যক্তিটির চেহারার সাথে ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান নামক এক ব্যক্তির চেহারা মিলে যাচ্ছে। তিনি রাজধানীর আদাবর থানা ছাত্রলীগের নেতা ছিলেন।
ইনকিলাব কালাচারাল সেন্টার থেকে সংগৃহীত ৯ ডিসেম্বরের সিসিটিভি ফুটেজ, পুলিশের সংগৃহীত ১২ ডিসেম্বরের হামলার সিসিটিভি ফুটেজ, বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত এবং ফেসবুক-ইনস্টাগ্রামে ফয়সাল করিম মাসুদ নামক একাউন্ট এবং আওয়ামীলীগপন্থী বিভিন্ন পেইজ ও ব্যক্তির প্রোফাইলে পোস্ট করা ৫০টিও বেশি ছবি বিশ্লেষণ করে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গিয়েছে বলে দাবি সংবাদমাধ্যমটির।



