Logo
Logo
×

অর্থনীতি

পাঁচ ইসলামী ব্যাংকের শেয়ার ‘শূন্য’ ঘোষণায় ৬ হাজার কোটি টাকার সম্পদ উধাও

Icon

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৯ নভেম্বর ২০২৫, ০১:১০ পিএম

পাঁচ ইসলামী ব্যাংকের শেয়ার ‘শূন্য’ ঘোষণায় ৬ হাজার কোটি টাকার সম্পদ উধাও

বাংলাদেশ ব্যাংকের সিদ্ধান্তে পাঁচ ইসলামী ধারার দুর্বল ব্যাংকের শেয়ার সম্প্রতি ‘শূন্য’ ঘোষণা করা হয়েছে—ফলে এক ঝটকায় ৬ হাজার কোটি টাকার সম্পদ বাজার থেকে মুছে গেছে। ১০ টাকা ফেসভ্যালুর ৫৮১ কোটি ৯৫ লাখ ৭১ হাজার শেয়ারের বাজারমূল্য ছিল ৫,৮১৯ কোটি টাকারও বেশি। এর মধ্যে প্রায় ৩৭ শতাংশ ক্ষতি হয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের, যাদের ২১৯ কোটি শেয়ারের বিনিয়োগমূল্য ২,২০০ কোটি টাকা মুহূর্তেই পোর্টফোলিও থেকে উধাও হয়ে গেছে।

প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের ২২৪ কোটি শেয়ারের বাজারমূল্য ছিল ২,২০৩ কোটি টাকা, উদ্যোক্তা-পরিচালকদের হাতে থাকা ১৪৩ কোটি শেয়ারের মূল্য ১,৩৯০ কোটি টাকা এবং বিদেশি বিনিয়োগকারীদের শেয়ারের মূল্য ছিল প্রায় ২৪ কোটি টাকা। এই বিশাল বিনিয়োগ এখন সম্পূর্ণ আর্থিক মূল্যহীন।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ সিদ্ধান্ত শুধু বিনিয়োগকারীদের ব্যক্তিগত ক্ষতি নয়; এটি শেয়ারবাজারে আস্থার ওপর বড় ধাক্কা। বাজার স্থবির হয়ে পড়বে, আর্থিক স্থিতিশীলতা নড়বড়ে হবে এবং অর্থনীতিতে দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব পড়বে।

বাংলাদেশ ব্যাংক ইতোমধ্যে পাঁচ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ বিলুপ্ত করে প্রশাসক নিয়োগ দিয়েছে। এই ব্যাংকগুলো হলো—ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক (এসআইবিএল), এক্সিম ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক ও ইউনিয়ন ব্যাংক।

অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, যারা ব্যাংক লুট করেছে, তাদের দায়ভার এখন সাধারণ বিনিয়োগকারীর ওপর চাপানো হচ্ছে। এটি আর্থিক অন্যায়ের প্রকৃষ্ট উদাহরণ।

বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, শেয়ারহোল্ডারদের কোনো ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে না। গভর্নরের ভাষ্য অনুযায়ী, এই ব্যাংকগুলোর ইকুইটির মূল্য নেতিবাচক ৩০০–৪০০ শতাংশ, তাই শেয়ারগুলো ‘শূন্য’ ধরে নেওয়া হয়েছে।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে সরকার চাইলে ক্ষতিগ্রস্ত সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য বিশেষ তহবিল বা সহায়তার উদ্যোগ নিতে পারে, নইলে আস্থার সংকট আরও গভীর হবে।

পাঁচ ব্যাংকের সম্মিলিত মূলধন ঘাটতি ও খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৮৬ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে ১ লাখ ৩৬ হাজার কোটি টাকা লুট হয়েছে বড় শিল্পগোষ্ঠীর হাতে। ব্যাংকগুলোর গড় খেলাপি ঋণ ৭৭ শতাংশ, যার মধ্যে ইউনিয়ন ব্যাংকের খেলাপি ঋণ সর্বোচ্চ ৯৮ শতাংশ।

অর্থনীতিবিদদের মতে, এই সিদ্ধান্ত কেবল একদিনের আর্থিক বিপর্যয় নয়—এটি বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতে দীর্ঘদিনের অনিয়ম, স্বজনপ্রীতি ও রাজনৈতিক প্রভাবের ফল, যার ভার এখন বহন করছে সাধারণ বিনিয়োগকারী সমাজ।

Swapno

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher

Major(Rtd)Humayan Kabir Ripon

Managing Editor

Email: [email protected]

অনুসরণ করুন