দুর্বৃত্তদের হামলায় আহত রাবির তিন শিক্ষার্থী
রাবি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২০ নভেম্বর ২০২৫, ১০:০৮ এএম
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) মুখোশ ও হেলমেট পরিহিত দুর্বৃত্তদের সশস্ত্র হামলায় তিনজন গুরুতরসহ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। বুধবার (১৯ নভেম্বর) রাত সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজলা গেটসংলগ্ন কাজলা ক্যান্টিনে খাবার খাওয়ার সময় এ হামলার ঘটনা ঘটে।
গুরুতর আহত শিক্ষার্থীরা হলেন— ফিন্যান্স বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আল ফারাবী, ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের তাহমিদ আহমেদ বখশী এবং নাট্যকলা বিভাগের একই বর্ষের শিক্ষার্থী মিনহাজ। আহত বখশী বর্তমানে রাবি মেডিকেল সেন্টারে, আর ফারাবী ও মিনহাজ রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগীদের বরাতে জানা যায়, রাত ১১টার দিকে ফারাবীসহ কয়েকজন কাজলা ক্যান্টিনে রাতের খাবার খাচ্ছিলেন। এ সময় ১০–১৫টি মোটরসাইকেলে আসা মুখোশধারী একটি দল ক্যান্টিনে ঢুকে শিক্ষার্থীদের মাঝে ছবি দেখিয়ে একজনের খোঁজ করতে থাকে। কিছুক্ষণ পরই তারা এলোপাতাড়ি হামলা শুরু করে। হামলাকারীদের হাতে হাতুড়ি, রড, রামদাসহ বিভিন্ন ধারালো ও ভোঁতা অস্ত্র ছিল। একপর্যায়ে তারা মারধর করে ফারাবী ও বখশীকে ক্যান্টিন থেকে তুলে নিয়ে যায়।
পরে রাত পৌনে ১২টার দিকে ফারাবীকে বিনোদপুরের বেতার মাঠসংলগ্ন এলাকা থেকে এবং বখশীকে হবিবুর রহমান হলের সামনে থেকে উদ্ধার করা হয়। আহত বখশী জানান, হামলাকারীরা তাকে রিকশায় তুলে সুইটের মোড়ে নিয়ে গিয়ে অন্ধকার স্থানে বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে। তাদের কথোপকথনে ‘আসলটাকে পেয়েছি’ বলে একটি নির্দেশনা শুনতে পান তিনি। মুখ বাঁধা থাকার কারণে কাউকে শনাক্ত করতে পারেননি বলে জানান।
এদিকে আল ফারাবী রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় মাদার বখশ হল শাখা ছাত্রলীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা ছিলেন। তবে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় ১৫ জুলাই তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দিয়ে ছাত্রলীগ থেকে পদত্যাগ করেন।
আহত মিনহাজ রহমান জানান, তিনি শুধু খাবার নিতে ক্যান্টিনে গিয়েছিলেন। সেখানে একজনকে মারধর করতে দেখে বাধা দিতে গেলে হামলাকারীরা তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে।
ঘটনার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান বলেন, মুখোশ ও হেলমেট পরিহিত একদল ব্যক্তি আমাদের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়েছে। দুইজনকে তুলে নিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশের ভূমিকা হতাশাজনক ছিল। পরে দুজনকেই উদ্ধার করা হয়েছে এবং তারা চিকিৎসাধীন।
মতিহার থানার ওসি আব্দুল মালেক বলেন, ঘটনাটি তদন্তে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে। তদন্ত সম্পন্ন হলে বিস্তারিত জানানো হবে।
এ ঘটনার প্রতিবাদে দোষীদের গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবিতে শিক্ষার্থীরা কাজলা গেটে ঢাকা–রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করছেন।



