কর্মবিরতিতে অনড় প্রাথমিকের শিক্ষকরা, অনিশ্চয়তায় বার্ষিক পরীক্ষা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ৩০ নভেম্বর ২০২৫, ১০:৫৩ এএম
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা তিন দফা দাবিতে টানা কর্মবিরতি চালিয়ে যাচ্ছেন। এর ফলে সারা দেশের সাড়ে ৬৫ হাজার বিদ্যালয়ে পাঠদান প্রায় পুরোপুরি থমকে গেছে। আগামী সোমবার (১ ডিসেম্বর) বার্ষিক পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও দাবি পূরণে সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত না এলে পরীক্ষায় অংশ না নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষকরা। এতে দেশের প্রাথমিক শিক্ষাব্যবস্থা গভীর অনিশ্চয়তায় পড়ে গেছে।
শিক্ষক নেতারা জানিয়েছেন, রোববার (৩০ নভেম্বর) রাতের মধ্যে দাবি বাস্তবায়নের বিষয়ে কার্যকর অগ্রগতি না হলে বার্ষিক পরীক্ষা বর্জন ছাড়া তাদের সামনে কোনো বিকল্প থাকবে না। প্রাথমিক শিক্ষক পরিষদের অন্যতম আহ্বায়ক মু. মাহবুবর রহমান বলেন, সারাদেশে আমরা লাগাতার কর্মবিরতি পালন করছি। রোববারের মধ্যে সিদ্ধান্ত না এলে সোমবার থেকে পরীক্ষা বর্জন ছাড়া উপায় নেই।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর (ডিপিই) সূত্র বলছে, দেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৬৫ হাজার ৫৬৯টি, যেখানে কর্মরত তিন লাখ ৮৪ হাজারের বেশি শিক্ষক। প্রধান শিক্ষকরা ইতোমধ্যে বেতন কাঠামোর দশম গ্রেডে উন্নীত হলেও সহকারী শিক্ষকরা এখনও ১৩তম গ্রেডে রয়েছেন। দীর্ঘদিন ধরে তারা গ্রেড উন্নীতকরণ, উচ্চতর গ্রেড সমস্যা সমাধানসহ বিভিন্ন দাবি জানিয়ে আসছেন।
এর আগে ৮–১২ নভেম্বর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি পালনকালে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে দেড় শতাধিক শিক্ষক আহত হন। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের আশ্বাসে আন্দোলন সাময়িক স্থগিত করলেও প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে অগ্রগতি না থাকায় শিক্ষকরা আবার কর্মবিরতিতে ফেরেন।
কর্মবিরতি প্রত্যাহারের অনুরোধে গত ২৭ নভেম্বর আন্দোলনরত নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন ডিপিইর মহাপরিচালক আবু নূর মো. শামসুজ্জামান। তিনি বার্ষিক পরীক্ষা বর্জন না করার আহ্বান জানান। তবে শিক্ষক নেতারা জানিয়েছেন, দাবি পূরণের নিশ্চয়তা না পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবেই।
সহকারী শিক্ষকদের তিন দফা দাবি— বেতন স্কেল দশম গ্রেডে উন্নীতকরণ, ১০ ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড সমস্যার সমাধান, শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতি দিতে হবে৷



