রাবি শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় সন্দেহজনক তালিকায় ৪
রাবি প্রতিনিধি :
প্রকাশ: ২০ নভেম্বর ২০২৫, ০৭:২০ পিএম
ছবি : সংগৃহীত
মুখোশ পড়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় সন্দেহের তালিকায় চার জনের নাম রয়েছে বলে জানিয়েছে মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল মালেক।
এর মধ্যে দুইজন স্থানীয় জামায়ত-শিবিরের রাজনীতির সাথে জড়িত রয়েছে বলে জানান তিনি।
ওসি আব্দুল মালেক বলেন, ‘আমরা কাল রাতেই শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কিছু নাম পেয়েছি। তাদেরই সন্দেহের তালিকায় রেখে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছি। সন্দেহের তালিকায় থাকা চারজন হলো- জনি, সোহাগ, সাকিব এবং আকাশ। এদের মধ্যে জনি ও সাকিব স্থানীয় জামায়ত-শিবিরের রাজনীতির সাথে জড়িত। তবে এই সকল বিষয়ে স্পষ্ট ধারণার জন্য আমাদের তদন্ত চলমান রয়েছে।’
এর আগে গতকাল রাত ১১টার দিকে কাজলা ক্যান্টিনে কয়েকজন শিক্ষার্থী রাতের খাবার খাচ্ছিলেন। এ সময় ১০–১৫টি মোটরসাইকেলে মুখোশধারী ও হেলমেটপরিহিত একদল লোক রেস্টুরেন্টে ঢুকে কয়েকজনের ছবি দেখিয়ে একজনকে খুঁজতে থাকে। পরে হঠাৎ তারা এলোপাতাড়ি হামলা শুরু করে। তাদের হাতে হাতুড়ি, লোহার রড, রামদাসহ বিভিন্ন অস্ত্র ছিল। এ সময় দুই শিক্ষার্থীকে মারতে মারতে তুলে নিয়ে যায় তারা।
অপহৃত দুই শিক্ষার্থী হলো- ফিন্যান্স বিভাগের ২০২১-২১ শিক্ষাবর্ষের আল ফারাবী, ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের তাহমিদ আহমেদ বখশী। হোটেলে খাবার নিতে গিয়ে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আহত হন নাট্যকলা বিভাগের ২০২৩-২৪ বর্ষের শিক্ষার্থী মিনহাজ। এর মধ্যে আল ফারাবী নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয়ের মাদার বখশ হল শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা ছিলেন। পরবর্তীতে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় ১৫ জুলাই তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘোষণা দিয়ে ছাত্রলীগ থেকে পদত্যাগ করেন।
পরে রাত ১২টার দিকে বিনোদপুর এলাকার বেতার মাঠের পাশে ফারাবীকে এবং হবিবুর রহমান হলের সামনে থেকে বখশীকে উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় আজ বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) বেলা ১১ টা থেকে তিন দফা দাবিতে কাজলা গেইট সংলগ্ন ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন ফিন্যান্স বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
তাদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে হামলার ঘটনায় জড়িত অপরাধীদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার করতে হবে, ঘটনাস্থলের পাশেই থাকা কাজলা পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যদের নিষ্ক্রিয়তার জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে এবং সিসিটিভি ফুটেজ মুছে ফেলার অভিযোগে কাজলা ক্যান্টিন বন্ধ করে দিতে হবে।
তাঁরা সেখানে প্রায় সাড়ে তিন ঘন্টা অবস্থান করার পর প্রশাসনের আশ্বাসে ৯ ঘন্টার আল্টিমেটাম দিয়ে অবরোধ কর্মসূচি সাময়িক স্থগিত করেন তারা।
এবিষয়ে আন্দোলনরত দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী হৃদয় বিশ্বাস বলেন, ‘প্রশাসন আমাদের আশ্বাস দিয়েছে তারা আমাদের দাবি দ্রুত বাস্তবায়ন করবে। তাদের আশ্বাসে আমরা আগামী ৯ ঘন্টার জন্য কর্মসূচি স্থগিত করেছি।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান বলেন ‘আমরা শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলেছি। তারা যে দাবিগুলো জানিয়েছে সেবিষয়ে পুলিশের সাথে কথা বলে কি করা যায় সেবিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এদিকে পুলিশ তদন্ত করে জড়িতদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনবে আর যে ক্যান্টিনে ঘটনা ঘটেছে তা দোষীদের গ্রেফতারের আগ পর্যন্ত বন্ধ থাকবে।'



