মাসিক কিস্তিতে জমা সহজ, তাই ডিপিএসই সঞ্চয়ের প্রথম পছন্দ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২:০০ এএম
ফিক্সড ডিপোজিট রিসিপ্ট (এফডিআর)-এর তুলনায় ডিপোজিট পেনশন স্কিম (ডিপিএস)-এ সুদের হার কম হলেও মাসিক কিস্তিতে অর্থ জমা দেওয়ার সুবিধার কারণে সাধারণ মানুষের কাছে ডিপিএসই বেশি জনপ্রিয়। এককালীন বড় অঙ্কের টাকা জমা রাখার শর্ত থাকায় এফডিআর অনেকের নাগালের বাইরে থেকে যায়।
নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির (এনএসইউ) স্কুল অব বিজনেস অ্যান্ড ইকোনমিক্স ২০২৪ সালে পরিচালিত এক জরিপে দেখা যায়, ৫৩ শতাংশ মানুষ সঞ্চয়ের জন্য ডিপিএস বেছে নিয়েছেন। দ্বিতীয় স্থানে আছে সম্পত্তি কেনা (৩৯.৮ শতাংশ), তৃতীয় স্থানে বন্ড (৩১.৯৬ শতাংশ) এবং চতুর্থ স্থানে এফডিআর (৩১.৮১ শতাংশ)। পুঁজিবাজার (৭.৭৬ শতাংশ) ও স্টার্টআপে (২.৯৫ শতাংশ) বিনিয়োগ জনপ্রিয়তায় যথাক্রমে ষষ্ঠ ও সপ্তম স্থানে রয়েছে।
গবেষক কাজী তাফসিরুল ইসলামের মতে, ডিপিএস শুধু সহজে ভাঙানো যায় বলেই নয়, বরং তুলনামূলক বেশি সুদ দেওয়ার কারণে এটি আরও আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে। তিনি বলেন, ডিপিএস থেকে আয় তুলনামূলক বেশি, পাশাপাশি জরিমানা ছাড়াই স্কিম বন্ধ করা যায়—এগুলোই এর প্রধান শক্তি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের ডিসেম্বর শেষে দেশে ৬১টি ব্যাংক এফডিআরে বিভিন্ন মেয়াদে ৩ থেকে সর্বোচ্চ ১৩ শতাংশ পর্যন্ত সুদ দিচ্ছে। রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংকগুলোয় এ হার সর্বোচ্চ সাড়ে ১০ শতাংশ পর্যন্ত সীমিত। অন্যদিকে সাধারণ ডিপোজিটে সুদের হার ৩ থেকে সাড়ে ৪ শতাংশ।
মূল্যস্ফীতি ও বৈশ্বিক অনিশ্চয়তার কারণে সাম্প্রতিক সময়ে মানুষ ভোগ কমিয়ে সঞ্চয়ের দিকে ঝুঁকছেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, চলতি বছরের জানুয়ারিতে ব্যাংক আমানতের প্রবৃদ্ধি ৮ শতাংশ ছাড়িয়েছে। ফেব্রুয়ারিতেও প্রবৃদ্ধি ইতিবাচক থাকে। ফেব্রুয়ারি শেষে মোট আমানত দাঁড়িয়েছে ১৭ লাখ ৯২ হাজার ৬৮৫ কোটি টাকা, যা এক বছর আগের তুলনায় বেশি।
এদিকে, মানুষের হাতে থাকা নগদ অর্থ বা ব্যাংকের বাইরে থাকা টাকা ক্রমেই কমছে। ২০২৪ সালের আগস্টে এ পরিমাণ ছিল ২ লাখ ৯২ হাজার কোটি টাকার বেশি, যা ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে নেমে এসেছে ২ লাখ ৭৪ হাজার কোটির নিচে।
অর্থনীতিবিদ ড. মোস্তফা কে মুজেরী বলেন, ব্যাংকে আমানতের সুদহার বেড়েছে। ফলে হাতে থাকা নগদ অর্থ ফের ব্যাংকে আসছে, যা অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক সংকেত।



