ইসলামী ব্যাংকে ২০১৭ সালের পর নিয়োগপ্রাপ্তদের চাকরিচ্যুত করতে পরীক্ষা!
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৯:৪৬ এএম
ইসলামী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ২০১৭ সালের পর নিয়োগপ্রাপ্তদের চাকরিচ্যুতির ফন্দি আঁটছে বলে অভিযোগ করেছেন ব্যাংকের একাধিক কর্মকর্তা। বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তারা এ অভিযোগ তোলেন।
লিখিত বক্তব্যে ব্যাংক কর্মকর্তা মোহাম্মদ সবুজ বলেন, সম্প্রতি ইসলামী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারীর জন্য ‘স্পেশাল কম্পিটেন্সি অ্যাসেসমেন্ট টেস্ট’-এর উদ্যোগ নিয়েছে। এই পরীক্ষায় কেবল ২০১৭ সালের পর নিয়োগপ্রাপ্ত সিনিয়র অফিসার, অফিসার, অফিসার (ক্যাশ), জুনিয়র অফিসার, জুনিয়র অফিসার (ক্যাশ), অ্যাসিস্ট্যান্ট অফিসার এবং অ্যাসিস্ট্যান্ট অফিসার (ক্যাশ) পদে কর্মরতদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। অথচ এসব পদে বর্তমানে আট হাজারেরও বেশি কর্মকর্তা রয়েছেন।
তিনি অভিযোগ করেন, হাইকোর্টের নির্দেশনা উপেক্ষা করে আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর শনিবার পরীক্ষাটি নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে। পরীক্ষায় অংশগ্রহণ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে এবং বলা হয়েছে, এটি চাকরিতে বহাল থাকা ও পদোন্নতির শর্ত। কিন্তু প্রকৃত উদ্দেশ্য হলো বৈষম্যমূলকভাবে স্থায়ী কর্মীদের একাংশকে চাকরিচ্যুত করা।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, যাদের বাদ দেওয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে, তারা তিন থেকে দশ বছরের অভিজ্ঞ কর্মী এবং ইতোমধ্যে ইসলামী ব্যাংক রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং অ্যাকাডেমি ও ইনস্টিটিউট অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। অধিকাংশ কর্মকর্তা জেএআইবিবি, এআইবিবি বা ইসলামী ব্যাংকিং ডিপ্লোমা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ, যেখানে সংশ্লিষ্ট সব সিলেবাস অন্তর্ভুক্ত। অনেকেই প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার মাধ্যমে বৈধভাবে প্রবেশনারি অফিসার হিসেবে যোগ দিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও অভিযোগ করা হয়, গত বছরের ৫ আগস্টের পর কোনো লিখিত পরীক্ষা ছাড়াই কিছু গুদাম প্রহরী ও নিরাপত্তা কর্মীকে জুনিয়র অফিসার ও সহকারী কর্মকর্তা পদে পদোন্নতি দেওয়া হলেও যোগ্য প্রার্থীদের পদোন্নতি দেওয়া হয়নি। এ ছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে কোনো কারণ ছাড়াই কয়েকজন পিয়নকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।
অভিযুক্ত কর্মকর্তারা দাবি জানান—
প্রচলিত আইন, নীতি ও ব্যাংকিং বিধিবিধানের বাইরে কোনো পরীক্ষা গ্রহণ করা যাবে না।
চাকরিচ্যুতির উদ্দেশ্যে নেওয়া যেকোনো মূল্যায়ন অবিলম্বে স্থগিত করতে হবে।
প্রতিটি পদে পৃথক সিলেবাস অনুসারে দ্রুত পদোন্নতি পরীক্ষা আয়োজন করতে হবে।
যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে তাদের ন্যায্য আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিতে হবে।
দক্ষতা উন্নয়নের জন্য কর্মশালা ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রামের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী অ্যাডভোকেট আবদুস সাত্তার, অ্যাডভোকেট মো. হাসান আলী, অ্যাডভোকেট কে এম সাইফুল ইসলাম এবং অ্যাডভোকেট মুশফিকুল আবরার।



