বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থায় একটি অদ্ভুত সিদ্ধান্ত আবারও প্রমাণ করে দিল—এই দেশের নীতিনির্ধারকরা কখনোই শিক্ষার্থীদের মানসিক চাপ, শারীরিক ক্লান্তি বা ভবিষ্যতের চিন্তাকে যথাযথ গুরুত্ব দেন না। ২২ ও ২৪ জুলাইয়ের স্থগিত এইচএসসি পরীক্ষাগুলো এখন একদিনেই—একই তারিখে, একদিনে সকাল-বিকেল নেওয়া হবে!
প্রশ্ন ওঠে, শিক্ষার্থীরা কি মেশিন? নাকি তারা এমন কোনো পরীক্ষার যন্ত্র যাদের বারবার চালিয়ে গেলেই চলবে? একজন এইচএসসি পরীক্ষার্থী যে মানসিক চাপ ও উদ্বেগের মধ্যে দিন কাটায়, তা কি আমাদের শিক্ষা উপদেষ্টা বোঝেন?
সকালে একটি পরীক্ষা দিয়ে, বিশ্রাম না নিয়েই বিকেলে আরেকটি পরীক্ষায় বসা—এটা নিছকই অমানবিক সিদ্ধান্ত। শুধু শারীরিক ক্লান্তি নয়, এতে প্রশ্নপত্র মুখস্থ করে পরীক্ষায় সফল হওয়ার মনোবৃত্তিই উৎসাহিত হচ্ছে। চিন্তাশীল, বিশ্লেষণধর্মী, মননশীল শিক্ষার্থীরা এই রুটিনে সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।
এই সিদ্ধান্তের ফলে যেসব শিক্ষার্থীরা মানসিকভাবে দুর্বল, যাদের দীর্ঘ সময় লেখালেখি করা সম্ভব নয়, যাদের পরীক্ষাকেন্দ্র বাড়ি থেকে দূরে—তারা কী করবে? আমরা কি শুধু পাশ করানোই চাই? নাকি প্রকৃত অর্থে যোগ্য প্রজন্ম গড়ে তোলাই আমাদের লক্ষ্য?
এটি কোনো সমাধান নয়, এটি শিক্ষার্থীদের প্রতি এক ধরনের নিষ্ঠুরতা। আমরা, শিক্ষার্থীরা, এই সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। শিক্ষা শুধু পাঠ্যবই নয়—শিক্ষা মানে হলো সহানুভূতি, মানবিকতা, সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত।
আমরা চাই, শিক্ষা মন্ত্রণালয় এই অবিবেচক সিদ্ধান্ত বাতিল করে মানবিকতা ও যৌক্তিকতার ভিত্তিতে নতুন সময়সূচি ঘোষণা করুক। পরীক্ষার চাপ এমনভাবে হোক যেন তা মেধার পরীক্ষা হয়, যন্ত্রণা বা বেঁচে থাকার লড়াই নয়।



