চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কন্টেইনার নিয়ে অভিন্ন সুর
চট্টগ্রাম প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৩ মে ২০২৫, ১২:০০ এএম
চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কন্টেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) বিদেশি অপারেটরের হাতে তুলে দেওয়ার উদ্যোগে দেশজুড়ে বিরোধিতা শুরু হয়েছে। বিএনপি, জামায়াত, বাম গণতান্ত্রিক জোট, ১২ দলীয় জোট থেকে শুরু করে বন্দরের শ্রমিক সংগঠনগুলো—প্রায় সবাই এক সুরে বলছে, এনসিটি বিদেশিদের হাতে দেওয়া যাবে না। এমনকি সদ্য নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও একই অবস্থান নিয়েছেন।
রাজনৈতিকভাবে বিভক্ত শক্তিগুলো এক ইস্যুতে এক কাতারে দাঁড়ানোয় নানা প্রশ্ন উঠছে। এর মধ্যেই নৌ-পরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন সম্প্রতি এক রুদ্ধদ্বার বৈঠকে রীতিমতো ‘বোমা’ ফাটান। তিনি দাবি করেন, সাইফ পাওয়ারটেকের এমডি তরফদার রুহুল আমিনসহ কয়েকজন রাজনৈতিক ও শ্রমিক নেতা হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে বন্দরে অস্থিরতা সৃষ্টির পরিকল্পনা করেছেন। কথোপকথনে বিদেশি অপারেটর এলে চাকরি হারানোর ভয়ে শ্রমিকদের উসকে দিয়ে বন্দর অচল করার প্রস্তাব করা হয়।
উপদেষ্টা অভিযোগ করেন, তরফদার রুহুল আমিন এনসিটির কর্তৃত্ব ধরে রাখতে তার ওপর চাপ সৃষ্টি করেছেন। তবে তরফদার এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, কথোপকথন সাজানো হতে পারে তাকে বিপদে ফেলতে।
২০০৮ সালে এনসিটিতে বিদেশি অপারেটর নিয়োগের দরপত্র প্রক্রিয়া শুরু হলেও ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর তা বাতিল হয়ে যায়। এরপর থেকে ১৭ বছর ধরে সাইফ পাওয়ারটেক বিভিন্ন পদ্ধতিতে একচেটিয়াভাবে টার্মিনাল পরিচালনা করছে। তাদের সর্বশেষ চুক্তির মেয়াদ শেষ হবে আগামী ৭ জুলাই।
বিদেশি অপারেটর নিয়োগের উদ্যোগ আবার সামনে আসার পর থেকেই নানা রাজনৈতিক দল ও শ্রমিক সংগঠন আন্দোলনে নেমেছে। জামায়াত, বিএনপি ও বিভিন্ন জোটের নেতারা বলছেন, বিদেশি প্রতিষ্ঠান এলে জাতীয় নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পড়বে এবং হাজারো শ্রমিক চাকরি হারাবে।
অন্যদিকে বন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বিদেশি অপারেটর এলেও নিবন্ধিত শ্রমিকদের দিয়েই কাজ চালাতে হবে, ফলে চাকরি হারানোর আশঙ্কা বাস্তবসম্মত নয়। এ বিষয়ে কীভাবে দেশের স্বার্থ রক্ষা করা হবে তা নির্ধারণে বিশ্বব্যাংকের প্রতিষ্ঠান আইএফসিকে পরামর্শক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।



