পেঁয়াজ-আলু থেকে ডিম পর্যন্ত সবকিছুর দাম চড়া
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৭ অক্টোবর ২০২৫, ১১:৪৪ এএম
নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজারে আবারও দামের ঊর্ধ্বগতি দেখা দিয়েছে। সপ্তাহের ব্যবধানে পেঁয়াজ, আলু, আদা, রসুন, শাকসবজি, চাল ও ডিম-সবকিছুর দাম বেড়েছে। রাজধানীর মোহাম্মদপুরের টাউন হল বাজারে বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) ঘুরে দেখা যায়, প্রায় সব পণ্যই আগের তুলনায় বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাধারণ ক্রেতারা।
খুচরা বিক্রেতা মো. রফিক বলেন, পেঁয়াজের বাজার আরও চড়া হয়েছে। সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ১০–২০ টাকা বেড়ে এখন ৮০ থেকে ৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আলুর দামও বেড়ে কেজিপ্রতি ২৫ টাকা হয়েছে। আদা, রসুনের দামও বেড়েছে। অন্য বিক্রেতারাও একই তথ্য জানান।
গত সপ্তাহে ৭০-৮০ টাকায় বিক্রি হওয়া পেঁয়াজ এখন বিক্রি হচ্ছে ৮০–৯০ টাকায়। পাবনা ও রাজশাহীর পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকায়, আর ফরিদপুরের পেঁয়াজ ৭০ টাকার কমে মিলছে না। নিউ মার্কেটের বিক্রেতা ইউসুফ বলেন, বেশি দামে কিনছি, কম দামে বিক্রি করা সম্ভব না।
আদার দাম কেজিতে ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, যা আগের সপ্তাহে ছিল ১৬০–১৮০ টাকা। রসুনের দামও বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫০ থেকে ১৮০ টাকায়।
দুর্গাপূজার ছুটিতে বন্দর বন্ধ থাকায় কাঁচা মরিচের দাম একসময় ৩০০ টাকায় উঠেছিল, বর্তমানে তা কিছুটা কমে ১৪০-১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে শিম, বেগুনসহ অন্যান্য সবজি চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে।
টাউন হল ও সেগুনবাগিচা বাজারে দেখা যায়-তালবেগুন ২০০–২২০ টাকা, সবুজ বেগুন ১৪০–১৬০ টাকা, লম্বা বেগুন ৮০-১২০ টাকা, শিম ২০০–২২০ টাকা কেজি। সবজি বিক্রেতা সোহেল রানা বলেন, সবজির দাম বেশি। সরকারের গোয়েন্দারা কী করে? ক্ষুব্ধ ক্রেতা সোহেলী বেগম বলেন, কোন জিনিসের দাম কম বলুন দেখি? সরকার কী করে?
বাজারে বাঁধাকপি ও ফুলকপি ৮০ টাকা পিস, পটোল, ধুন্দুল, ঢ্যাঁড়স ৭০–৮০ টাকা, করলা ও বরবটি ৮০–১০০ টাকা, গাজর ৮০–১২০ টাকা, টমেটো ১২০–১৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
চালের দামেও স্বস্তি নেই
দেশের বিভিন্ন স্থলবন্দর দিয়ে চাল আমদানি হলেও দাম কমেনি। মিনিকেট চাল কেজিপ্রতি ৭৫–৮৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মজুমদার, ডায়মন্ড, হরিণ, মোজাম্মেল ব্র্যান্ডের মিনিকেটের দাম সর্বোচ্চ ৮৫ টাকা। নাজিরশাইল ৯৪ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আটাশ চাল ৫৮–৬৫ টাকা, মোটা চাল ৫২–৫৫ টাকা কেজি।
ডাল, চিনি ও আটাও চড়া দামে
মসুর ডাল ১২০–১৬০ টাকা, চিনি ১০৫–১১০ টাকা, দুই কেজির আটার প্যাকেট ১২০ টাকা এবং ছোলা ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মাছের বাজারেও আগুন
ইলিশ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় বাজারে ইলিশের দেখা নেই। অন্য মাছের দামও বেশি। কাচকি মাছ ৫০০–৬০০ টাকা, ট্যাংরা, চিংড়ি ও বাতাসি ৮০০–১২০০ টাকা, রুই ও কাতলা ৩৫০–৫৫০ টাকা, পাবদা ৪৫০–৬০০ টাকা, পাঙাশ ও তেলাপিয়া ২২০–২৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
ডিমের ডজন ১৪৫ টাকায়
সবজি ও মাছ-মাংসের দাম বেশি থাকায় প্রোটিনের বিকল্প হিসেবে ডিমের চাহিদা বেড়েছে, সঙ্গে বেড়েছে দামও। গত সপ্তাহে ডজনপ্রতি ১৩০–১৩৫ টাকা থাকলেও এখন লাল ডিম ১৪০–১৪৫ টাকা এবং সাদা ডিম ১৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্যাকেট করা ডিমের ডজনপ্রতি দাম ২০০ টাকা।
এদিকে, সোনালি মুরগি কেজি ২৯০–৩০০ টাকা, ব্রয়লার ১৭০–১৯০ টাকা এবং দেশি মুরগি ৫৭০–৬০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।



