Logo
Logo
×

অর্থনীতি

যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক : ১ আগস্টের আগেই বৈঠকের আশা

Icon

অনলাইন ডেস্ক :

প্রকাশ: ২৪ জুলাই ২০২৫, ১০:০৭ এএম

যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক : ১ আগস্টের আগেই বৈঠকের আশা

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শুল্ক চুক্তিবিষয়ক তৃতীয় দফার আলোচনা কবে হবে, তা এখনো নিশ্চিত নয়। তবে চলতি জুলাই মাসের মধ্যে তা না হওয়ার সম্ভাবনাই প্রবল। আলোচনার জন্য দেশটির কাছে বারবার সময় চেয়েও না পাওয়ার কারণে এমন আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন ব্যবসায়ীরা। লবিস্ট নিয়োগের ব্যাপারেও তাঁরা হাল প্রায় ছেড়ে দিয়েছেন। এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোষণা অনুযায়ী, আগামী ১ আগস্ট কার্যকর হয়ে যাবে পাল্টা শুল্কের হার। এরপরও অবশ্য আলোচনার সুযোগ রয়েছে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা তৃতীয় দফার আলোচনার ব্যাপারে আশাবাদী। আলোচনা করতে ১ আগস্টের আগেই বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধি দল যুক্তরাষ্ট্রে যাবে বলে গতকাল বুধবার সাংবাদিকদের জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। এ আলোচনা থেকে ভালো একটা ফলও নিয়ে আসা যাবে বলে সরকারের পক্ষ থেকে মনে করা হচ্ছে। নতুন শুল্কহার কার্যকরের সময় আরেক দফা বাড়তেও পারে বলে মনে করছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।

এদিকে পাল্টা শুল্কের হার কমিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শুল্ক চুক্তি করতে লবিস্ট নিয়োগের সম্ভাবনাও এখন প্রায় শূন্যের কোটায় বলে জানা গেছে। এ ব্যাপারে সরকারের মনোভাবও নেতিবাচকঅর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের জানান, লম্বা সময় নিয়ে দর-কষাকষির ক্ষেত্রে সাধারণত লবিস্ট নিয়োগ করা হয়। এখানে যা করতে হবে, জলদি করতে হবে। লবিস্টদের দিকে ইঙ্গিত করে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘দর-কষাকষি দূরের কথা, তাঁরা তো ঢুকতেই পারবেন না ওই অফিসের কাছাকাছি।’

যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ভালো আছে বলে মন্তব্য করেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। কারণ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন কোম্পানির বকেয়া পরিশোধ করে দেওয়ার কথা তুলে ধরেন তিনি। অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘সম্প্রতি আমরা যুক্তরাষ্ট্রের শেভরন, এক্সিলারেট এনার্জি ও মেটলাইফের বকেয়া পরিশোধ করে দিয়েছি। বাংলাদেশের প্রতি ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করে ইউএস চেম্বার আমাকে চিঠি লিখেছে।’

বাংলাদেশি পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্র যে পাল্টা শুল্ক (৩৫ শতাংশ) আরোপের ঘোষণা দিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র সরকার সে হার কিছুটা কমাবে বলে আশাবাদী সালেহউদ্দিন আহমেদ। আশাবাদী হওয়ার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘আমাদের ঘাটতি তো খুব কম। ৬৫০ কোটি মার্কিন ডলারের মতো।’

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি হয়েছে ৮৭৬ কোটি মার্কিন ডলারের পণ্য। এর আগের ২০২৩-২৪ অর্থবছরে রপ্তানি হয়েছিল ৭৬৮ কোটি ডলারের পণ্য। তার বিপরীতে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশ দেশটি থেকে আমদানি করেছে ২৫০ কোটি ডলারের পণ্য। আর আগের ২০২৩-২৪ অর্থবছরে আমদানি করেছিল ২৬২ কোটি ডলারের পণ্য।

পাল্টা শুল্ক, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তি, লবিস্ট নিয়োগ ইত্যাদি নিয়ে গতকাল যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি পোশাক ও নিট পোশাক রপ্তানিকারকদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তাতে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার ব্যবসায়ীদের সঙ্গে নতুন করে বৈঠকে বসেছিলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান, যেখানে ছিলেন হা-মীম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে আজাদ।

এ কে আজাদ গতকাল মুঠোফোনে বলেন, ‘লবিস্ট নিয়োগ হবে না বলে ধরে নিচ্ছি। চেষ্টা চলছে। তবে এখন তা করেও কী লাভ হবে, বুঝতে পারছি না।’ তিনি বলেন, মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত বৈঠকে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান আশ্বাস দিয়েছেন যে শেষ পর্যন্ত ভালো কিছুই হবে।


বাণিজ্য ব্যবধান কমাতে গম আমদানি


এদিকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে সরাসরি গম আমদানির একটি প্রস্তাব গতকাল অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটিতে নীতিগতভাবে অনুমোদিত হয়েছে। একই দিন দেশটি থেকে ২ লাখ ২০ হাজার টন গম আমদানির প্রস্তাব অনুমোদিত হয় সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে।


এ দফায় বাংলাদেশে গম রপ্তানির কাজ পেয়েছে অ্যাগ্রোকর্প ইন্টারন্যাশনাল প্রাইভেট লিমিটেড। কোম্পানিটি ইউএস হুইট অ্যাসোসিয়েটসের কাছ থেকে ক্ষমতাপ্রাপ্ত বলে ক্রয় কমিটিকে জানায় খাদ্য মন্ত্রণালয়। প্রতি টন গমের দাম পড়ছে ৩০২ দশমিক ৭৫ মার্কিন ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় এ গমের প্রতি টনের দাম ৮১৭ কোটি ৫৮ লাখ টাকা।


অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমরা একটু বৈচিত্র্য আনতে চাচ্ছি। অনেক সময় রাশিয়া বা ইউক্রেন থেকে গম আমদানিতে অনিশ্চয়তা দেখা যায়। এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এখন আমাদের আমদানি বৃদ্ধির দর-কষাকষি চলছে। যুক্তরাষ্ট্রের গমের মানও ভালো।’


কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের গমের দাম যে তুলনামূলক বেশি, এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, দাম একটু বেশি হলেও অন্যদিক দিয়ে সুবিধা পাওয়া যাবে। তাদের গমে আমিষ কিছুটা বেশি। খুব বেশি তা নয়, একটু বেশি।




Swapno

Abu Al Moursalin Babla

Editor & Publisher

Major(Rtd)Humayan Kabir Ripon

Managing Editor

Email: [email protected]

অনুসরণ করুন