Logo
Logo
×

অর্থনীতি

ইসলামী ব্যাংকে কঠিন শুদ্ধি অভিযান

Icon

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশ: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:১৪ পিএম

ইসলামী ব্যাংকে কঠিন শুদ্ধি অভিযান

ছবি-সংগৃহীত

চাকরিবিধি ও শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে ব্যাংকটির ২০০ কর্মীকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। একইসঙ্গে ৪৯৭১ কর্মকর্তাকে ওএসডি (অন সার্ভিস ডিউটি) করা হয়েছে। তারা বেতন-ভাতা ঠিকই পাবেন, তবে কোনও দায়িত্বে থাকবেন না। বেসরকারি খাতের বৃহৎ প্রতিষ্ঠান ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডে শুদ্ধি অভিযানের অংশ হিসেবে এটি করা হয়

ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ ব্যাংক ও আদালতের নির্দেশনায় গত শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বিশেষ যোগ্যতা যাচাই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষার জন্য মোট ৫ হাজার ৩৮৫ জন কর্মকর্তাকে আহ্বান জানানো হলেও মাত্র ৪১৪ জন এতে অংশ নেন। তারা নিয়মিত দায়িত্ব পালন করছেন। তবে পরীক্ষায় অংশ না নেওয়া ৪ হাজার ৯৭১ জনকে পরদিন থেকেই ওএসডি করা হয়। আর যারা প্রকাশ্যে পরীক্ষার বিরোধিতা বা বিভ্রান্তি ছড়িয়েছেন, তাদের মধ্যে ২০০ জনকে সরাসরি চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।

ব্যাংক সূত্র বলছে, চট্টগ্রামের প্রভাবশালী ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান এস আলম গ্রুপ ২০১৭ সালে ইসলামী ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর হাজারো কর্মীকে কোনও লিখিত পরীক্ষা ছাড়াই নিয়োগ দেওয়া হয়। এসব নিয়োগের বড় অংশই হয়েছিল চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলায় বসবাসরতদের মধ্য থেকে। এক সিনিয়র কর্মকর্তা অভিযোগ করে বলেন, “এস আলমের আমলে অযোগ্য লোক নিয়োগ দিয়ে ব্যাংকটিকে ধ্বংস করা হয়েছে। এখন ব্যাংকের স্বার্থেই সবাইকে যোগ্যতা যাচাই পরীক্ষার আওতায় আনা হচ্ছে।”

অপরদিকে, ওএসডি হওয়া কর্মকর্তাদের দাবি, এক মাস আগে তাদের রিট আবেদনের ভিত্তিতে হাইকোর্ট নিয়মিত প্রমোশনাল পরীক্ষা চালানোর নির্দেশ দিয়েছিল। ব্যাংক সেই আদেশ অমান্য করে নতুন পরীক্ষা নিয়েছে, যা বেআইনি। তারা আবারও আদালতের শরাণাপন্ন হবেন বলে জানিয়েছেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান বলেন, “ছাঁটাইয়ের উদ্দেশ্যে পরীক্ষা নেওয়ার ঘটনা দেশে এই প্রথম। সাধারণত পদোন্নতির জন্য ভাইভা হয়। তবে কর্মীদের মান যাচাই পরীক্ষার বিষয়টি নতুন অভিজ্ঞতা।” তিনি আরও বলেন, ‘‘ইসলামী ব্যাংক একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। তাই কর্মী নিয়োগ বা যোগ্যতা যাচাই তাদের এখতিয়ারভুক্ত, তবে আইন ও নীতিমালার মধ্যে থেকেই তা করতে হবে।’’

প্রসঙ্গত, এস আলম গ্রুপ নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর বিভিন্ন কৌশলে প্রায় ১ লাখ ৩১ হাজার কোটি টাকা ইসলামী ব্যাংক থেকে তুলে নেয়। এতে ব্যাংকটি গভীর সংকটে পড়ে। গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বাংলাদেশ ব্যাংক এস আলমের প্রভাবমুক্ত করে ব্যাংকটিতে নতুন পর্ষদ নিয়োগ দেয়। এরপর থেকেই অযোগ্য নিয়োগ পাওয়া কর্মীদের বাছাই করতে যোগ্যতা যাচাই পরীক্ষার উদ্যোগ নেওয়া হয়।

খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, ইসলামী ব্যাংকের ভবিষ্যৎ এখন পুরোপুরি নির্ভর করছে আদালত, বাংলাদেশ ব্যাংক ও ব্যাংক কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের ওপর। এই প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকলে হাজার হাজার কর্মীর ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তার মুখে পড়বে। তবে আদালত যদি কর্মীদের দাবিকে গুরুত্ব দেন , তবে ব্যাংককে বিকল্প সমাধান খুঁজতে হতে পারে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই উদ্যোগ ইসলামী ব্যাংকের ভেতরে বড় ধরনের পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। একইসঙ্গে দেশের ব্যাংকিং খাতে এটি নতুন এক নজির, যেখানে সরাসরি পরীক্ষা নিয়ে কর্মীদের দক্ষতা যাচাইয়ের ভিত্তিতে চাকরি বহাল রাখার সিদ্ধান্ত হচ্ছে।

Swapno

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher

Major(Rtd)Humayan Kabir Ripon

Managing Editor

Email: [email protected]

অনুসরণ করুন