এশিয়ার অর্থনীতিতে উত্থান ঘটাতে চায় ভিয়েতনাম
অনলাইন ডেস্ক :
প্রকাশ: ১৬ আগস্ট ২০২৫, ০৮:০৯ পিএম
ছবি-সংগৃহীত
ভিয়েতনাম ২০৪৫ সালের মধ্যে উচ্চ-আয়ের দেশ হয়ে এশিয়ার অন্যতম শক্তিশালী অর্থনীতি হওয়ার লক্ষ্য নিয়েছে। তবে কাঠামোগত সংস্কার, জলবায়ু পরিবর্তন, প্রবীণ জনসংখ্যা ও প্রশাসনিক জটিলতা দেশটির প্রধান চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ভিয়েতনামের কমিউনিস্ট পার্টির প্রধান তো লাম সম্প্রতি "উন্নয়নের নতুন যুগ" ঘোষণা করেন। সরকারের লক্ষ্য—২০৪৫ সালের মধ্যে দেশকে উচ্চ-আয়ের মর্যাদায় উন্নীত করা। এ লক্ষ্যে অর্থনৈতিক সংস্কার, বেসরকারি খাতের সম্প্রসারণ ও প্রযুক্তিনির্ভর শিল্প বিকাশকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে।
১৯৯০ সাল থেকে ভিয়েতনামের অর্থনীতিতে দ্রুত প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে। মাথাপিছু আয় প্রায় ১,২০০ মার্কিন ডলার থেকে বেড়ে ১৬,৩৮৫ ডলারে পৌঁছেছে। রপ্তানি-নির্ভর এই উন্নয়নে আধুনিক অবকাঠামো তৈরি হয়েছে এবং লক্ষ লক্ষ মানুষ দারিদ্র্য থেকে মুক্তি পেয়েছে। তবে সস্তা শ্রমের প্রাপ্যতা কমে আসায় প্রবৃদ্ধি ধীর হচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্য চাপও অর্থনীতিকে প্রভাবিত করছে।
যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্য উত্তেজনা বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ালেও মার্কিন শুল্কনীতির কারণে ভিয়েতনামের রপ্তানি চাপে রয়েছে। এ কারণে দেশটি এখন নতুন শিল্প যেমন—চিপস, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, নবায়নযোগ্য শক্তি এবং উচ্চগতির রেল অবকাঠামোতে বিনিয়োগ করছে। পাশাপাশি হো চি মিন সিটি ও দানাং-এ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলে আন্তর্জাতিক আর্থিক কেন্দ্র হওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে।
ভিয়েতনাম সরকার ইতোমধ্যে আমলাতান্ত্রিক সংস্কার শুরু করেছে। বেসরকারি খাতকে অর্থনীতির "সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শক্তি" হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে প্রযুক্তিগত বিনিয়োগ, সরকারি চুক্তিতে অগ্রাধিকার এবং বৈদেশিক সম্প্রসারণে সহায়তা দিচ্ছে। ২০৩০ সালের মধ্যে অন্তত ২০টি বৈশ্বিক মানের বেসরকারি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
তবে জলবায়ু পরিবর্তন বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ঘূর্ণিঝড় ইয়াগি ২০২৩ সালে ১.৬ বিলিয়ন ডলার ক্ষতি করেছে, যা জিডিপি ০.১৫ শতাংশ হ্রাস করেছে। বিশ্বব্যাংক সতর্ক করেছে যে কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে ২০৫০ সালের মধ্যে বার্ষিক জিডিপির ১৪.৫ শতাংশ ক্ষতি হতে পারে। এছাড়া প্রবীণ জনসংখ্যা ও স্বাস্থ্যখাতের চাপও দেশের প্রবৃদ্ধিকে শ্লথ করতে পারে।
ভিয়েতনাম আশা করছে, সংস্কার, বিনিয়োগ এবং জলবায়ু স্থিতিস্থাপকতা গড়ে তুলে দেশটি প্রতিশ্রুত ‘নতুন যুগে’ প্রবেশ করতে পারবে এবং এশিয়ার অর্থনীতিতে শক্তিশালী অবস্থান তৈরি করবে।
সূত্র: বিগ নিউজ নেটওয়ার্ক



