রাবিতে রঙের কাজ বন্ধ করল ঠিকাদাররা, ভিডিও করায় সাংবাদিককে হেনস্তা
রাবি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১:২৫ এএম
সরাসরি কোম্পানির মাধ্যমে কাজ করানোয় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনটি ভবন ও একটি স্টেডিয়ামে চলমান রঙের কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন নিয়মিত ঠিকাদাররা। রবিবার সকালে প্রশাসন ভবন ১, প্রশাসন ভবন ২, সিনেট ভবন ও স্টেডিয়ামে গিয়ে তারা জোরপূর্বক কাজ থামিয়ে দেন। এ সময় প্রক্টরের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের দৃশ্য ভিডিও করায় চ্যানেল টোয়েন্টিফোর ও দৈনিক সোনার দেশের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি সোহাগ আলীকে হেনস্তা করেন কয়েকজন ঠিকাদার। হেনস্তাকারীদের মধ্যে রানা নামে একজনের পরিচয় পাওয়া গেছে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, সমাবর্তন উপলক্ষ্যে দ্রুত কাজ শেষ করার প্রয়োজনীয়তা ও গুণগতমান নিশ্চিত করার কারণে তিন ভবন ও স্টেডিয়ামের রঙের কাজ বার্জার কোম্পানিকে চুক্তির মাধ্যমে দেওয়া হয়। সাধারণত এসব কাজ বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত ঠিকাদাররাই করেন, কিন্তু এবার সময় সংকট থাকায় বিশেষ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এ সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ ঠিকাদাররা কাজটি তাদের দাবি করে বার্জারের কাজ বন্ধ করে দেন। পরে প্রক্টর অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমানের সঙ্গে আলোচনায় বসা হলে কয়েকজন ঠিকাদার অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন। সেই দৃশ্য ভিডিও করার সময় সাংবাদিক সোহাগ আলীর মোবাইল কেড়ে নেওয়া হয় এবং তাকে আটকে রাখার চেষ্টা করা হয়।
ঘটনার পর রাবি প্রেসক্লাব, রাবি রিপোর্টার্স ইউনিটি ও রাবি সাংবাদিক সমিতি প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়ে জড়িতদের শাস্তির দাবি জানায়।
প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান বলেন, আলোচনার সময় কয়েকজন ঠিকাদারের জুনিয়র কর্মী উত্তেজনা তৈরি করে। তিনি জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে একজনকে জিজ্ঞেস করেছিলেন তার লাইসেন্স আছে কি না এবং নিয়ম মেনে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেন। এরপর আরও কয়েকজন উচ্চস্বরে হৈচৈ করতে থাকে এবং তার অফিসে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। সাংবাদিককে হেনস্তার বিষয়ে তিনি বলেন, মোবাইল কেড়ে নেওয়া হয় ও তাকে অবরুদ্ধ করার চেষ্টা করা হয়। পরে দুইজন সহকারী প্রক্টর তাকে নিরাপদে বের করেন।
ভুক্তভোগী সাংবাদিক সোহাগ আলী জানান, তার ওপর চড়াও হন কয়েকজন ঠিকাদার এবং ফোন কেড়ে নেন। তিনি এই ঘটনাকে স্বাধীন সাংবাদিকতার জন্য হুমকিস্বরূপ উল্লেখ করে জড়িতদের বিচারের দাবি করেন।
আগামীকাল থেকে রঙের কাজ পুনরায় শুরু হবে কিনা জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক ড. আখতার হোসেন মজুমদার বলেন, কাজ আগামীকাল আবার শুরু হবে। সমাবর্তন ১৭ ডিসেম্বর হওয়ায় দ্রুত কাজ শেষ করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, সিন্ডিকেটের অনুমোদন নিয়েই কোম্পানিকে কাজ দেওয়া হয়েছে। টেন্ডারের বাধ্যবাধকতা না থাকায় জরুরি ও গুরুত্বপূর্ণ এই কাজ সরাসরি কোম্পানিকে দেওয়া হয়েছে।



